ঢাকা ১০:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লুটেরা-অর্থপাচারকারীদের কাউকে ছাড়া হবে না : ইমরান

অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হয়েই প্রথম ভাষণে ইমরান খান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, দেশে যারা লুটতরাজ চালিয়েছে, অর্থপাচার করেছে, তাদের কাউকে ছাড়া হবে না। লুটেরাদের প্রত্যেককে সোজা জবাবদিহির আওতায় আনা হবে এবং রাষ্ট্রের লোপাট হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা হবে।

শুক্রবার (১৭ আগস্ট ২০১৮) বাংলাদেশ সময় বিকেলে জাতীয় পরিষদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর দেওয়া ভাষণে ইমরান খান এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

বিজয়ী ঘোষিত হওয়ার পর স্পিকার সুযোগ দিলে ইমরান বক্তৃতার শুরুতেই পাকিস্তানের জনগণকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আপনারা যে পরিবর্তনের জন্য আমাদের ক্ষমতায় এনেছেন, তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। যে অর্থ (বিদেশে) পাচার হয়েছে, তা আমি ফিরিয়ে আনবো। ওই সব অর্থ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানি এবং জনগণের জন্য ব্যয় হওয়া উচিত।

ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইমরান তার জাতির উদ্দেশে বলেন, আমি আমার জনগণের কাছে প্রতিজ্ঞা করছি, সোজা তাদের (দুর্নীতিবাজ) জবাবদিহির আওতায় আনবো। কোনো ধরনের আপোসকে প্রশ্রয় দেবো না।

ফাঁস হওয়া পানামা পেপার্সে বিগত মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ হয়। এতে বলা হয়, নওয়াজ পরিবারের লোকজন দেশের অর্থ লুটে নিয়ে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। ওই অভিযোগ ওঠার পরই নওয়াজ সরকারের পদত্যাগ দাবিতে রাজপথ কাঁপিয়ে তোলে ইমরানের পিটিআই। তারপর গত বছরের জুলাইয়ে নওয়াজকে প্রধানমন্ত্রী পদে অযোগ্য ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্ট। এরই প্রেক্ষিতে ভেঙে যায় সে সরকার এবং ডাকা হয় নতুন নির্বাচনে, যাতে জিতে সরকার গড়লো পিটিআই, প্রধানমন্ত্রী হলেন ইমরান।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, লুটেরা-অর্থপাচারকারী বলতে নওয়াজ পরিবারের সদস্যদেরই ইঙ্গিত করেছেন ইমরান খান।

পাকিস্তানের জনক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে নিজের আদর্শ উল্লেখ করে পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী বলেন, কায়েদ-ই-আযমের পর আমিই সবচেয়ে সংগ্রাম করে প্রধানমন্ত্রী হয়েছি। জনগণ যে পরিবর্তনের জন্য মুখিয়ে আছে, আমি তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।

নওয়াজবিরোধী পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কাঁধে চড়ে ইমরান ক্ষমতায় এসেছেন বলে তার সমালোচনার অভিযোগ তুললেও এর জবাবে পিটিআই প্রধান বলেন, আমি কোনো স্বৈরশাসকের কাঁধে চড়ে ক্ষমতায় আসিনি। এ আমার ২২ বছরের সংগ্রামের ফসল। আমি যখন তাদের (দুর্নীতির অভিযোগ) তদন্তের কথা বললাম, তারা বলতে থাকলো আমি নাকি কোনো শক্তির মদতপুষ্ট হয়ে এমন করেছি। কিন্তু তারা সেসব অভিযোগের তদন্ত করলো না কেন?

বিরোধী দলকে সঙ্গে নিয়ে দেশের জন্য কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আপনাদের সহযোগিতা করতে চাই, এমনকি আপনারা যদি আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও যান। আপনারা যত পারেন গণ্ডগোল করতে পারেন, আমরা আপনাদের খাবার-পানীয় সরবরাহ করবো।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ: স্বাগত জানাতে মুরাদনগরে ব্যাপক প্রস্ততি

লুটেরা-অর্থপাচারকারীদের কাউকে ছাড়া হবে না : ইমরান

আপডেট সময় ০৫:১৭:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অগাস্ট ২০১৮
অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হয়েই প্রথম ভাষণে ইমরান খান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, দেশে যারা লুটতরাজ চালিয়েছে, অর্থপাচার করেছে, তাদের কাউকে ছাড়া হবে না। লুটেরাদের প্রত্যেককে সোজা জবাবদিহির আওতায় আনা হবে এবং রাষ্ট্রের লোপাট হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা হবে।

শুক্রবার (১৭ আগস্ট ২০১৮) বাংলাদেশ সময় বিকেলে জাতীয় পরিষদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর দেওয়া ভাষণে ইমরান খান এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

বিজয়ী ঘোষিত হওয়ার পর স্পিকার সুযোগ দিলে ইমরান বক্তৃতার শুরুতেই পাকিস্তানের জনগণকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আপনারা যে পরিবর্তনের জন্য আমাদের ক্ষমতায় এনেছেন, তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। যে অর্থ (বিদেশে) পাচার হয়েছে, তা আমি ফিরিয়ে আনবো। ওই সব অর্থ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানি এবং জনগণের জন্য ব্যয় হওয়া উচিত।

ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইমরান তার জাতির উদ্দেশে বলেন, আমি আমার জনগণের কাছে প্রতিজ্ঞা করছি, সোজা তাদের (দুর্নীতিবাজ) জবাবদিহির আওতায় আনবো। কোনো ধরনের আপোসকে প্রশ্রয় দেবো না।

ফাঁস হওয়া পানামা পেপার্সে বিগত মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ হয়। এতে বলা হয়, নওয়াজ পরিবারের লোকজন দেশের অর্থ লুটে নিয়ে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। ওই অভিযোগ ওঠার পরই নওয়াজ সরকারের পদত্যাগ দাবিতে রাজপথ কাঁপিয়ে তোলে ইমরানের পিটিআই। তারপর গত বছরের জুলাইয়ে নওয়াজকে প্রধানমন্ত্রী পদে অযোগ্য ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্ট। এরই প্রেক্ষিতে ভেঙে যায় সে সরকার এবং ডাকা হয় নতুন নির্বাচনে, যাতে জিতে সরকার গড়লো পিটিআই, প্রধানমন্ত্রী হলেন ইমরান।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, লুটেরা-অর্থপাচারকারী বলতে নওয়াজ পরিবারের সদস্যদেরই ইঙ্গিত করেছেন ইমরান খান।

পাকিস্তানের জনক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে নিজের আদর্শ উল্লেখ করে পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী বলেন, কায়েদ-ই-আযমের পর আমিই সবচেয়ে সংগ্রাম করে প্রধানমন্ত্রী হয়েছি। জনগণ যে পরিবর্তনের জন্য মুখিয়ে আছে, আমি তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।

নওয়াজবিরোধী পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কাঁধে চড়ে ইমরান ক্ষমতায় এসেছেন বলে তার সমালোচনার অভিযোগ তুললেও এর জবাবে পিটিআই প্রধান বলেন, আমি কোনো স্বৈরশাসকের কাঁধে চড়ে ক্ষমতায় আসিনি। এ আমার ২২ বছরের সংগ্রামের ফসল। আমি যখন তাদের (দুর্নীতির অভিযোগ) তদন্তের কথা বললাম, তারা বলতে থাকলো আমি নাকি কোনো শক্তির মদতপুষ্ট হয়ে এমন করেছি। কিন্তু তারা সেসব অভিযোগের তদন্ত করলো না কেন?

বিরোধী দলকে সঙ্গে নিয়ে দেশের জন্য কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আপনাদের সহযোগিতা করতে চাই, এমনকি আপনারা যদি আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও যান। আপনারা যত পারেন গণ্ডগোল করতে পারেন, আমরা আপনাদের খাবার-পানীয় সরবরাহ করবো।