ঢাকা ০২:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সড়ক পরিবহন আইন মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

জাতীয় ডেস্কঃ
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ এর খসড়া। সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সাজা ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে সড়ক পরিবহন আইনের এ খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়। সকাল ১০টায় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
নতুন আইন অনুযায়ী বেপরোয়াভাবে বা অবহেলা করে গাড়ি চালানোর কারণে কেউ আহত বা নিহত হলে দণ্ডবিধির ৩০৪ (খ) ধারায় মামলা দায়ের হবে। আর এই ধারায় সাজা সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড এবং সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা। বর্তমান এই আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ তিন বছর কারাদণ্ডের বিধান আছে।
তবে গাড়ি চালানোর কারণে কারো নিহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে হত্যা বলে প্রমাণিত হলে ফৌজদারি আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান প্রয়োগ হতে পারে।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, গাড়ি চালানোর অপেশাদার লাইসেন্স পেতে হলে অষ্টম শ্রেণি পাস ও ১৮ বছর হতে হবে। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ২১ বছর হতে হবে।
এছাড়া লাইসেন্সেপ্রাপ্ত চালকের জন্য থাকবে ১২ পয়েন্ট। অপরাধ করলে পয়েন্ট কাটা যাবে। এভাবে ১২ পয়েন্ট শেষ হয়ে গেলে লাইসেন্স বাতিল হবে। অপরদিকে কোনো অপরাধী ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন না। আগে যেসব অপরাধী লাইসেন্স পেয়েছে তা বাতিল করা হবে।
খসড়া আইনে যা আছে:
খসড়া আইনানুযায়ী গাড়ি চালানোর সময় কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। করলে সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রয়েছে। সড়কের ফুটপাতের ওপর দিয়ে কোনো ধরনের মোটরযান চলাচল করতে পারবে না। করলে তিন মাসের কারাদণ্ড বা ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে। আগে গাড়ি চালকদের লেখাপড়ার বিষয়ে কিছু না থাকলেও নতুন আইন অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি পাস হতে হবে। কন্ডাক্টর বা চালকের সহযোগীকে কমপক্ষে লেখার ও পড়ার সক্ষমতাসহ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া থাকতে হবে। যদি কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালায় তবে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কেউ এই অপরাধ করলে তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যাবে। চালকের সহকারীর লাইসেন্স লাগবে। কন্ডাক্টরের লাইসেন্স না থাকলে এক মাসের কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা হবে।
জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহার করলে আগে শাস্তি ছিল সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা। প্রস্তাবিত আইনে মূল শাস্তি কারাদণ্ড আগের মতোই আছে, জরিমানা ৩ লাখ টাকা করা হয়েছে। ফিটনেস না থাকা মোটরযান চালালে বর্তমানে শাস্তি রয়েছে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা। সেখানে এখন শাস্তি সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা জরিমানা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ শাস্তি পাবেন মূলত গাড়ির মালিক।
গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের জাবালে নূর পরিবহনের বাস চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হন। পরের দিন থেকে রাজধানীর সড়কে অবস্থান করে বেপরোয়া বাস চালকের ফাঁসি, রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালনা বন্ধসহ ৯ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। রবিবারও অব্যাহত ছিল শিক্ষার্থীদের সেই আন্দোলন।
ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে শিশু সুরক্ষায় ক্যাপিটেশর গ্রান্টপ্রাপ্ত এতিমখানার ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার

সড়ক পরিবহন আইন মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

আপডেট সময় ০৩:০৮:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অগাস্ট ২০১৮
জাতীয় ডেস্কঃ
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ এর খসড়া। সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সাজা ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে সড়ক পরিবহন আইনের এ খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়। সকাল ১০টায় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
নতুন আইন অনুযায়ী বেপরোয়াভাবে বা অবহেলা করে গাড়ি চালানোর কারণে কেউ আহত বা নিহত হলে দণ্ডবিধির ৩০৪ (খ) ধারায় মামলা দায়ের হবে। আর এই ধারায় সাজা সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড এবং সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা। বর্তমান এই আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ তিন বছর কারাদণ্ডের বিধান আছে।
তবে গাড়ি চালানোর কারণে কারো নিহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে হত্যা বলে প্রমাণিত হলে ফৌজদারি আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান প্রয়োগ হতে পারে।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, গাড়ি চালানোর অপেশাদার লাইসেন্স পেতে হলে অষ্টম শ্রেণি পাস ও ১৮ বছর হতে হবে। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ২১ বছর হতে হবে।
এছাড়া লাইসেন্সেপ্রাপ্ত চালকের জন্য থাকবে ১২ পয়েন্ট। অপরাধ করলে পয়েন্ট কাটা যাবে। এভাবে ১২ পয়েন্ট শেষ হয়ে গেলে লাইসেন্স বাতিল হবে। অপরদিকে কোনো অপরাধী ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন না। আগে যেসব অপরাধী লাইসেন্স পেয়েছে তা বাতিল করা হবে।
খসড়া আইনে যা আছে:
খসড়া আইনানুযায়ী গাড়ি চালানোর সময় কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। করলে সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রয়েছে। সড়কের ফুটপাতের ওপর দিয়ে কোনো ধরনের মোটরযান চলাচল করতে পারবে না। করলে তিন মাসের কারাদণ্ড বা ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে। আগে গাড়ি চালকদের লেখাপড়ার বিষয়ে কিছু না থাকলেও নতুন আইন অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি পাস হতে হবে। কন্ডাক্টর বা চালকের সহযোগীকে কমপক্ষে লেখার ও পড়ার সক্ষমতাসহ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া থাকতে হবে। যদি কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালায় তবে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কেউ এই অপরাধ করলে তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যাবে। চালকের সহকারীর লাইসেন্স লাগবে। কন্ডাক্টরের লাইসেন্স না থাকলে এক মাসের কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা হবে।
জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহার করলে আগে শাস্তি ছিল সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা। প্রস্তাবিত আইনে মূল শাস্তি কারাদণ্ড আগের মতোই আছে, জরিমানা ৩ লাখ টাকা করা হয়েছে। ফিটনেস না থাকা মোটরযান চালালে বর্তমানে শাস্তি রয়েছে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা। সেখানে এখন শাস্তি সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা জরিমানা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ শাস্তি পাবেন মূলত গাড়ির মালিক।
গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের জাবালে নূর পরিবহনের বাস চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হন। পরের দিন থেকে রাজধানীর সড়কে অবস্থান করে বেপরোয়া বাস চালকের ফাঁসি, রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালনা বন্ধসহ ৯ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। রবিবারও অব্যাহত ছিল শিক্ষার্থীদের সেই আন্দোলন।