বিনোদন ডেস্কঃ
কঙ্গনা রানাউত-হৃত্বিক রোশন বিতর্কে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণের পর্ব চলছিলই। অভিযোগের পর অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল। কখনও সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলছিলেন কঙ্গনা, কখনও তোপ দাগতে শোনা যাচ্ছিল অভিনেত্রীর বোনকে। কিন্তু পুরো পর্বটিতেই মুখ বন্ধ রেখেছিলেন একজন। তিনি হলেন বিতর্কের অন্যতম কেন্দ্র হৃত্বিক রোশন। তার আইনজীবী, বাবা রাকেশ রোশন মুখ খুলেছিলেন। এবারই প্রথম তিনি খুললেন।
বৃহস্পতিবার হৃত্বিক ফেসবুকে একটি লম্বা বিবৃতিও দিয়েছেন এই ঘটনা প্রসঙ্গে। পুরো বিবৃতিতে তিনি কোথাও কঙ্গনার নাম উল্লেখ না করে দাবি করেছেন একতরফা একজন মহিলা যখন সমাজের কোনও পুরুষের বিরুদ্ধে শোষণের অভিযোগ তোলেন, তখন গোটা সমাজব্যবস্থা সেটা বিশ্বাস করে। কারণ প্রত্যেকেরই ধারনা, কেন একজন মহিলা মিথ্যে বলবে।কিন্তু সত্যিটা সবসময় সেটা হয় না। হৃত্বিক তার লম্বা বিবৃতিতে দাবি করেছেন, তার সঙ্গে কঙ্গনার দীর্ঘ সাত বছরের সম্পর্ক থাকাটা কার্যত অসম্ভব। কারণ, ‘কাইটস’ বা ‘কৃশ-থ্রি’ ছাড়া ব্যক্তিগত ভাবে তারা একান্তে কখনওই দেখা করেননি।
যেহেতু তিনি সৃষ্টিশীল, উদ্ভাবনী এবং গঠনমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাই তার সঙ্গে যুক্ত নয় এমন কিছু নিয়েই মুখ খুলতে তিনি নারাজ। কিন্তু অনেক সময় শরীরের কোনও ঘ্যানঘ্যানে রোগকে পাত্তা না দিলে যেমন ক্ষতি হয়, তেমনই জীবনে কোনও বিষয় যেটা ক্ষতিকারক, সেটা পাত্তা না দিলে, তাতে নিজেরই ক্ষতি হয়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও, বর্তমানে তাকে ঘিরে যে বিতর্কের পাহাড় তৈরি হয়েছে, সেটা আদও কতটা সত্যি সেটাও সকলের জানা প্রয়োজন, মন্তব্য হৃত্বিকের।
এই পুরো পর্বটিকে সার্কাস বলে বর্ণনা করেছেন হৃত্বিক। সেখানে দাঁড়িয়ে নিজের চরিত্রের স্বপক্ষে কোনও সওয়াল করার তেমন কোনও ইচ্ছেও তার নেই। কারণ অভিনেতার দাবি, তিনি এই পুরো ঘটনাটায় জড়িতও নন। তাকে অকারণেই টেনে আনা হয়েছে। যেখানে তিনি কঙ্গনার সঙ্গে একান্তে কখনও দেখাই করেননি, সেখানে তাদের দীর্ঘ সাত বছরের সম্পর্ক আসলে ভিত্তিহীন।
তিনি আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে উড়িয়ে নিজেকে ভাল ছেলে প্রমাণের কোনও চেষ্টাই তিনি করছেন না। কারণ তিনি খুব ভাল করেই জানেন তার দোষ, এবং একজন মানুষ হিসেবে তিনি কতটা ভুল করেছেন। আসলে তিনি মুখ খুলেছেন, কারণ ভবিষ্যতে এই নিয়ে আর কোনও জলঘোলা হোক, বা আরও খারাপ কিছু হোক, সেটা তিনি মোটেই চান না।
তবে সাত বছরের দীর্ঘ সম্পর্কের কোনও ছবি, কোনও সেলফি কেন নেই সেটা অভিনেতার অন্যতম প্রশ্ন। কেন কোনও ফটোগ্রাফারের চোখ এড়িয়ে গেল তাদের একসঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো, প্রশ্ন হৃত্বিকের। এমনকি ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে যে সময় তাদের এনগেজমেন্ট হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, তার কোনও ছবি কেন নেই। তারপরই অভিনেতার দাবি, পাসপোর্ট বলছে ২০১৪র জানুয়ারিতে দেশের বাইরে তিনি কোথাও যাননি। তাহলে সত্যিটা ঠিক কী, প্রশ্ন হৃত্বিকের।
এরপর তিনি বলেন তিনি তার মা-বাবা পরিবারের থেকে শিখেছেন মহিলাদের সম্মান করতে হয়। তিনি সেটাই করার চেষ্টা করেছেন। আগামী দিনেও তার সন্তানদের শেখাবেন সেই কাজটাই করতে।
তিনি তার বিবৃতির শেষে বলেন, তার কাউকে বিচার করার কোনও ইচ্ছেই নেই। কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু যখন সত্যিটা বিকৃত করা হয়, তখন সারা সমাজের ক্ষতি হয়। একটা গোটা সভ্যতা ভোগে। বাড়িতে একজনের পরিবার ভোগে, এই সত্যি-মিথ্যের জালে ফেঁসে ভোগান্তি হয় সন্তানদের।