ঢাকা ১১:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১০ বছরের শিশুকে ৬ দফা ধর্ষনের অভিযোগ ৬৫ বছর বয়সী কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে!

ফয়সল আহমেদ খান,বাঞ্ছারামপুর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকেঃ

‘বাবা,আমি কি মইরা যামু..আমারে বাচানো যায় না।আমারে বাচান।আমারে যদি বাচাইতে বেশী টাকা লাগে..তইলে বাচানো দরকার নাই…”এভাবেই না-কি কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ্য মেয়েটি তার পিতাকে উল্টো শান্তনা দিচ্ছিলো।

এর আগে শিশুটিকে একই উপজেলার পাহাড়িয়াকান্দি ইউপির ব্যাপারীবাড়ির অবসরপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা আবদুস সালাম মিয়া কর্তৃক তার বাসার শিশু গৃহকর্মী হিসেবে বাড়ি ফাঁকা পেয়ে ঘরবন্দী করে ৬ দিন ধরে ৬ দফা একাধারে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঢাকা থেকে মুঠোফোনে মেয়েটির পিতা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালি ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের দিনমজুর সফিকুল ইসলাম উপজেলার স্থানীয় এই বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন।

কথা বলে জানা গেছে,ধর্ষক হিসেবে অভিযুক্ত সফিক মিয়া (৬৫)বয়সী কর্তৃক তার গৃহকর্মী চম্পা (ছদ্মনাম)কে উপর্যোপরী বার বার ধর্ষনের কারনে গত ১ সপ্তাহ ধরে একাধারে রক্তক্ষরন হচ্ছিলো শিশুটির(১০)।আজ সকালে (শনিবার) তার শারিরীক অবস্থার মারাত্বক অবনতি হলে তাকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ)তে স্থানান্তর করা হয় বলে চম্পার দিনমজুর,অতিদরিদ্র অসুস্থ্য পিতা সফিকুল ইসলাম  মুঠোফোনে জানান।

খোজ নিয়ে জানা গেছে,ব্রাহ্মনবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালি ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের দিনমজুর সফিক তার একমাত্র মেয়ে চম্পাকে অভাবের তাড়নায় একই উপজেলার পাহাড়িয়াকান্দি গ্রামে কৃষি কর্মকর্তা আবদুস সালাম মিয়ার আহবানে সাড়া দিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে তার বর্তমান আবাসস্থল নরসিংদীর ভেলানগরের বাসায় কাজের জন্য দেয়।

মেয়েটির পিতা সফিক মিয়া জানান,-গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অব:কৃষি কর্মকর্তা সালাম মিয়ার স্ত্রী ঢাকায় চলে গেলে চম্পা ও সালাম মিয়া ছাড়া বাসায় আর কেউ না থাকায় এই সুযোগে ঐ দিন হতে কয়েকদিন একাধারে ধর্ষন করতে থাকে,চম্পার রক্ষক্ষরন হওয়া সত্বেও।২৬ ফেব্রুয়ারি আমার মেয়ে ফোনে বিষয়টি জানায়। ৬ মার্চ রক্তক্ষরন বন্ধ না হওয়ায় চম্পাকে বাঞ্ছারামপুরে আমার কাছে পাঠিয়ে দেয়।তাকে তাৎক্ষণিক পল্লী চিকিৎসক দেখানো হলে সেই চিকিৎসক বিষয়টি আচ করতে পেরে আমাদের বাঞ্ছারামপুর সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হলে স্থানীয় সরকারি চিকিৎসক ডা.ফাহরিন রুবাইয়া হোসেন পর্যবেক্ষণ করে পরিস্থিতি গুরুতর দেখে ঐদিন দুপুরে (গত মঙ্গলবার) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ওয়ানষ্টপ ক্রাইসিস ওয়ার্ডে পাঠানো দিলে এখন আমিসহ আমার অসুস্থ্য মেয়ে ঢাকা মেডিকেলেই আছি।মেয়ে সুস্থ্য হলে আমি এই বিষয়ে মামলা করে বিচার চাইবো।

জানা যায়,সেখানেই ধর্ষিতা শিশুটির চিকিৎসা চলছিলো সরকারি খরচে। কিন্ত,ডাক্তারদের প্রেসক্রিশননুযায়ী ঔষধপত্র কিনতে অসমর্থ হওয়ায় চম্পার শরীর অবনতি দিকে যাচ্ছে।

এই বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ওসি(তদন্ত)মো.সাব্বির রহমান বলেন, ‘মেয়েটিকে নিয়ে তার বাবা যখন সরকারি হাসপাতালে আসে তখন বিষয়টি জেনে নিজে উদ্যোগী হয়ে মেয়েটিকে হাসপাতালে দেখতে যাই এবং মেয়েটির পিতাকে ঘটনাস্থল নরসিংদী থানায় মামলা করতে পরামর্শ দেই’।

নরসিংদী জেলার ভেলানগর ফাড়ির এএসআই আইরিন সুলতানা মুঠোফোনে জানান,-‘আমরা অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব,তবে ঘটনাটি জেনে নিজ দায়িত্বে অভিযুক্ত সালাম মিয়ার বাড়িতে যেয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।তিনি পলাতক।’
অভিযুক্ত সালাম মিয়া ও ধর্ষিতা শিশুর সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান মো.গাজিউর রহমান,মো.তাজুল ইসলাম ও ওয়ার্ড মেম্বার মোহন মিয়া আজ এই প্রসঙ্গে বলেন,-‘আমাদের এলাকার দরিদ্র দিনমজুরের নাবালিকা মেয়ে আজ মৃর্ত্যূশয্যায়।ধর্ষক সফিক মিয়ার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি’।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সালাম মিয়াকে তার নির্দিষ্ট নাম্বারে দু দফা ফোন করলে জনৈক অবসরপ্রাপ্ত আর্মি অফিসার পরিচয়ে ফোন রিসিভ করে বলেন,-‘এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে নিউজ করলে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করবো। মেয়েটির বাবার সাথে আমরা আপোষ করে নিবো,আপনারা বাড়াবাড়ি করবেন না’।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে মাদ্রাসায় যান না পাঁচ বছর নিয়মিত বেতন তোলেন শিক্ষক

১০ বছরের শিশুকে ৬ দফা ধর্ষনের অভিযোগ ৬৫ বছর বয়সী কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে!

আপডেট সময় ০৩:১০:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মার্চ ২০১৮
ফয়সল আহমেদ খান,বাঞ্ছারামপুর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকেঃ

‘বাবা,আমি কি মইরা যামু..আমারে বাচানো যায় না।আমারে বাচান।আমারে যদি বাচাইতে বেশী টাকা লাগে..তইলে বাচানো দরকার নাই…”এভাবেই না-কি কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ্য মেয়েটি তার পিতাকে উল্টো শান্তনা দিচ্ছিলো।

এর আগে শিশুটিকে একই উপজেলার পাহাড়িয়াকান্দি ইউপির ব্যাপারীবাড়ির অবসরপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা আবদুস সালাম মিয়া কর্তৃক তার বাসার শিশু গৃহকর্মী হিসেবে বাড়ি ফাঁকা পেয়ে ঘরবন্দী করে ৬ দিন ধরে ৬ দফা একাধারে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঢাকা থেকে মুঠোফোনে মেয়েটির পিতা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালি ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের দিনমজুর সফিকুল ইসলাম উপজেলার স্থানীয় এই বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন।

কথা বলে জানা গেছে,ধর্ষক হিসেবে অভিযুক্ত সফিক মিয়া (৬৫)বয়সী কর্তৃক তার গৃহকর্মী চম্পা (ছদ্মনাম)কে উপর্যোপরী বার বার ধর্ষনের কারনে গত ১ সপ্তাহ ধরে একাধারে রক্তক্ষরন হচ্ছিলো শিশুটির(১০)।আজ সকালে (শনিবার) তার শারিরীক অবস্থার মারাত্বক অবনতি হলে তাকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ)তে স্থানান্তর করা হয় বলে চম্পার দিনমজুর,অতিদরিদ্র অসুস্থ্য পিতা সফিকুল ইসলাম  মুঠোফোনে জানান।

খোজ নিয়ে জানা গেছে,ব্রাহ্মনবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালি ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের দিনমজুর সফিক তার একমাত্র মেয়ে চম্পাকে অভাবের তাড়নায় একই উপজেলার পাহাড়িয়াকান্দি গ্রামে কৃষি কর্মকর্তা আবদুস সালাম মিয়ার আহবানে সাড়া দিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে তার বর্তমান আবাসস্থল নরসিংদীর ভেলানগরের বাসায় কাজের জন্য দেয়।

মেয়েটির পিতা সফিক মিয়া জানান,-গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অব:কৃষি কর্মকর্তা সালাম মিয়ার স্ত্রী ঢাকায় চলে গেলে চম্পা ও সালাম মিয়া ছাড়া বাসায় আর কেউ না থাকায় এই সুযোগে ঐ দিন হতে কয়েকদিন একাধারে ধর্ষন করতে থাকে,চম্পার রক্ষক্ষরন হওয়া সত্বেও।২৬ ফেব্রুয়ারি আমার মেয়ে ফোনে বিষয়টি জানায়। ৬ মার্চ রক্তক্ষরন বন্ধ না হওয়ায় চম্পাকে বাঞ্ছারামপুরে আমার কাছে পাঠিয়ে দেয়।তাকে তাৎক্ষণিক পল্লী চিকিৎসক দেখানো হলে সেই চিকিৎসক বিষয়টি আচ করতে পেরে আমাদের বাঞ্ছারামপুর সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হলে স্থানীয় সরকারি চিকিৎসক ডা.ফাহরিন রুবাইয়া হোসেন পর্যবেক্ষণ করে পরিস্থিতি গুরুতর দেখে ঐদিন দুপুরে (গত মঙ্গলবার) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ওয়ানষ্টপ ক্রাইসিস ওয়ার্ডে পাঠানো দিলে এখন আমিসহ আমার অসুস্থ্য মেয়ে ঢাকা মেডিকেলেই আছি।মেয়ে সুস্থ্য হলে আমি এই বিষয়ে মামলা করে বিচার চাইবো।

জানা যায়,সেখানেই ধর্ষিতা শিশুটির চিকিৎসা চলছিলো সরকারি খরচে। কিন্ত,ডাক্তারদের প্রেসক্রিশননুযায়ী ঔষধপত্র কিনতে অসমর্থ হওয়ায় চম্পার শরীর অবনতি দিকে যাচ্ছে।

এই বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ওসি(তদন্ত)মো.সাব্বির রহমান বলেন, ‘মেয়েটিকে নিয়ে তার বাবা যখন সরকারি হাসপাতালে আসে তখন বিষয়টি জেনে নিজে উদ্যোগী হয়ে মেয়েটিকে হাসপাতালে দেখতে যাই এবং মেয়েটির পিতাকে ঘটনাস্থল নরসিংদী থানায় মামলা করতে পরামর্শ দেই’।

নরসিংদী জেলার ভেলানগর ফাড়ির এএসআই আইরিন সুলতানা মুঠোফোনে জানান,-‘আমরা অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব,তবে ঘটনাটি জেনে নিজ দায়িত্বে অভিযুক্ত সালাম মিয়ার বাড়িতে যেয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।তিনি পলাতক।’
অভিযুক্ত সালাম মিয়া ও ধর্ষিতা শিশুর সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান মো.গাজিউর রহমান,মো.তাজুল ইসলাম ও ওয়ার্ড মেম্বার মোহন মিয়া আজ এই প্রসঙ্গে বলেন,-‘আমাদের এলাকার দরিদ্র দিনমজুরের নাবালিকা মেয়ে আজ মৃর্ত্যূশয্যায়।ধর্ষক সফিক মিয়ার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি’।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সালাম মিয়াকে তার নির্দিষ্ট নাম্বারে দু দফা ফোন করলে জনৈক অবসরপ্রাপ্ত আর্মি অফিসার পরিচয়ে ফোন রিসিভ করে বলেন,-‘এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে নিউজ করলে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করবো। মেয়েটির বাবার সাথে আমরা আপোষ করে নিবো,আপনারা বাড়াবাড়ি করবেন না’।