ঢাকা ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে জেডিসি পরীক্ষা দিতে পারেনি নুর মোহাম্মদ

মো: হাবিবুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর সোনা মিয়া মোল্লা দাখিল মাদরাসা সুপার মজিবুর রহমানের ভুলের কারণে জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি নুর মোহাম্মদ নামে এক শিক্ষার্থী। পরীক্ষা দিতে না পারায় ওই শিক্ষার্থী হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ করা হয়েছে।

জানা যায়, রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের ব্রা‏হ্মন চাপিতলা গ্রামের রিকশা (ভ্যান) চালক সফিকুল ইসলামের ছেলে নুর মোহাম্মদ রামচন্দ্রপুর সোনা মিয়া মোল্লা দাখিল মাদরাসা থেকে চলমান জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য দুই হাজার সাতশত টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করে। কিন্তু মাদরাসা সহকারী শিক্ষক কাজী রোকন উদ্দিনের গাফিলতির কারণে ফরম পূরণের কাগজে নুর মোহাম্মদের স্থলে ভুলবষত: নুর মোহাম্মদ মেহেদী লিপিবদ্ধ হয়। পরবর্তীতে বিষয়টির ব্যাপারে মাদরাসার সুপার মজিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তা সংশোধন করতে আট হাজার টাকা দাবি করলে নুর মোহাম্মদের চাচা খবির হোসেন টাকা দিতে রাজি হয়। কিন্তুু গরীব বাবার পক্ষে তাৎক্ষনিক আট হাজার টাকা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় মাদরাসা সুপার মজিবুর রহমান সংশোধন করার চেষ্টা করেনি বলে জানা গেছে।

পরে এলাকার লোকজন মাদরাসায় গিয়ে সুপার মজিবুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি পরীক্ষার পূর্বে সংশোধিত প্রবেশপত্র দেওয়ার আশ্বাস দেন। গত ২৫ অক্টোবর মাদরাসায় গিয়ে যোগাযোগ করলে সুপার জানায়, প্রবেশপত্র সংশোধন করার আর কোন সুযোগ নেই। যার ফলে মাদরাসা সুপার মজিবুর রহমানের ভুলের কারণে নুর মোহাম্মদ এবারের জেডিসি পরীক্ষা দেওয়া হলো না। শিক্ষা জীবন থেকে এক বছর পিছিয়ে গেল তার। এ খবর শুনে জেডিসি পরীক্ষার্থী নুর মোহাম্মদ কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তার মা-বাবাকে জানায়। বাধ্য হয়ে জেডিসি পরীক্ষার্থী নুর মোহাম্মদ বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট গত ৩০ অক্টোবর একটি লিখিত অভিযোগ করে। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

মাদরাসার সুপার মজিবুর রহমান জানান, এ ভুলের জন্য সহকারী শিক্ষক কাজী রোকন উদ্দিন দায়ী। কারন পূরনকৃত ফরম সংশোধনের দিন সে দায়িত্বে ছিল। ওইসময় আমি চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণে ছিলাম। সহকারী শিক্ষক কাজী রোকন উদ্দিন বিষয়টি জেনেও আমাকে জানায়নি। পূরনকৃত ফরম সংশোধনের নামে আট হাজার টাকা চাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।

সহকারী শিক্ষক কাজী রোকন উদ্দিন জানান, কম্পিউটারে ফরম পূরণ করতে গিয়ে বিষয়টি ভুল হয়েছে। নুর মোহাম্মদের স্থলে ভুলবষত: নুর মোহাম্মদ মেহেদীর নামে ফরম পূরণ করা হয়। বিষয়টি সংশোধনের জন্য তাৎক্ষনিক ভাবে সুপারকে বলা হলেও তিনি কোন প্রদক্ষেপ নেয়নি। অসহায় পেয়ে এখন আমার ঘারে দোষ চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

বিষয়টির তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম তালুকদার জানান, যেহেতু সুপার প্রশিক্ষণে ছিল, সেহেতু বিষয়টি দেখার দায়িত্ব ছিল সহ-সুপার ও অফিস সহকারীর। এ বিষয়ে লিখিত বক্তব্য দেওয়ার জন্য মাদরাসার সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বক্তব্য পাওয়ার পর উক্ত ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিটিকে অনুরোধ করা হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত ওসি’র মত বিনিময়

মুরাদনগরে জেডিসি পরীক্ষা দিতে পারেনি নুর মোহাম্মদ

আপডেট সময় ০১:০৭:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর ২০১৭
মো: হাবিবুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর সোনা মিয়া মোল্লা দাখিল মাদরাসা সুপার মজিবুর রহমানের ভুলের কারণে জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি নুর মোহাম্মদ নামে এক শিক্ষার্থী। পরীক্ষা দিতে না পারায় ওই শিক্ষার্থী হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ করা হয়েছে।

জানা যায়, রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের ব্রা‏হ্মন চাপিতলা গ্রামের রিকশা (ভ্যান) চালক সফিকুল ইসলামের ছেলে নুর মোহাম্মদ রামচন্দ্রপুর সোনা মিয়া মোল্লা দাখিল মাদরাসা থেকে চলমান জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য দুই হাজার সাতশত টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করে। কিন্তু মাদরাসা সহকারী শিক্ষক কাজী রোকন উদ্দিনের গাফিলতির কারণে ফরম পূরণের কাগজে নুর মোহাম্মদের স্থলে ভুলবষত: নুর মোহাম্মদ মেহেদী লিপিবদ্ধ হয়। পরবর্তীতে বিষয়টির ব্যাপারে মাদরাসার সুপার মজিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তা সংশোধন করতে আট হাজার টাকা দাবি করলে নুর মোহাম্মদের চাচা খবির হোসেন টাকা দিতে রাজি হয়। কিন্তুু গরীব বাবার পক্ষে তাৎক্ষনিক আট হাজার টাকা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় মাদরাসা সুপার মজিবুর রহমান সংশোধন করার চেষ্টা করেনি বলে জানা গেছে।

পরে এলাকার লোকজন মাদরাসায় গিয়ে সুপার মজিবুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি পরীক্ষার পূর্বে সংশোধিত প্রবেশপত্র দেওয়ার আশ্বাস দেন। গত ২৫ অক্টোবর মাদরাসায় গিয়ে যোগাযোগ করলে সুপার জানায়, প্রবেশপত্র সংশোধন করার আর কোন সুযোগ নেই। যার ফলে মাদরাসা সুপার মজিবুর রহমানের ভুলের কারণে নুর মোহাম্মদ এবারের জেডিসি পরীক্ষা দেওয়া হলো না। শিক্ষা জীবন থেকে এক বছর পিছিয়ে গেল তার। এ খবর শুনে জেডিসি পরীক্ষার্থী নুর মোহাম্মদ কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তার মা-বাবাকে জানায়। বাধ্য হয়ে জেডিসি পরীক্ষার্থী নুর মোহাম্মদ বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট গত ৩০ অক্টোবর একটি লিখিত অভিযোগ করে। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

মাদরাসার সুপার মজিবুর রহমান জানান, এ ভুলের জন্য সহকারী শিক্ষক কাজী রোকন উদ্দিন দায়ী। কারন পূরনকৃত ফরম সংশোধনের দিন সে দায়িত্বে ছিল। ওইসময় আমি চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণে ছিলাম। সহকারী শিক্ষক কাজী রোকন উদ্দিন বিষয়টি জেনেও আমাকে জানায়নি। পূরনকৃত ফরম সংশোধনের নামে আট হাজার টাকা চাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।

সহকারী শিক্ষক কাজী রোকন উদ্দিন জানান, কম্পিউটারে ফরম পূরণ করতে গিয়ে বিষয়টি ভুল হয়েছে। নুর মোহাম্মদের স্থলে ভুলবষত: নুর মোহাম্মদ মেহেদীর নামে ফরম পূরণ করা হয়। বিষয়টি সংশোধনের জন্য তাৎক্ষনিক ভাবে সুপারকে বলা হলেও তিনি কোন প্রদক্ষেপ নেয়নি। অসহায় পেয়ে এখন আমার ঘারে দোষ চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

বিষয়টির তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম তালুকদার জানান, যেহেতু সুপার প্রশিক্ষণে ছিল, সেহেতু বিষয়টি দেখার দায়িত্ব ছিল সহ-সুপার ও অফিস সহকারীর। এ বিষয়ে লিখিত বক্তব্য দেওয়ার জন্য মাদরাসার সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বক্তব্য পাওয়ার পর উক্ত ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিটিকে অনুরোধ করা হবে।