ঢাকা ০৮:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৫০ বিদেশি ডুবুরি কাজ করেছেন থাই গুহা অভিযানে

অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

কোনো গুহার ভেতরে উদ্ধার অভিযান চালানো সহজ কাজ হয়। এটা একইসঙ্গে বিপদজনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ। এক্ষেত্রে ওই ডুবুরিকে এ ধরনের অভিযান পরিচালনার ব্যাপারে অভিজ্ঞ ও পারদর্শী হওয়াটা বাধ্যতামূলক। খবর বিবিসির।

থাইল্যান্ডের ওই গুহার উদ্ধার অভিযানে এ পর্যন্ত ৯০ জন ডুবুরির একটি দল কাজ করছে যাদের মধ্যে ৫০ জনই বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন।

ওই আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দলের এমন কয়েকজন সাহসী ডুবুরির ব্যাপারে জানা যায়। যারা কিশোরদের বের করে আনতে নিজেদের জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলেছেন।

তাদের একজন বেন রেমেন্যান্ট। বেলজিয়ামের এই নাগরিক মূলত ফুকেটে একটি ডুবুরির সরঞ্জামের দোকান পরিচালনা করেন।

উদ্ধার অভিযানের প্রধান নারংসাক ওসোত্থানাকর্নের অধীনে তিনিও এই অভিযানে যোগ দিয়েছেন।

ডেনমার্কের নাগরিক ক্লস রাসমুসেন এমনই আরেকজন ডুবুরি। তিনি রেমেন্যান্টের সঙ্গে ফুকেটের ওই ডুবুরির স্কুলে কাজ করেন।

আরেকজন এসেছেন ফিনল্যান্ড থেকে। তার নাম মিকো পাসি। তিনি এই উদ্ধার অভিযানে স্বেচ্ছাসেবক ডুবুরি হিসেবে কাজ করছেন।

তিনি ওই গুহার ভেতরের কিছু ছবি তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেন।

তার মতোই আরেক স্বেচ্ছাসেবক ডুবুরি ডেন ইভান কারাজিচ। তিনি ডেনমার্কের নাগরিক।

মিকোর সঙ্গে তিনি থাইল্যান্ডের ছোট আইল্যান্ড কোহ তাওতে একটি ডু্বুরি বা ডাইভিংয়ের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা করেন।

তারা দুজনই মূলত ডুবুরির প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। এরমধ্যে একটি হল কেভ ডাইভিং বা গুহার ভেতরে ডুব দিয়ে চলা।

একই উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়া থেকে এসেছেন রিচার্ড হ্যারিস। তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক হলেও ডুবুরি হিসেবেও বেশ পারদর্শী।

তিনি ঝুঁকি নিয়ে ওই গুহার ভেতরে আটকে পড়াদের কাছে যান। উদ্ধার অভিযান শুরুর আগেই তাদের জরুরি চিকিৎসা দিতে।

নিজের প্রায় ১০ বছরের ডুবুরির অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি এই অভিযানে নামেন। তিনি একইসঙ্গে একজন এক্সিপিডিশন মেডিসিন এবং উদ্ধার অভিযানে অভিজ্ঞ এবং বিশেষজ্ঞ।

যে ব্রিটিশ ডুবুরি সর্বপ্রথম ওই শিশুদের খোঁজ পান। তার অনুরোধে তিনি এই অভিযানে যোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়া এক প্রাক্তন থাই নৌবাহিনীর ডুবুরির মৃত্যুর ঘটনার মধ্যে দিয়ে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে এই যাত্রা কতটা বিপজ্জনক ছিল।

সামান গুনান নামে ওই ব্যক্তি শুক্রবার গুহার মধ্যে দিয়ে কিশোরদের অক্সিজেন ট্যাঙ্ক দিয়ে ফিরছিলেন।

এ সময় পানির ভেতরেই অক্সিজেন ফুরিয়ে গেলে শ্বাসরোধ হয়ে মারা যান তিনি।

তিনি প্রথমে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন, পরে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তার সহকর্মীরা জানান, ‘তাদের বন্ধুর এই আত্মত্যাগ তারা বৃথা যেতে দেবে না।’

মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্তের কাছে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ থাম লুয়াং গুহা থাইল্যান্ডের দীর্ঘতম গুহা। কম চওড়া আর অনেক প্রকোষ্ঠ থাকায় গুহার ভেতরে চলাচল করা কঠিন। ওই গুহায় ঢোকার পর গত ২৩ জুন নিখোঁজ হয় ১২ খুদে ফুটবলার ও তাদের কোচ। খুদে ফুটবলারদের বয়স ১১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। আর তাদের সহকারী কোচ এক্কাপোল জানথাওংয়ের বয়স ২৫ বছর। তারা মু পা নামের একটি ফুটবল দলের সদস্য।

তিন দিনের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের মধ্য দিয়ে আজ মঙ্গলবার মৃত্যুকূপ ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ: স্বাগত জানাতে মুরাদনগরে ব্যাপক প্রস্ততি

৫০ বিদেশি ডুবুরি কাজ করেছেন থাই গুহা অভিযানে

আপডেট সময় ০৪:৪৪:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুলাই ২০১৮
অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

কোনো গুহার ভেতরে উদ্ধার অভিযান চালানো সহজ কাজ হয়। এটা একইসঙ্গে বিপদজনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ। এক্ষেত্রে ওই ডুবুরিকে এ ধরনের অভিযান পরিচালনার ব্যাপারে অভিজ্ঞ ও পারদর্শী হওয়াটা বাধ্যতামূলক। খবর বিবিসির।

থাইল্যান্ডের ওই গুহার উদ্ধার অভিযানে এ পর্যন্ত ৯০ জন ডুবুরির একটি দল কাজ করছে যাদের মধ্যে ৫০ জনই বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন।

ওই আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দলের এমন কয়েকজন সাহসী ডুবুরির ব্যাপারে জানা যায়। যারা কিশোরদের বের করে আনতে নিজেদের জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলেছেন।

তাদের একজন বেন রেমেন্যান্ট। বেলজিয়ামের এই নাগরিক মূলত ফুকেটে একটি ডুবুরির সরঞ্জামের দোকান পরিচালনা করেন।

উদ্ধার অভিযানের প্রধান নারংসাক ওসোত্থানাকর্নের অধীনে তিনিও এই অভিযানে যোগ দিয়েছেন।

ডেনমার্কের নাগরিক ক্লস রাসমুসেন এমনই আরেকজন ডুবুরি। তিনি রেমেন্যান্টের সঙ্গে ফুকেটের ওই ডুবুরির স্কুলে কাজ করেন।

আরেকজন এসেছেন ফিনল্যান্ড থেকে। তার নাম মিকো পাসি। তিনি এই উদ্ধার অভিযানে স্বেচ্ছাসেবক ডুবুরি হিসেবে কাজ করছেন।

তিনি ওই গুহার ভেতরের কিছু ছবি তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেন।

তার মতোই আরেক স্বেচ্ছাসেবক ডুবুরি ডেন ইভান কারাজিচ। তিনি ডেনমার্কের নাগরিক।

মিকোর সঙ্গে তিনি থাইল্যান্ডের ছোট আইল্যান্ড কোহ তাওতে একটি ডু্বুরি বা ডাইভিংয়ের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা করেন।

তারা দুজনই মূলত ডুবুরির প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। এরমধ্যে একটি হল কেভ ডাইভিং বা গুহার ভেতরে ডুব দিয়ে চলা।

একই উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়া থেকে এসেছেন রিচার্ড হ্যারিস। তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক হলেও ডুবুরি হিসেবেও বেশ পারদর্শী।

তিনি ঝুঁকি নিয়ে ওই গুহার ভেতরে আটকে পড়াদের কাছে যান। উদ্ধার অভিযান শুরুর আগেই তাদের জরুরি চিকিৎসা দিতে।

নিজের প্রায় ১০ বছরের ডুবুরির অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি এই অভিযানে নামেন। তিনি একইসঙ্গে একজন এক্সিপিডিশন মেডিসিন এবং উদ্ধার অভিযানে অভিজ্ঞ এবং বিশেষজ্ঞ।

যে ব্রিটিশ ডুবুরি সর্বপ্রথম ওই শিশুদের খোঁজ পান। তার অনুরোধে তিনি এই অভিযানে যোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়া এক প্রাক্তন থাই নৌবাহিনীর ডুবুরির মৃত্যুর ঘটনার মধ্যে দিয়ে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে এই যাত্রা কতটা বিপজ্জনক ছিল।

সামান গুনান নামে ওই ব্যক্তি শুক্রবার গুহার মধ্যে দিয়ে কিশোরদের অক্সিজেন ট্যাঙ্ক দিয়ে ফিরছিলেন।

এ সময় পানির ভেতরেই অক্সিজেন ফুরিয়ে গেলে শ্বাসরোধ হয়ে মারা যান তিনি।

তিনি প্রথমে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন, পরে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তার সহকর্মীরা জানান, ‘তাদের বন্ধুর এই আত্মত্যাগ তারা বৃথা যেতে দেবে না।’

মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্তের কাছে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ থাম লুয়াং গুহা থাইল্যান্ডের দীর্ঘতম গুহা। কম চওড়া আর অনেক প্রকোষ্ঠ থাকায় গুহার ভেতরে চলাচল করা কঠিন। ওই গুহায় ঢোকার পর গত ২৩ জুন নিখোঁজ হয় ১২ খুদে ফুটবলার ও তাদের কোচ। খুদে ফুটবলারদের বয়স ১১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। আর তাদের সহকারী কোচ এক্কাপোল জানথাওংয়ের বয়স ২৫ বছর। তারা মু পা নামের একটি ফুটবল দলের সদস্য।

তিন দিনের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের মধ্য দিয়ে আজ মঙ্গলবার মৃত্যুকূপ ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে।