জাতীয়:
রাজধানীর নিকেতন থেকে ৭ দেহরক্ষীসহ যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা জি কে শামীমকে (৫৫) আটক করেছে র্যাব। শুক্রবার দুপুরে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে নিয়ে তার ব্যবসায়িক কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান অর্থ, অস্ত্র ও বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। এর আগে সকাল থেকে তার বাড়িটি ঘেরাও করে রাখে আইনশৃংখলা বাহিনী। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রট সারওয়ার আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সন্মানদী ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত মো. আফসার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে জি কে শামীম। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগেরও সহ-সভাপতি।
এদিকে, অবৈধ ক্যাসিনোর মালিক যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় যুবলীগ।
জিকে শামীম ঠিকাদার হিসেবেই পরিচিত। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত মো. আফসার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে শামীম। আফসার উদ্দিন মাস্টার ছিলেন হরিহরদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিন ছেলের মধ্যে শামীম মেজো।
যুবলীগ নেতা জি কে শামীমের অফিসে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করেছে র্যাব। শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে গুলশানের নিকেতনে ডি ব্লকের ৫ নম্বর রোডের ১৪৪ নম্বর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। এই বাসায় জি কে শামীমের অফিস অবস্থিত।
র্যাব সূত্র জানায়, শামীমের অফিসের ভেতর থেকে নগদ এক কোটি ৮০ লাখ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর (স্থায়ী আমানত) চেক ও ১শ কোটি টাকার চেক উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ১৪০ কোটি টাকার এফডিআর তার মায়ের নামে, বাকি ২৫ কোটি টাকা তার নামে। এছাড়া মার্কিন ডলারও উদ্ধার করা হয়। প্রচুর পরিমাণ গুলি, ম্যাগজিন ও মাদক পাওয়া যায়।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, অভিযানে বিপুল পরিমাণ টাকা ও একটি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া অভিযানে বিদেশি মদের বেশ কয়েকটি বোতল উদ্ধার করা হয়েছে।
বিকালে ঘটনাস্থলে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম জানান, উদ্ধার করা টাকার মধ্যে কিছু টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করা হয়েছে। এছাড়া সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়েছে।

নিকেতনের ওই বাসায় শামীমের কোম্পানির নাম জি কে বি কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের অফিস। নিকেতন এলাকাতে শামীমের আরেকটি বাসা আছে। ওখান থেকে তাকে ডেকে নিয়ে তার অফিসে আসে র্যাব। তাকে নিয়ে অভিযান চালায়। পরে জি কে শামীমকে তার সাত দেহরক্ষীসহ আটক করা হয়।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, জি কে শামীমের কোনো পদ নেই যুবলীগে। তিনি নিজেই নিজেকে যুবলীগের সমবায় বিষয়ক সম্পাদক বলে বেড়াতেন। তবে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
এর আগে, রাজধানীতে অবৈধ ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে গত বুধবার যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে র্যাব। ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্লাবে তার পরিচালিত অবৈধ ক্যাসিনোতেও অভিযান চালানো হয়।