অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
রাজধানী দিল্লিতে বসেই আসাম ইস্যুতে ফের ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনআরসি-কে হাতিয়ার করে বিজেপি ‘গৃহযুদ্ধ’ শুরু করতে চাইছে বলে গুরুতর অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেত্রী।
দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করে আসামের নাগরিক পঞ্জি ইস্যু নিয়ে ফের সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্র সরকারকে তুলোধনা করে তিনি বলেন, ‘স্রেফ রাজনীতির স্বার্থে ৪০ লাখ মানুষকে শরণার্থী বানানো হচ্ছে। গোটা দেশে দমনপীড়ন চালাচ্ছে একটি দল। আসামে কী হচ্ছে এসব? বছরের পর যাঁরা এ দেশে রয়েছেন, তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
‘বিজেপি বিভেদের রাজনীতি করছে’, এই অভিযোগ তুলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলায় এসব হতে দেব না।’
সাম্প্রদায়িক বাছবিচারের রাজনীতির অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিস্ফোরক অভিযোগ, ‘প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলি আহমেদের নামও বাদ দেওয়া হয়েছে। খ্রিস্টান হলে, মুসলিম হলেই নাম বাদ। ওরা ঠিক করবে কে আসামে থাকবে আর কে থাকবেন না। যাঁরা ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক, শুধু তাঁরাই থাকবেন? আর অন্যরা থাকবেন না?’
স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বিরোধীরা যেখানে ‘ক্ষমতায় আছে, সেখানে এসব করতে দেওয়া হবে না।’
সম্প্রতি দুই মাসে তাঁর তিনটি অনুষ্ঠান বাতিল নিয়েও বিজেপি-র দিকেই আঙুল তোলেন তৃণমূল নেত্রী। বলেন, ‘যেখানেই যাচ্ছি অনুষ্ঠান বাতিল করাচ্ছে। আমার জন্য রাস্তা রয়েছে।’ ২০১৯-এ পরিবর্তনের ডাক দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘২০১৯-এ জনতা নেতা করবে। এখন কালেক্টিভ নেতৃত্ব রয়েছে।’
খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের কনফারেন্সে মুখ্যমন্ত্রী মুখে শোনা যায় মাদার টেরিজার প্রশংসা। প্রসঙ্গত, ছত্তিশগড়ে শিশু পাচারের অভিযোগে কেন্দ্রের নির্দেশে মিশনারিজ অব চ্যারিটির সব হোমেই তদন্তে শুরু হয়েছে। এর আগেও ট্যুইট করে এই ঘটনার প্রতিবাদ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য অসাধারণ কাজ করেছেন খ্রিস্টানরা। মাদারকে ভালো করে চিনতাম। বাবরি কাণ্ডের সময় রাস্তায় নেমে কাজ করতে দেখেছি তাঁকে। উনি আমায় বলেছিলেন, আমিও রাস্তায়, তুমিও। তাই মাদারের সেন্টহুডে ভার্টিক্যানে গিয়েছিলাম।’
এরপর কেন্দ্রীয় শাসকদলকে কটাক্ষ করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘সবাইকে ভালোবাসতে জানতে হয়। বিভেদ বিভাজন করে নয়। আমি ভালো ইংরেজি জানি না। খুব সাধারণ পরিবারে বড় হয়েছি। কিন্তু ঐক্যবদ্ধ দেশ দেখতে চাই।’
সূত্র: এই সময়