ঢাকা ০৪:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে ২৮ বেইলি ব্রিজ মরণফাঁদঃঝুঁকি নিয়ে চলছে শত শত যানবাহন

মুরাদনগর বার্তা ডেস্কঃ
কুমিল্লার মুরাদনগরে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়কে ২৮টি অতি পুরাতন ও মরচেধরা জরাজীর্ণ বেইলি ব্রিজ যানবাহন ও যাত্রী সাধারণের জন্য মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। কুমিল্লা সড়ক বিভাগের আওতাধীন এসব বেইলি ব্রিজ মাঝে-মধ্যে সংস্কার করা হলেও বর্তমানে ব্রিজগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন যাত্রীবাহী বাসসহ শত শত হালকা ও ভারী যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। প্রায়ই এসব ব্রিজের পাটাতন ও রেলিং ভেঙে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে যানবাহন।

 

মুরাদনগর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ২৮টি ছোট-বড় বেইলি ব্রিজ রয়েছে। অতি পুরাতন এসব ব্রিজ একেবারে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে, পাটাতন ও রেলিংয়ে মরিচা ধরেছে। বিশেষ করে মুরাদনগর- ইলিয়টগঞ্জ, মুরাদনগর- রামচন্দ্রপুর, কোম্পানীগঞ্জ- নবীনগর, মুরাদনগর- হোমনার মতো ব্যস্ত সড়কে ১৮টি ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজ রয়েছে। যানবাহন মালিক-শ্রমিকরা এসব ব্রিজ নতুন করে নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসলেও কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। গত শনিবার উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কের মেটংঘর এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজটির লোহার পাটাতন ভেঙে মালবাহী ট্রাক আটকে গেলে নবীনগর-মুরাদনগর-কুমিল্লা-ঢাকা-চট্টগ্রামগামী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সেতুটির এপার-ওপারের অনেক যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন আটকা পড়ে শত শত যাত্রী চরম দুর্ভোগের কবলে পড়েন।

 

উপজেলার অন্যান্য বেইলি ব্রিজও মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। মুরাদনগর-ইলিয়টগঞ্জ-ঢাকা সড়কে ৬টি বেইলি ব্রিজের পাটাতন ভেঙে গেছে। গত সপ্তাহে পাটাতন ভেঙে বিটুমিন বোঝাই একটি লরি আটকে যায়। সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। একইভাবে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ছালিয়াকান্দি এলাকার বেইলি ব্রিজ চালবোঝাই ট্রাক পারাপারের সময় ভেঙে পড়ে। এতে মুরাদনগর-ইলিয়টগঞ্জ-ঢাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ চারদিন বন্ধ থাকে। মুরাদনগর উপজেলা সদরে গোমতী নদীর উপর বেইলি ব্রিজটির অবস্থা নাজুক। ব্রিজের পিলারের পাশের মাটি সরে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সওজ কর্তৃপক্ষ প্রায় ছয় বছর আগে এ ব্রিজটির ওপর দিয়ে মালবাহী ট্রাক চলাচল নিষেধ করলেও কেউ মানছে না।

 

উপজেলার রামচন্দ্রপুর সড়কের করিমপুর এলাকার বেইলি ব্রিজটিও বেহাল। উপজেলার বাঙ্গরা-সংচাইল সড়কে ৬টি, নবীনগর সড়কে ৬টি, মেটাঙ্গর-শ্রীকাইল সড়কে ৪টি, সংচাইল-কোরবানপুর সড়কে ৩টি, রামচন্দ্রপুর সড়কে ২টি, ডুমুরিয়া ও পাঁচকিত্তা সড়কে ২টি, চাপিতলা সড়কে ১টি বেইলি রয়েছে। এসব ব্রিজও কম-বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের দুই প্রান্তে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ লেখা সাইনবোর্ড লাগিয়েই সওজ কর্তৃপক্ষ দায় এড়িয়ে চলছে বলে যাত্রী, যানবাহনের চালক ও স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে সওজ কুমিল্লার প্রকৌশলী স্বপন কান্তি পাল বলেন, মুরাদনগরের ২৮টি বেইলি ব্রিজের মধ্যে বেশ কয়েকটি পুরাতন ও অনেকটা জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। এর মধ্যে মুরাদনগর-ঢাকা সড়কের অধিকাংশ বেইলি ব্রিজ বেশি ঝুঁকিতে আছে। বেইলি ব্রিজগুলো ভেঙে স্থায়ীভাবে পাকা ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির ১৭ বছর পর বিজয় দিবস উদযাপন

মুরাদনগরে ২৮ বেইলি ব্রিজ মরণফাঁদঃঝুঁকি নিয়ে চলছে শত শত যানবাহন

আপডেট সময় ০৪:৫৫:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০১৭
মুরাদনগর বার্তা ডেস্কঃ
কুমিল্লার মুরাদনগরে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়কে ২৮টি অতি পুরাতন ও মরচেধরা জরাজীর্ণ বেইলি ব্রিজ যানবাহন ও যাত্রী সাধারণের জন্য মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। কুমিল্লা সড়ক বিভাগের আওতাধীন এসব বেইলি ব্রিজ মাঝে-মধ্যে সংস্কার করা হলেও বর্তমানে ব্রিজগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন যাত্রীবাহী বাসসহ শত শত হালকা ও ভারী যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। প্রায়ই এসব ব্রিজের পাটাতন ও রেলিং ভেঙে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে যানবাহন।

 

মুরাদনগর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ২৮টি ছোট-বড় বেইলি ব্রিজ রয়েছে। অতি পুরাতন এসব ব্রিজ একেবারে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে, পাটাতন ও রেলিংয়ে মরিচা ধরেছে। বিশেষ করে মুরাদনগর- ইলিয়টগঞ্জ, মুরাদনগর- রামচন্দ্রপুর, কোম্পানীগঞ্জ- নবীনগর, মুরাদনগর- হোমনার মতো ব্যস্ত সড়কে ১৮টি ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজ রয়েছে। যানবাহন মালিক-শ্রমিকরা এসব ব্রিজ নতুন করে নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসলেও কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। গত শনিবার উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কের মেটংঘর এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজটির লোহার পাটাতন ভেঙে মালবাহী ট্রাক আটকে গেলে নবীনগর-মুরাদনগর-কুমিল্লা-ঢাকা-চট্টগ্রামগামী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সেতুটির এপার-ওপারের অনেক যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন আটকা পড়ে শত শত যাত্রী চরম দুর্ভোগের কবলে পড়েন।

 

উপজেলার অন্যান্য বেইলি ব্রিজও মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। মুরাদনগর-ইলিয়টগঞ্জ-ঢাকা সড়কে ৬টি বেইলি ব্রিজের পাটাতন ভেঙে গেছে। গত সপ্তাহে পাটাতন ভেঙে বিটুমিন বোঝাই একটি লরি আটকে যায়। সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। একইভাবে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ছালিয়াকান্দি এলাকার বেইলি ব্রিজ চালবোঝাই ট্রাক পারাপারের সময় ভেঙে পড়ে। এতে মুরাদনগর-ইলিয়টগঞ্জ-ঢাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ চারদিন বন্ধ থাকে। মুরাদনগর উপজেলা সদরে গোমতী নদীর উপর বেইলি ব্রিজটির অবস্থা নাজুক। ব্রিজের পিলারের পাশের মাটি সরে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সওজ কর্তৃপক্ষ প্রায় ছয় বছর আগে এ ব্রিজটির ওপর দিয়ে মালবাহী ট্রাক চলাচল নিষেধ করলেও কেউ মানছে না।

 

উপজেলার রামচন্দ্রপুর সড়কের করিমপুর এলাকার বেইলি ব্রিজটিও বেহাল। উপজেলার বাঙ্গরা-সংচাইল সড়কে ৬টি, নবীনগর সড়কে ৬টি, মেটাঙ্গর-শ্রীকাইল সড়কে ৪টি, সংচাইল-কোরবানপুর সড়কে ৩টি, রামচন্দ্রপুর সড়কে ২টি, ডুমুরিয়া ও পাঁচকিত্তা সড়কে ২টি, চাপিতলা সড়কে ১টি বেইলি রয়েছে। এসব ব্রিজও কম-বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের দুই প্রান্তে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ লেখা সাইনবোর্ড লাগিয়েই সওজ কর্তৃপক্ষ দায় এড়িয়ে চলছে বলে যাত্রী, যানবাহনের চালক ও স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে সওজ কুমিল্লার প্রকৌশলী স্বপন কান্তি পাল বলেন, মুরাদনগরের ২৮টি বেইলি ব্রিজের মধ্যে বেশ কয়েকটি পুরাতন ও অনেকটা জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। এর মধ্যে মুরাদনগর-ঢাকা সড়কের অধিকাংশ বেইলি ব্রিজ বেশি ঝুঁকিতে আছে। বেইলি ব্রিজগুলো ভেঙে স্থায়ীভাবে পাকা ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।