ঢাকা ১০:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্ষমতাসীনদের লুটপাটের সুযোগ করে দিতে ফের বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি: রিজভী

জাতীয় ডেস্কঃ

ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতা ও তাদের আত্মীয়স্বজনদের লুটপাটকে আরো বেশি সুযোগ করে দিতেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমায় বাংলাদেশে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমার কথা। কিন্তু বিদ্যুতের দাম না কমিয়ে উল্টো বাড়ানো নজিরবিহীন এবং গণবিরোধী। জনগণের রক্ত চুষে খেতে আবারও বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম যা আগামী মাস থেকেই কার্যকর হবে। যেখানে বিদ্যুতের দাম কমানোর কথা সেখানে পূর্বের তুলনায় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ দাম বৃদ্ধির ঘোষণা আসায় এখন বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিটে বাড়বে ৩৫ পয়সা।

তিনি বলেন, আজ বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন- বিইআরসি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। যা শুধু অযৌক্তিক ও গণবিরোধী নয় ভোটারবিহীন সরকারের লুটপাট নীতির বহিঃপ্রকাশ বলে জানান রিজভী। গোটা দেশটাকে গিলে খেতেই রক্তচোষা সরকার উন্মত্ত হয়ে পড়েছে। তারা ব্যাংক, বীমা, শেয়ারবাজারসহ সমস্ত অর্থনীতিক খাতকে তিলে তিলে খেয়ে তাদের স্বাদ মেটেনি। তাই বার বার গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে গরীবের রক্ত পান করাটাই যেন তাদের মূখ্য উদ্দেশ্য। এর আগে গত মার্চে সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে সরকার।

রিজভী আরও বরেন, ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সালের  সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় বছরে পাইকারি পর্যায়ে ছয়বার এবং খুচরা পর্যায়ে সাতবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। শুধুমাত্র লুটপাটের জন্যই গরীবের সর্বশেষ সম্বলটুকু আত্মসাৎ করে সরকার আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ালো।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, বিদ্যুতের সঙ্গে সব কিছু সম্পর্কিত। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সবচেয়ে বিপাকে পড়বে সীমিত আয়ের মানুষ। শিল্প খাতেও পড়বে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রভাব। এমনিতে সরকারের লুটপাট আর ভয়াবহ দুঃশাসনে দেশে কোন বিনিয়োগ নেই। এমন সময় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা মানেই বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করা। এতে গোটা অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে। প্রতিযোগী মূল্যে শিল্প উৎপাদন সক্ষমতা ব্যাহত হবে। এ ছাড়া বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পগুলো, রফতানি সক্ষমতা, শিল্প বহুমুখীকরণ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে। দেশে জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাবে বেকারত্ব্।

রিজভী আহমেদ বরেন, এমনিতেই এশিয়ার সবচেয়ে বেশী বেকারত্বের হারের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। একই সঙ্গে শিল্পে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেলে বাড়বে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দামও। বর্তমানে নিত্যপণ্যসহ সব কিছুর দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। তার উপর বিদ্যূতের দাম বৃদ্ধির মাশুলও দিতে হবে নি¤œ আয়ের মানুষদের। কৃষি খাতেও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হবে। এমনকি কয়েক দফা বন্যায় দেশে তীব্র খাদ্য সংকট চলছে তার ওপর বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধিতে কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়বে। নতুন করে বিদ্যুতের এই দাম বৃদ্ধি কৃষি ও শিল্পখাতের জন্য মড়ার ওপর খাড়ার ঘা।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির ১৭ বছর পর বিজয় দিবস উদযাপন

ক্ষমতাসীনদের লুটপাটের সুযোগ করে দিতে ফের বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি: রিজভী

আপডেট সময় ০২:৪৮:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৭
জাতীয় ডেস্কঃ

ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতা ও তাদের আত্মীয়স্বজনদের লুটপাটকে আরো বেশি সুযোগ করে দিতেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমায় বাংলাদেশে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমার কথা। কিন্তু বিদ্যুতের দাম না কমিয়ে উল্টো বাড়ানো নজিরবিহীন এবং গণবিরোধী। জনগণের রক্ত চুষে খেতে আবারও বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম যা আগামী মাস থেকেই কার্যকর হবে। যেখানে বিদ্যুতের দাম কমানোর কথা সেখানে পূর্বের তুলনায় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ দাম বৃদ্ধির ঘোষণা আসায় এখন বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিটে বাড়বে ৩৫ পয়সা।

তিনি বলেন, আজ বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন- বিইআরসি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। যা শুধু অযৌক্তিক ও গণবিরোধী নয় ভোটারবিহীন সরকারের লুটপাট নীতির বহিঃপ্রকাশ বলে জানান রিজভী। গোটা দেশটাকে গিলে খেতেই রক্তচোষা সরকার উন্মত্ত হয়ে পড়েছে। তারা ব্যাংক, বীমা, শেয়ারবাজারসহ সমস্ত অর্থনীতিক খাতকে তিলে তিলে খেয়ে তাদের স্বাদ মেটেনি। তাই বার বার গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে গরীবের রক্ত পান করাটাই যেন তাদের মূখ্য উদ্দেশ্য। এর আগে গত মার্চে সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে সরকার।

রিজভী আরও বরেন, ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সালের  সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় বছরে পাইকারি পর্যায়ে ছয়বার এবং খুচরা পর্যায়ে সাতবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। শুধুমাত্র লুটপাটের জন্যই গরীবের সর্বশেষ সম্বলটুকু আত্মসাৎ করে সরকার আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ালো।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, বিদ্যুতের সঙ্গে সব কিছু সম্পর্কিত। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সবচেয়ে বিপাকে পড়বে সীমিত আয়ের মানুষ। শিল্প খাতেও পড়বে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রভাব। এমনিতে সরকারের লুটপাট আর ভয়াবহ দুঃশাসনে দেশে কোন বিনিয়োগ নেই। এমন সময় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা মানেই বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করা। এতে গোটা অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে। প্রতিযোগী মূল্যে শিল্প উৎপাদন সক্ষমতা ব্যাহত হবে। এ ছাড়া বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পগুলো, রফতানি সক্ষমতা, শিল্প বহুমুখীকরণ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে। দেশে জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাবে বেকারত্ব্।

রিজভী আহমেদ বরেন, এমনিতেই এশিয়ার সবচেয়ে বেশী বেকারত্বের হারের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। একই সঙ্গে শিল্পে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেলে বাড়বে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দামও। বর্তমানে নিত্যপণ্যসহ সব কিছুর দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। তার উপর বিদ্যূতের দাম বৃদ্ধির মাশুলও দিতে হবে নি¤œ আয়ের মানুষদের। কৃষি খাতেও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হবে। এমনকি কয়েক দফা বন্যায় দেশে তীব্র খাদ্য সংকট চলছে তার ওপর বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধিতে কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়বে। নতুন করে বিদ্যুতের এই দাম বৃদ্ধি কৃষি ও শিল্পখাতের জন্য মড়ার ওপর খাড়ার ঘা।