ঢাকা ০৪:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হোমনায় জেলা পরিষদ সদস্যরে বিরুদ্ধে বালু বাণিজ্যের অভিযোগ এলাকাবাসীর

রায়হান চৌধুরী, হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার হোমনায় ড্রেজারে নদী খননের সরকারি মাটি কেটে অবৈধভাবে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলা পরিষদ সদস্য মহিউদ্দিন খনন্দকার এর বিরুদ্ধে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি অভিযোগ মিথ্যা। টাকা নিয়ে মাটি বিক্রি করা হয় না এবং এর কোনো নিয়মও নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আছাদপুর ও দুলালপুর ইউনিয়নের পাথালিয়াকান্দি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী হতে মাটি উত্তোলন করে দুলালপুর ইউনিয়নের কাশিপুর ও দুলালপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে ফেলা হচ্ছে সে মাটি। তাছাড়া ভরাট করছেন ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি জমা। এবং সে মাটি সাধারন জনগণের কাছে ২.৫০/৩ টাকা ধরে অবৈধ ভাবে বিক্রি করছেন।
স্থানীয় প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীসহ সব মহলকে ম্যানেজ করে অনেকটা দাপটের সঙ্গেই জেলা পরিষদের সদস্য মহিউদ্দিন খনন্দকার এর নেতৃত্বে লুটের এই মহোৎসবে মেতেছেন প্রভাবশালী বালুদস্যুরা। তাই অনেকটা নিবিঘেœই দিনে-রাতে সমানতালে ড্রেজার ও খননযন্ত্রের মাধ্যমে চলছে মাটি-বালু উত্তোলন।

বালুখেকোরা এতটাই বেপরোয়া,ভয়ংকর ও হিং¯্র যে তাদের ভয়ে ওই এলাকার জনসাধারন ও ভূক্তভোগীরা মুখ খোলারও সাহস পাচ্ছেন না। তারা সব কিছু দেখেও না দেখার ভ্যান ধরে আছেন। আর নিরবে সহ্য করে যাচ্ছেন বালুখেকোদের অন্যায়-অত্যাচার।
আবার কেউ কেউ তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তার উপর চলে অমানবিক অত্যাচার ও নির্যাতন। এমনকি মানষিক ভাবে হয়রানীও চালানো হয়।

শুধু তাই নয় মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে পাঠানোরও ভয়ভীতি দেখানো হয়। এমনকি কেউ কেউ তাদের অন্যায় আবদার মেনে মাটি ভরাট করতে না চাইলেও তারা জোরপূর্বক মাটি ভরাট করে টাকা আদায় করা হয় বলে জানান অনেক ভূক্তভোগী।
এসব চাদাবাজি সেন্ডিকেটের আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে গত ১৮ ই আগস্ট বুধবার ভূক্তভোগী এলাকাবাসী ও সচেতন মহল রাষ্ট্রীয় সম্পদ বাঁচাতে চাদাবাজি ও সেন্ডিকেটের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন হোমনা থানাসহ উপজেলা প্রশাসনের কাছে।

নদী হতে উত্তেলিত বালু/মাটি ভরাটের বিনিময়ে চাদা ও টাকা দাবী করা অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন, হোমনা উপজেলার নিলখী গ্রামের ও কুমিল্লা জেলা পরিষদ সদস্য মহিউদ্দিন খন্দাকার,পাথালিয়াকান্দি গ্রামের মোঃ আরাফাত,কাশিপুর গ্রামের মোঃ মিনহাজ,ঘনিয়ারচর গ্রামের মোঃ জামাল ভূইয়া, চারকুড়িয়া গ্রামের এরশাদ মিয়া,আলাউদ্দিন,কলাগাছিয়ার উজ্জল মিয়া,মমিন মিয়া, ফতেরকান্দি গ্রামের মোঃ মনির হোসেন, মনিপুরের মোঃ আহাদ আলী, মালু মিয়া ও নিলখী গ্রামের নজরুল ইসলাম।

এ বিষয়ে অভিযোগের প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তি মহিউদ্দিন খন্দকার এর কাছে মুঠোফোনে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবিষয় আমি কথা ফোনে কোনো প্রকার কথা বলতে চাই না। আপনি আমার বাসায় দেখা করেন।

প্রভাব খাটিয়ে রাষ্ট্রিয় সম্পদ জনসাধারণের কাছে টাকার বিনিময়ে বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে ব্যস্ততা দেখিয়ে পাশ কাটিয়ে যান উপজেলা নির্বাহি অফিসার (ইউএনও)। তিনি বলেন আমি এখন জেলা প্রশাসকের মিটিংয়ে রয়েছি। পরে কথা হবে।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানাগেছে, দুলালপুর এলাকার নদী হতে বালু উত্তোলন করে পার্শ্ববর্তী ভিটি কালমিনা গ্রামে বিক্রি করে দেওয়া হয়। সেই বালু ভরাটের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বালুখেকো সিন্ডিকেট চক্রটির মাঝে বাক বিতন্ডা ও দ্বন্ধের সৃষ্টি হলে। এক পর্যায়ে স্থানীয় এলাকাবাসী তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি-সোটা নিয়ে আক্রমণ করতে তেড়ে আসলে তারা প্রান ভয়ে সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রবাসীর বাড়ি ঘরে হামলা, নারীসহ আহত ৩

হোমনায় জেলা পরিষদ সদস্যরে বিরুদ্ধে বালু বাণিজ্যের অভিযোগ এলাকাবাসীর

আপডেট সময় ০১:২৩:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ অগাস্ট ২০২১

রায়হান চৌধুরী, হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার হোমনায় ড্রেজারে নদী খননের সরকারি মাটি কেটে অবৈধভাবে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলা পরিষদ সদস্য মহিউদ্দিন খনন্দকার এর বিরুদ্ধে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি অভিযোগ মিথ্যা। টাকা নিয়ে মাটি বিক্রি করা হয় না এবং এর কোনো নিয়মও নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আছাদপুর ও দুলালপুর ইউনিয়নের পাথালিয়াকান্দি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী হতে মাটি উত্তোলন করে দুলালপুর ইউনিয়নের কাশিপুর ও দুলালপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে ফেলা হচ্ছে সে মাটি। তাছাড়া ভরাট করছেন ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি জমা। এবং সে মাটি সাধারন জনগণের কাছে ২.৫০/৩ টাকা ধরে অবৈধ ভাবে বিক্রি করছেন।
স্থানীয় প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীসহ সব মহলকে ম্যানেজ করে অনেকটা দাপটের সঙ্গেই জেলা পরিষদের সদস্য মহিউদ্দিন খনন্দকার এর নেতৃত্বে লুটের এই মহোৎসবে মেতেছেন প্রভাবশালী বালুদস্যুরা। তাই অনেকটা নিবিঘেœই দিনে-রাতে সমানতালে ড্রেজার ও খননযন্ত্রের মাধ্যমে চলছে মাটি-বালু উত্তোলন।

বালুখেকোরা এতটাই বেপরোয়া,ভয়ংকর ও হিং¯্র যে তাদের ভয়ে ওই এলাকার জনসাধারন ও ভূক্তভোগীরা মুখ খোলারও সাহস পাচ্ছেন না। তারা সব কিছু দেখেও না দেখার ভ্যান ধরে আছেন। আর নিরবে সহ্য করে যাচ্ছেন বালুখেকোদের অন্যায়-অত্যাচার।
আবার কেউ কেউ তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তার উপর চলে অমানবিক অত্যাচার ও নির্যাতন। এমনকি মানষিক ভাবে হয়রানীও চালানো হয়।

শুধু তাই নয় মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে পাঠানোরও ভয়ভীতি দেখানো হয়। এমনকি কেউ কেউ তাদের অন্যায় আবদার মেনে মাটি ভরাট করতে না চাইলেও তারা জোরপূর্বক মাটি ভরাট করে টাকা আদায় করা হয় বলে জানান অনেক ভূক্তভোগী।
এসব চাদাবাজি সেন্ডিকেটের আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে গত ১৮ ই আগস্ট বুধবার ভূক্তভোগী এলাকাবাসী ও সচেতন মহল রাষ্ট্রীয় সম্পদ বাঁচাতে চাদাবাজি ও সেন্ডিকেটের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন হোমনা থানাসহ উপজেলা প্রশাসনের কাছে।

নদী হতে উত্তেলিত বালু/মাটি ভরাটের বিনিময়ে চাদা ও টাকা দাবী করা অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন, হোমনা উপজেলার নিলখী গ্রামের ও কুমিল্লা জেলা পরিষদ সদস্য মহিউদ্দিন খন্দাকার,পাথালিয়াকান্দি গ্রামের মোঃ আরাফাত,কাশিপুর গ্রামের মোঃ মিনহাজ,ঘনিয়ারচর গ্রামের মোঃ জামাল ভূইয়া, চারকুড়িয়া গ্রামের এরশাদ মিয়া,আলাউদ্দিন,কলাগাছিয়ার উজ্জল মিয়া,মমিন মিয়া, ফতেরকান্দি গ্রামের মোঃ মনির হোসেন, মনিপুরের মোঃ আহাদ আলী, মালু মিয়া ও নিলখী গ্রামের নজরুল ইসলাম।

এ বিষয়ে অভিযোগের প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তি মহিউদ্দিন খন্দকার এর কাছে মুঠোফোনে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবিষয় আমি কথা ফোনে কোনো প্রকার কথা বলতে চাই না। আপনি আমার বাসায় দেখা করেন।

প্রভাব খাটিয়ে রাষ্ট্রিয় সম্পদ জনসাধারণের কাছে টাকার বিনিময়ে বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে ব্যস্ততা দেখিয়ে পাশ কাটিয়ে যান উপজেলা নির্বাহি অফিসার (ইউএনও)। তিনি বলেন আমি এখন জেলা প্রশাসকের মিটিংয়ে রয়েছি। পরে কথা হবে।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানাগেছে, দুলালপুর এলাকার নদী হতে বালু উত্তোলন করে পার্শ্ববর্তী ভিটি কালমিনা গ্রামে বিক্রি করে দেওয়া হয়। সেই বালু ভরাটের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বালুখেকো সিন্ডিকেট চক্রটির মাঝে বাক বিতন্ডা ও দ্বন্ধের সৃষ্টি হলে। এক পর্যায়ে স্থানীয় এলাকাবাসী তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি-সোটা নিয়ে আক্রমণ করতে তেড়ে আসলে তারা প্রান ভয়ে সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়।