ঢাকা ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমার বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে : প্রধান বিচারপতি

জাতীয় ডেস্কঃ
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, আমার বক্তব্যকে মিসকোট (ভুলভাবে উপস্থাপন) করবেন না। মিসকোট করলে আমাকে নিয়ে অনেক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, মামলার শুনানি চলাকালে আমি আদালতে যা বলি তা কখনও কখনও বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়। এতে আমাকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। এটা যাতে না হয় সেজন্য আপনাদের সচেতন হতে হবে। কারণ আমার পক্ষে প্রেস কনফারেন্স করে কোনো কিছু বলা সম্ভব নয়।
বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট শান্তি পদ ঘোষের লেখা ‘জুডিশিয়াল ইন্টারপ্রেটেশন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ক্যান্টনমেন্ট থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। এখন যারা বড় বড় কথা বলেন, আমি প্রধান বিচারপতি হিসেবে মুখ খুলতে পারছি না, তবে বই লিখে যাবো। আমি দেখিয়ে দেবো এই ষড়যন্ত্রের মধ্যে কারা কারা জড়িত ছিল?
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কজন বিপথগামী লোক নৃসংশভাবে হত্যা করেছিল। আমি এই মামলার আপিলের রায় এবং রিভিউ নিষ্পত্তি করেছি। মামলার নথি পর্যালোচনা করে দেখলাম তদন্তে ত্রুটি ছিল, প্রসিকিউশনের ত্রুটি ছিল। শুধু এই মামলাই নয়, জেল হত্যা মামলাও। আপনারা দুটি মামলার রায়ই পর্যালোচনা করে দেখবেন। আপিল বিভাগের রায়ে বলেছি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ছিলো ফৌজদারি ষড়যন্ত্র। একেবারে ক্যান্টনমেন্ট থেকে ষড়যন্ত্র হয়েছে। ষড়যন্ত্রে যদি একজন লোকও থাকে এবং তার সঙ্গে আর যারা আছে প্রত্যেকেই সমভাবে দায়ী। আমরা মাত্র ১৫/১৬/২০ জনের বিচার করেছি। যারা ১৫ আগস্ট রাতে রাত্রে মার্চ করেছিল, মার্চ করার পরে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়েছিল, মার্চ করে ৩২ নম্বরে আসা হয়েছে, তখনতো ষড়যন্ত্র স্পষ্টভাবে প্রকাশ হয়ে গিয়েছিল।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা বিচারকরা হয়তো ছাত্রজীবনে বা পেশাগত জীবনে রাজনীতি নিয়ে প্রত্যেকের চিন্তা-চেতনা থাকতে পারে। কিন্তু যখন বিচারক হিসেবে শপথ গ্রহণ করি তখন অতীত ভুলে যেতে হবে। বিচার বিভাগের বর্তমান ও ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতে হবে। যদি রাজনীতি করতে হয় তাহলে আপনারা বিচারকের পদ ছেড়ে আসুন। শুধু বিচারকদের বলবো না, আইনজীবীদেরও বলব। এই সমাজে আপনাদেরও অনেক কিছু করার আছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আপনারা এক হোন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে বার সভাপতি জয়নুল আবেদীন, আইনজীবী আসাদ হোসেন চৌধুরী, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান এবং লেখক শান্তি পদ ঘোষ বক্তব্য দেন।
ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত ওসি’র মত বিনিময়

আমার বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে : প্রধান বিচারপতি

আপডেট সময় ০৭:১৫:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অগাস্ট ২০১৭
জাতীয় ডেস্কঃ
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, আমার বক্তব্যকে মিসকোট (ভুলভাবে উপস্থাপন) করবেন না। মিসকোট করলে আমাকে নিয়ে অনেক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, মামলার শুনানি চলাকালে আমি আদালতে যা বলি তা কখনও কখনও বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়। এতে আমাকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। এটা যাতে না হয় সেজন্য আপনাদের সচেতন হতে হবে। কারণ আমার পক্ষে প্রেস কনফারেন্স করে কোনো কিছু বলা সম্ভব নয়।
বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট শান্তি পদ ঘোষের লেখা ‘জুডিশিয়াল ইন্টারপ্রেটেশন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ক্যান্টনমেন্ট থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। এখন যারা বড় বড় কথা বলেন, আমি প্রধান বিচারপতি হিসেবে মুখ খুলতে পারছি না, তবে বই লিখে যাবো। আমি দেখিয়ে দেবো এই ষড়যন্ত্রের মধ্যে কারা কারা জড়িত ছিল?
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কজন বিপথগামী লোক নৃসংশভাবে হত্যা করেছিল। আমি এই মামলার আপিলের রায় এবং রিভিউ নিষ্পত্তি করেছি। মামলার নথি পর্যালোচনা করে দেখলাম তদন্তে ত্রুটি ছিল, প্রসিকিউশনের ত্রুটি ছিল। শুধু এই মামলাই নয়, জেল হত্যা মামলাও। আপনারা দুটি মামলার রায়ই পর্যালোচনা করে দেখবেন। আপিল বিভাগের রায়ে বলেছি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ছিলো ফৌজদারি ষড়যন্ত্র। একেবারে ক্যান্টনমেন্ট থেকে ষড়যন্ত্র হয়েছে। ষড়যন্ত্রে যদি একজন লোকও থাকে এবং তার সঙ্গে আর যারা আছে প্রত্যেকেই সমভাবে দায়ী। আমরা মাত্র ১৫/১৬/২০ জনের বিচার করেছি। যারা ১৫ আগস্ট রাতে রাত্রে মার্চ করেছিল, মার্চ করার পরে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়েছিল, মার্চ করে ৩২ নম্বরে আসা হয়েছে, তখনতো ষড়যন্ত্র স্পষ্টভাবে প্রকাশ হয়ে গিয়েছিল।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা বিচারকরা হয়তো ছাত্রজীবনে বা পেশাগত জীবনে রাজনীতি নিয়ে প্রত্যেকের চিন্তা-চেতনা থাকতে পারে। কিন্তু যখন বিচারক হিসেবে শপথ গ্রহণ করি তখন অতীত ভুলে যেতে হবে। বিচার বিভাগের বর্তমান ও ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতে হবে। যদি রাজনীতি করতে হয় তাহলে আপনারা বিচারকের পদ ছেড়ে আসুন। শুধু বিচারকদের বলবো না, আইনজীবীদেরও বলব। এই সমাজে আপনাদেরও অনেক কিছু করার আছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আপনারা এক হোন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে বার সভাপতি জয়নুল আবেদীন, আইনজীবী আসাদ হোসেন চৌধুরী, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান এবং লেখক শান্তি পদ ঘোষ বক্তব্য দেন।