মো. আবু রায়হান চৌধুরী, হোমনা (কুমিল্লা) থেকেঃ
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে অঘোষিত লকডাউনের কারনে ঘরে অবস্থান করার ফলে উপার্জনহীন হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া দরিদ্র ও অসহায় মানুষেরা। ফলে, সংসার কীভাবে চলবে এনিয়ে উৎকন্ঠায় দিন পার করছে তারা। এ ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মানুষের এখন একমাত্র নিরাপদ স্থান হচ্ছে ঘর।
উপার্জনহীন এসব অসহায় মানুষদের পাশে মানবিকতার দৃষ্টি থেকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলেন আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম ফাউন্ডেশন। কর্মহীন শ্রমজীবী ও অসহায় দরিদ্র মানুষের মাঝে সামাজিক দূরত্বের মাধ্যমে শৃংখলা বজায় রেখে টানা দু’দফায় সংগঠনটির নিজস্ব অর্থায়নে উপহার হিসেবে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে করে যাচ্ছেন সাহায্য ও সহযোগিতা। এমন দুর্যোগময় মুহূর্তে সামান্য হলেও এলাকার অসহায় দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে মানবিক সহযোগিতায় ব্যস্থতম সময় পাড় করছেন সংগঠনটির প্রতিটি সদস্য। সবাই সুস্থ থাকার জন্য সরকারের স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বানও জানান তারা।
সোমবার সকাল ১০টায় কুমিল্লার হোমনা উপজেলা সদরে অবস্থিত আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে ফাউন্ডেশনের পরিচালক লায়ন মো. হুমায়ুন কবির ও গোলাম মোস্তফাসহ পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত থেকে সামাজিক ও শারিরীক দুরত্ব এবং শৃংখলা বজায় রেখে ১শত পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- হোমনা উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
অপরদিকে গত ৯ মে শনিবার সকালে কুমিল্লার হোমনা পৌরসভার অন্তর্গত গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব মরহুম আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের গোয়ারীভাঙ্গা গ্রাম এবং মাথাভাঙ্গা ইউনিয়নের দ্বাড়িগঁাও গ্রামে করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাবের কারণে গৃহবন্দি খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের হতদরিদ্র ১৫০টি মাঝে পরিবারের মাঝে উপহার হিসেবে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সংগঠটির পক্ষ থেকে দু’ দফায় ২৫০টি হতদরিদ্র ও কর্মহীন পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
খাদ্যসামগ্রীর প্রতি প্যাকেটের মধ্যে রয়েছে ৫ কেজি চাল,১ কেজি ডাল,১লিটার তেল, ১ কেজি ছোলা, ১কেজি সেমাই,১ কেজি চিনি ইত্যাদি।
জানা যায়, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ত্ব আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম কন্ট্রাকটার ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই ইন্তেকাল করেন। মরহুমের মেজো ছেলে মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল শিপিং কর্পোরেশনের চীফ ইঞ্জিনিয়ার (মেরিন) এম জি ফারুক, ছোট ছেলে ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল শিপিং-এর মেরিন চীফ ইঞ্জিনিয়ার মো. নজরুল ইসলাম স্বপনের পৃষ্ঠপোষকতায় আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়।
আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও শিক্ষক লায়ন মো. হুমায়ুন কবির বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে খেটে খাওয়া মানুষের সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে এ জন্য মানবিক সহায়তা কর্মসূচির অংশ হিসেবে অসহায় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে দু’দফায় আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অসহায় হতদরিদ্র প্রায় ২৫০ টি পরিবারের মুখে হঁাসি ফোটাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সমাগ্রী চাল, ডাল, তেল, ছোলা, সেমাই ও চিনি বিতরণ করেছি। ফাউন্ডেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে সামাজিক ও শারিরীক দুরত্ব এবং শৃংখলা বজায় রেখে উপহার হিসেবে অসহায়দের মাঝে এসব খাদ্য সামগ্রী দিয়েছি এবং আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের পরিচালকের ছোট ভাই ও মরহুমের মেজ ছেলে মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল শিপিং কর্পোরেশনের চীফ ইঞ্জিনিয়ার (মেরিন) এম জি ফারুক মোবাইল ফোনে জানান, আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম ছিলেন আমার বাবা আমি এবং আমার পরিবারের সবাই সবসময় বাবার আদর্শকে সমুন্নত রাখতে মানবতার সেবায় আমরা সর্বদাই এলাকার মানুষের পাশে ছিলাম, আছি, থাকবো।” আমার বাবা মরহুম নুরুল ইসলাম বেচে থাকতে অসহায় মানুষের বিপদে আপদে সব সময়ই পাশে ছিলেন। তিনি কখনও কারও কষ্ট সহ্য করতে পারতেন না। এমন কি তিনি নিজে না খেয়েও মানুষকে খাওয়াতেন। আমরাও আমাদের বাবার আদর্শে আদর্শিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে চাই।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও মরহুমের বড় ছেলে হোমনা-২ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং হোমনা উপজেলা সরকারী প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি লায়ন মো.হুমায়ুন কবির,পরিচালক ও মরহুমের সেজো ছেলে পৌর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক লায়ন মো. নাজমুল ইসলাম সেলিম, পরিচালক ও মরহুমের ছোট ভাই গোলাম মোস্তফা, মো. মোতাহার হোসেন কাবিল মেম্বার, ফাউন্ডেশনের উপদেষ্ঠামন্ডলীর সদস্য ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আঃ আউয়াল, মো. কবির হোসেন, মো. হারুন অর রশিদ,আঃ হামিদ মেম্বারসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।