অধ্যপক শাহ আলম সরকার, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
১২ এপ্রিল ২০১৫ ইং (মুরাদনগর বার্তা ডটকম):
বাংলা নববর্ষ ১৪২২ বাঙালির দরোজায় কড়া নাড়ছে। চলছে বর্ষ বরণের নানা আয়োজন। দেশের অন্যান্য মৃৎ শিল্পীদের মতো মুরাদনগরের মৃৎ শিল্পীরাও ব্যস্ত। নতুন বছরে বৈশাখী মেলায় মাটির খেলনা সামগ্রী বিক্রির আশায় হাঁড়ভাঙা খাটুনি খাটছেন। কেউবা আবার ধারদেনা করে কিংবা চড়াসুদে মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে মাটির খেলনা তৈরি করছেন।
উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকায় বাখরাবাদ গ্রামে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নেপালচন্দ্র পাল(৫৫), তাঁর স্ত্রী রাণী বালা পাল(৪৫), গৃহবধূ স্মৃতি রাণী পাল(২৫), সজলী রাণী পাল(২৬), মিঠুন পাল(২২) মাটির খেলনা তৈরিতে ব্যস্ত।
এদের মধ্যে মাটির খেলনা তৈরি করে রোদে শুকাচ্ছেন, কেউবা রং করছেন আবার কেউ মাটি কেটে দলা করে খেলনা তৈরির উপযোগী করছেন
বৈশাখী মেলায় মাটির খেলনা বিক্রির আশায় ছেলেকে নিয়ে অন্যের চুলায় আগুন ধরানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিধবা সন্ধ্যা রাণী পাল(৫০)। ঋণের জালে আাটকা পড়া সীতা রাণীর সাথে কথা হয়। ছেলের অন্যকোনো আয়ের পথ না থাকায় মায়ের সাথেই কাজ করছে। বিধবা সীতারাণী স্বামীর সামান্য ভিটিমাটি বিক্রি করে দেন অভাবের তাড়ণায়। এখন থকেন ভাড়া করা বাড়িতে।
মাস ফুরুলেই এখন সন্ধ্যারাণীর ঘরভাড়ার টাকা গুনতে হয়। সন্ধ্যারাণী, ছেলে কমল, ছেলের বউ, নাতি-নাতিন নিয়ে চোখে মুখে অন্ধকাট দেখছেন। তাই ধারকর্জ করে অন্যের চুলায়
আগুন ধরাতে এসেছেন। আশা নববর্ষ উপলক্ষে কিছু আয়রোজগার করা। বিধাব সন্ধ্যারাণী আক্ষেপ কটে বলেন, প্রতিবছরই তো আপনারা আসেন আমাগো ফটু তুইল্যা নেন। পেপারে দেন। কই আমাগোর ভাগ্যেরতো পরিবর্তন অয় নাই। সুযোগ সুবিধাতো দূরের কথা সরকারের লোকজন একটু খোঁজখবরও নিতে আসেন না। সন্ধ্যারাণী তাঁর সংসার নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন । দুবেলা দুমুঠো ভাতের সংস্থান করতে এখন আর শিল্পের ওপর ভরসা করতে পারছেন না।
সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো সংস্থা প্রাচীন এ মৃৎ শিল্পটিকে বাঁচানোর উদ্যোগ নিলে রক্ষা পেতো মৃৎশিল্পীদের পরিবারবর্গ।