ঢাকা ০২:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বকাপে ৫ ফেভারিট দলের প্রস্তুতি

খেলাধূলা ডেস্কঃ
আর মাত্র এক মাস পর পর্দা উঠছে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের। ‘গ্রেটেস্ট শো অন দ্য আর্থ’ খ্যাত এই টুর্নামেন্টে সর্বশেষ ২০ আসরের ১৩টি শিরোপাই জয় করা ফেভারিট ৫ দলকে নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী রিপোর্ট করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
জার্মানি: দলটির প্রথম পছন্দের গোল রক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যারের ফিটনেস নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি। গত সেপ্টেম্বরে পায়ের হাড় ভেঙ্গে যাবার পর থেকে সাইডলাইনেই কাটাচ্ছেন ৩২ বছর বয়সি বায়ার্ন মিউনিখের এই গোল রক্ষক। গত সপ্তাহে তিনি বলেছেন, ‘ম্যাচ অনুশীলন না করেই এরকম বিশাল একটি টুর্নামেন্টের দলে ঢুকে যেতে পারব-আমি এমনটা মনে করি না।’ পরিবর্তিত হিসেবে জার্মান স্কোয়াডের জন্য রয়েছেন বার্সেলোনার গোল রক্ষক মার্স-আন্দ্রে টের স্টেগান।
জার্মানিকে ২০১৪ আসরের শিরোপা এনে দেয়া কোচ জোয়াচিম লো এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন। বিশ্বকাপের দল গঠনের জন্য তিনি ডেকে আনতে পারেন জসুয়া কিমিচ, লিয়ন গোরেৎকা ও টিমো ওয়ার্নারের মত খেলোয়াড়কে। এবারের আসরের জন্য নিজের ফিটনেস প্রমাণ করতে পারবেন বলে আশাবাদী মার্কো রিউস।
বাছাইপর্বের সবগুলো ম্যাচে জয় পাওয়ার পরও জার্মানী সম্প্রতি ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, স্পেন ও ব্রাজিলের বিপক্ষে অনুশীলন ম্যাচে জয়লাভে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও তারা বিশ্বের শীর্ষ র‌্যাংক ধরে রেখে প্রতিটি বিশ্বকাপেই দক্ষতা প্রদর্শন করে আসছে।
ব্রাজিল: ২০১৪ সালে নিজ মাটিতে বিশকাপে ¦ ব্রাজিল অংশ নিয়েছিল তাদের তরুন তারকা নেইমারের কাঁধে ভর করে। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে দলকে জয় এনে দেয়ার পরেই পিঠের ইনজুরিতে পড়েন নেইমার। এতেই ভেঙ্গে পড়ে দলটি। সেমি-ফাইনালে ৭-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয় জার্মানির কাছে।
ব্রাজিলের সেরা স্ট্রাইকার চার বছর পর আসন্ন টুর্নামেন্টের আগেও শংকিত ফিটনেস নিয়ে। গত ফেব্রুয়ারিতে প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) হয়ে খেলার সময় পায়ের গোঁড়ালিতে আঘাত পান বিশ্বের সবচেয়ে দামী এ ফুটবল তারকা। এর পর অস্ত্রোপাচার করানো নেইমার এখনো ফিটনেস ফিরে পাবার অপেক্ষায় রয়েছেন।
ব্রাজিলের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দেখা দিয়েছে তানি আলাভেসের ইনজুরি। নেইমারের পিএসজি সতীর্থ আলাভেস হাঁটুর ইনজুরিতে পড়ে ইতোমধ্যে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়েছেন। ব্রাজিলের জন্য একটি বড় ধাক্কা। তবে নুতন কোচ তিতের অধীনে ব্রাজিলের বর্তমান দলটি ২০১৪ সালের চেয়ে অনেক ভাল চেহারায় রয়েছে। দক্ষিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে বেশ সহজেই শ্রেষ্ঠত্ব রক্ষা করে বিশ্বকাপের টিকিট নিয়েছে তারা।
স্পেন: কোচ ভিসেন্তে দেল বস্কের অধীনে সর্বশেষ দু’টি শীর্ষ আসরে দুর্বল পারফর্মেন্সের পর তার উত্তরসুরি জুলিয়ন লোপেতেগুইয়ের অধীনে ফের জ্বলে উঠেছে স্পেন। দায়িত্ব গ্রহনের পর সাবেক ওই গোল রক্ষক এখনো কোন ম্যাচে হারেননি। বাছাই পর্বে হাতছাড়া করেছে মাত্র দু’টি পয়েন্ট। সম্প্রতি এক প্রীতি ম্যাচে তারা ফুটবল পরাশক্তি আর্জেন্টিনাকে ধরাশায়ী করেছে ৬-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে।
সার্জিও রামোস ও গেরার্ড পিকের সঙ্গী হিসেবে দলের রক্ষণভাগটি এখনো সামলে চলেছেন ডেভিড ডি গিয়া। আর আক্রমনভাগের সৈনিক ডেভিড সিলভা ও ইসকোর মত তারকাকে সামলানো যে কোন দলের জন্যই বেশ কঠিন। তাদের সমর্থনে থাকছে অভিজ্ঞ আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা।
সম্প্রতি ফিফা ডট কমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কোচ লোপেতেগুই এই বার্সেলোনা তারকা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘এখনো তিনি ভাল খেলতে পারায় আমরা খুবই আনন্দিত। আমরা বিশ্বকাপেও তার এমন পারফরমেন্স দেখতে চাই।’
ফ্রান্স: নিজেদের মাঠে অনুষ্ঠিত ইউরো ২০১৬ আসরের ফাইনালে পর্তুগালের কাছে হেরে কিছুটা ভারাক্রান্ত রয়েছে ফ্রান্স। যে চাপটি এখনো বহন করে চলেছেন কোচ দিদিয়ের দেশ্যম। যদিও বেশ দশাসই একটি স্কোয়াড পেয়েছেন তিনি। কয়েকটি ম্যাচে অপ্রত্যাশিত খারাপ পারফর্মেন্সের পরও দেশ্যমের দলটি বছাইপর্বের সবগুলো ম্যাচে জয় লাভ করেছে। অবশ্য লুক্সেমবার্গের সঙ্গে একটি হোম ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে ব্যাপক সমালোচানর মুখে পড়েছেন কোচ।
ওই সমালোচনা থামানোর জন্য এখন তাকে একটি সেরা স্কোয়াড গড়ে তুলতে হবে। বিশেষ করে আক্রমণভাগ। যেখানে মূল ভূমিকাটি পালন করছেন এ্যান্টনি গ্রীজম্যান। তরুণ তারকা কিলিয়ান এমবাপেও এখন আলোচিত নাম। যদিও দলীয় সাফলতার জন্য একধাপ এগিয়ে খেলতে হবে পল পগবাকেও।
আর্জেন্টিনা:২০১৪ আসরের ফাইনালে পরাজয়ের পর বিশ্বকাপ শিরোপা স্পর্শ করতে এবারই সুবর্ন সুযোগ আলোচিত তারকা লিওনেল মেসির জন্য। যদিও বছাইপর্বে ধুঁকতে থাকা আর্জেন্টিনাকে শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার টিকিট এনে দিয়েছেন মেসি। ইকুয়েডরের বিপক্ষে তার গুরুত্বপূর্ণ হ্যাট্রিকই মান বাঁচিয়েছে আর্জেন্টিনার। অন্যথায় কোচ জর্জ সাম্পাওলির দলকে নিয়ে ছিল শংকা। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘মেসি দলটিকে একাই টেনে নিয়ে যেতে পারেন।’ তবে অসাধারণ দক্ষতাসম্পন্ন তারকা সার্জিও এগুয়েরো ও পাওলো দিবালার মত তারকার সন্নিবেশ ঘটিয়ে তিনি এই দলকেই এগিয়ে নিতে পারেন বিশ্বকাপের শেষ ধাপ পর্যন্ত। বাসস।
ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

বিশ্বকাপে ৫ ফেভারিট দলের প্রস্তুতি

আপডেট সময় ০৩:৪৮:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ মে ২০১৮
খেলাধূলা ডেস্কঃ
আর মাত্র এক মাস পর পর্দা উঠছে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের। ‘গ্রেটেস্ট শো অন দ্য আর্থ’ খ্যাত এই টুর্নামেন্টে সর্বশেষ ২০ আসরের ১৩টি শিরোপাই জয় করা ফেভারিট ৫ দলকে নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী রিপোর্ট করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
জার্মানি: দলটির প্রথম পছন্দের গোল রক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যারের ফিটনেস নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি। গত সেপ্টেম্বরে পায়ের হাড় ভেঙ্গে যাবার পর থেকে সাইডলাইনেই কাটাচ্ছেন ৩২ বছর বয়সি বায়ার্ন মিউনিখের এই গোল রক্ষক। গত সপ্তাহে তিনি বলেছেন, ‘ম্যাচ অনুশীলন না করেই এরকম বিশাল একটি টুর্নামেন্টের দলে ঢুকে যেতে পারব-আমি এমনটা মনে করি না।’ পরিবর্তিত হিসেবে জার্মান স্কোয়াডের জন্য রয়েছেন বার্সেলোনার গোল রক্ষক মার্স-আন্দ্রে টের স্টেগান।
জার্মানিকে ২০১৪ আসরের শিরোপা এনে দেয়া কোচ জোয়াচিম লো এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন। বিশ্বকাপের দল গঠনের জন্য তিনি ডেকে আনতে পারেন জসুয়া কিমিচ, লিয়ন গোরেৎকা ও টিমো ওয়ার্নারের মত খেলোয়াড়কে। এবারের আসরের জন্য নিজের ফিটনেস প্রমাণ করতে পারবেন বলে আশাবাদী মার্কো রিউস।
বাছাইপর্বের সবগুলো ম্যাচে জয় পাওয়ার পরও জার্মানী সম্প্রতি ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, স্পেন ও ব্রাজিলের বিপক্ষে অনুশীলন ম্যাচে জয়লাভে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও তারা বিশ্বের শীর্ষ র‌্যাংক ধরে রেখে প্রতিটি বিশ্বকাপেই দক্ষতা প্রদর্শন করে আসছে।
ব্রাজিল: ২০১৪ সালে নিজ মাটিতে বিশকাপে ¦ ব্রাজিল অংশ নিয়েছিল তাদের তরুন তারকা নেইমারের কাঁধে ভর করে। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে দলকে জয় এনে দেয়ার পরেই পিঠের ইনজুরিতে পড়েন নেইমার। এতেই ভেঙ্গে পড়ে দলটি। সেমি-ফাইনালে ৭-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয় জার্মানির কাছে।
ব্রাজিলের সেরা স্ট্রাইকার চার বছর পর আসন্ন টুর্নামেন্টের আগেও শংকিত ফিটনেস নিয়ে। গত ফেব্রুয়ারিতে প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) হয়ে খেলার সময় পায়ের গোঁড়ালিতে আঘাত পান বিশ্বের সবচেয়ে দামী এ ফুটবল তারকা। এর পর অস্ত্রোপাচার করানো নেইমার এখনো ফিটনেস ফিরে পাবার অপেক্ষায় রয়েছেন।
ব্রাজিলের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দেখা দিয়েছে তানি আলাভেসের ইনজুরি। নেইমারের পিএসজি সতীর্থ আলাভেস হাঁটুর ইনজুরিতে পড়ে ইতোমধ্যে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়েছেন। ব্রাজিলের জন্য একটি বড় ধাক্কা। তবে নুতন কোচ তিতের অধীনে ব্রাজিলের বর্তমান দলটি ২০১৪ সালের চেয়ে অনেক ভাল চেহারায় রয়েছে। দক্ষিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে বেশ সহজেই শ্রেষ্ঠত্ব রক্ষা করে বিশ্বকাপের টিকিট নিয়েছে তারা।
স্পেন: কোচ ভিসেন্তে দেল বস্কের অধীনে সর্বশেষ দু’টি শীর্ষ আসরে দুর্বল পারফর্মেন্সের পর তার উত্তরসুরি জুলিয়ন লোপেতেগুইয়ের অধীনে ফের জ্বলে উঠেছে স্পেন। দায়িত্ব গ্রহনের পর সাবেক ওই গোল রক্ষক এখনো কোন ম্যাচে হারেননি। বাছাই পর্বে হাতছাড়া করেছে মাত্র দু’টি পয়েন্ট। সম্প্রতি এক প্রীতি ম্যাচে তারা ফুটবল পরাশক্তি আর্জেন্টিনাকে ধরাশায়ী করেছে ৬-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে।
সার্জিও রামোস ও গেরার্ড পিকের সঙ্গী হিসেবে দলের রক্ষণভাগটি এখনো সামলে চলেছেন ডেভিড ডি গিয়া। আর আক্রমনভাগের সৈনিক ডেভিড সিলভা ও ইসকোর মত তারকাকে সামলানো যে কোন দলের জন্যই বেশ কঠিন। তাদের সমর্থনে থাকছে অভিজ্ঞ আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা।
সম্প্রতি ফিফা ডট কমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কোচ লোপেতেগুই এই বার্সেলোনা তারকা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘এখনো তিনি ভাল খেলতে পারায় আমরা খুবই আনন্দিত। আমরা বিশ্বকাপেও তার এমন পারফরমেন্স দেখতে চাই।’
ফ্রান্স: নিজেদের মাঠে অনুষ্ঠিত ইউরো ২০১৬ আসরের ফাইনালে পর্তুগালের কাছে হেরে কিছুটা ভারাক্রান্ত রয়েছে ফ্রান্স। যে চাপটি এখনো বহন করে চলেছেন কোচ দিদিয়ের দেশ্যম। যদিও বেশ দশাসই একটি স্কোয়াড পেয়েছেন তিনি। কয়েকটি ম্যাচে অপ্রত্যাশিত খারাপ পারফর্মেন্সের পরও দেশ্যমের দলটি বছাইপর্বের সবগুলো ম্যাচে জয় লাভ করেছে। অবশ্য লুক্সেমবার্গের সঙ্গে একটি হোম ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে ব্যাপক সমালোচানর মুখে পড়েছেন কোচ।
ওই সমালোচনা থামানোর জন্য এখন তাকে একটি সেরা স্কোয়াড গড়ে তুলতে হবে। বিশেষ করে আক্রমণভাগ। যেখানে মূল ভূমিকাটি পালন করছেন এ্যান্টনি গ্রীজম্যান। তরুণ তারকা কিলিয়ান এমবাপেও এখন আলোচিত নাম। যদিও দলীয় সাফলতার জন্য একধাপ এগিয়ে খেলতে হবে পল পগবাকেও।
আর্জেন্টিনা:২০১৪ আসরের ফাইনালে পরাজয়ের পর বিশ্বকাপ শিরোপা স্পর্শ করতে এবারই সুবর্ন সুযোগ আলোচিত তারকা লিওনেল মেসির জন্য। যদিও বছাইপর্বে ধুঁকতে থাকা আর্জেন্টিনাকে শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার টিকিট এনে দিয়েছেন মেসি। ইকুয়েডরের বিপক্ষে তার গুরুত্বপূর্ণ হ্যাট্রিকই মান বাঁচিয়েছে আর্জেন্টিনার। অন্যথায় কোচ জর্জ সাম্পাওলির দলকে নিয়ে ছিল শংকা। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘মেসি দলটিকে একাই টেনে নিয়ে যেতে পারেন।’ তবে অসাধারণ দক্ষতাসম্পন্ন তারকা সার্জিও এগুয়েরো ও পাওলো দিবালার মত তারকার সন্নিবেশ ঘটিয়ে তিনি এই দলকেই এগিয়ে নিতে পারেন বিশ্বকাপের শেষ ধাপ পর্যন্ত। বাসস।