ঢাকা ১১:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হোমনায় দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ:আহত ৫

মোর্শেদুল ইসলাম শাজু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার হোমনায় মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে এবং বাড়ি-ঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার লটিয়া এবং গোয়ারীভাঙা গ্রামের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন (৫০) ও কামাল হোসেন (৩৫) এবং লটিয়া গ্রামের ফজলুল হক (৫০) ও সজিব (১৫)। আহতদের একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও একজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে।

লটিয়া গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের লতিফ, বাতেন, ইদ্রিস ও নূরনবীর বাড়ি ভাংচুরের এ অভিযোগ করা হয়। লটিয়াবাসী এ অভিযোগ অস্বিকার করে একে সাজানো ঘটনা বলে মন্তব্য করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার উপজেলার গোয়ারীভাঙ্গা এবং লটিয়া গ্রামের মাঝের খলিলাবাজ খালে দুই গ্রামের লোকজন মাছ শিকারে নামে। এ সময় পরস্পরের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে হাতাতির ঘটনা ঘটে। এতে গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের একটি ছেলে সামান্য আঘাত পায়। এ ঘটনার সুষ্ঠু মিমাংসার উদ্দেশে গত মঙ্গলবার দুই গ্রামের নেতৃস্থানীয় সর্দার প্রধানগণ গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের ফরিদ মিয়ার বাড়ির উঠানে শালিস বৈঠকে বসে। এতে লটিয়া গ্রামের পক্ষে উপস্থিত স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলার লটিয়া গ্রামের পক্ষে দোষ স্বীকার করে ওই ঘটনায় ক্ষমা চাইলেও শালিস বৈঠকে গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের সর্দার প্রধানদের উপস্থিতিতে তাদের ওপর হামলা চালায়। এরই জের ধরে গতকাল বৃহস্পতিবার ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের সাবেক মেম্বার মুর্শিদ মিয়া বলেন, মাছ ধরা নিয়ে একটি ঘটনায় সালিশ বৈঠকে লটিয়া গ্রামের লোকজনের সাথে আমাদের গ্রামের কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছেলেপোলের অসদাচানণের বিষয়ে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেই। তারা এতে রাজী হননি। এরই জের ধরে তারাই (লটিয়া গ্রামবাসী) আজ (গতকাল বৃহস্পতিবার) দল বল নিয়ে আমাদের গ্রামে হামলা চালিয়ে কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুর ও কয়েকজনকে আহত করেছে।
এ ঘটনায় হোমনা পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর লটিয়া গ্রামের আবদুর সোবহান বলেন, কয়েকদিন আগে খলিলাবাজ খালে গোয়ারীভাঙ্গা ও লটিয়া গ্রামের লোকজন মাছ ধরতে যায়। সেখানে লটিয়া গ্রামের কেলাকজনকে গালিগালাজ করে। এতে উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কী ও হাতাহাতি হয়। এতে ওই গ্রামের একজন সামান্য আঘাত পায়। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার করার উদ্দেশে গত মঙ্গলবার গোয়ারীভাঙায় বসি। সেখানে ওই ঘটনায় দোষ স্বিকার করে ক্ষমাও চাওয়া হয়। কিন্তু সেই গ্রামের সর্দার প্রধানদের উপস্থিতিতে আমাদের ওপর আক্রমন করে মারধর করে। আজ (গতকাল বৃহস্পতিবার) তারা মাইকে আমাদের গ্রামে হামলা চালানোর প্রকাশ্য ঘোষণাও দিয়েছিল। গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুর বিষয়ে জানতে চাইলে তা অস্বিকার করে একে সাজানো ঘটনা বলে উল্লেখ করেন।

এ ব্যাপারে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রসুল আহমেদ নিজামী বলেন, গত কয়েক দিন আগে মাছ ধরা নিয়ে একটি দরবার করেছিল। সেখানে আবার মারামারি হয়। এরই জের ধরে আজ গোয়ারীভাঙা গ্রামের ২/৩ টি বাড়ি ভাংচুর করেছে। দুই জন আহত হয়েছে। পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

হোমনায় দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ:আহত ৫

আপডেট সময় ১২:০৮:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ নভেম্বর ২০১৬
মোর্শেদুল ইসলাম শাজু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার হোমনায় মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে এবং বাড়ি-ঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার লটিয়া এবং গোয়ারীভাঙা গ্রামের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন (৫০) ও কামাল হোসেন (৩৫) এবং লটিয়া গ্রামের ফজলুল হক (৫০) ও সজিব (১৫)। আহতদের একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও একজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে।

লটিয়া গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের লতিফ, বাতেন, ইদ্রিস ও নূরনবীর বাড়ি ভাংচুরের এ অভিযোগ করা হয়। লটিয়াবাসী এ অভিযোগ অস্বিকার করে একে সাজানো ঘটনা বলে মন্তব্য করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার উপজেলার গোয়ারীভাঙ্গা এবং লটিয়া গ্রামের মাঝের খলিলাবাজ খালে দুই গ্রামের লোকজন মাছ শিকারে নামে। এ সময় পরস্পরের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে হাতাতির ঘটনা ঘটে। এতে গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের একটি ছেলে সামান্য আঘাত পায়। এ ঘটনার সুষ্ঠু মিমাংসার উদ্দেশে গত মঙ্গলবার দুই গ্রামের নেতৃস্থানীয় সর্দার প্রধানগণ গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের ফরিদ মিয়ার বাড়ির উঠানে শালিস বৈঠকে বসে। এতে লটিয়া গ্রামের পক্ষে উপস্থিত স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলার লটিয়া গ্রামের পক্ষে দোষ স্বীকার করে ওই ঘটনায় ক্ষমা চাইলেও শালিস বৈঠকে গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের সর্দার প্রধানদের উপস্থিতিতে তাদের ওপর হামলা চালায়। এরই জের ধরে গতকাল বৃহস্পতিবার ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের সাবেক মেম্বার মুর্শিদ মিয়া বলেন, মাছ ধরা নিয়ে একটি ঘটনায় সালিশ বৈঠকে লটিয়া গ্রামের লোকজনের সাথে আমাদের গ্রামের কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছেলেপোলের অসদাচানণের বিষয়ে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেই। তারা এতে রাজী হননি। এরই জের ধরে তারাই (লটিয়া গ্রামবাসী) আজ (গতকাল বৃহস্পতিবার) দল বল নিয়ে আমাদের গ্রামে হামলা চালিয়ে কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুর ও কয়েকজনকে আহত করেছে।
এ ঘটনায় হোমনা পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর লটিয়া গ্রামের আবদুর সোবহান বলেন, কয়েকদিন আগে খলিলাবাজ খালে গোয়ারীভাঙ্গা ও লটিয়া গ্রামের লোকজন মাছ ধরতে যায়। সেখানে লটিয়া গ্রামের কেলাকজনকে গালিগালাজ করে। এতে উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কী ও হাতাহাতি হয়। এতে ওই গ্রামের একজন সামান্য আঘাত পায়। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার করার উদ্দেশে গত মঙ্গলবার গোয়ারীভাঙায় বসি। সেখানে ওই ঘটনায় দোষ স্বিকার করে ক্ষমাও চাওয়া হয়। কিন্তু সেই গ্রামের সর্দার প্রধানদের উপস্থিতিতে আমাদের ওপর আক্রমন করে মারধর করে। আজ (গতকাল বৃহস্পতিবার) তারা মাইকে আমাদের গ্রামে হামলা চালানোর প্রকাশ্য ঘোষণাও দিয়েছিল। গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুর বিষয়ে জানতে চাইলে তা অস্বিকার করে একে সাজানো ঘটনা বলে উল্লেখ করেন।

এ ব্যাপারে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রসুল আহমেদ নিজামী বলেন, গত কয়েক দিন আগে মাছ ধরা নিয়ে একটি দরবার করেছিল। সেখানে আবার মারামারি হয়। এরই জের ধরে আজ গোয়ারীভাঙা গ্রামের ২/৩ টি বাড়ি ভাংচুর করেছে। দুই জন আহত হয়েছে। পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।