ঢাকা ০৪:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অঙ্কের দক্ষতায় মস্তিষ্কে শক!

 তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্কঃ
স্কুলে থাকতে অংকের ভয় অনেকেরই থাকে। কিন্তু মস্তিষ্কে বিদ্যুতের শক দিয়ে অংকে দক্ষতা যদি বাড়ানো যেত, তাহলে কেমন হতো? বিজ্ঞানীরা মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট কিছু অংশ উদ্দীপিত করে ক্ষমতা বাড়াতে এমন প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা নাকি এভাবে মস্তিষ্ককে চাঙ্গা করে তুলছেন। ক্রিস্টিয়ান রুফ ও তাঁর সহকর্মীরা স্বেচ্ছাসেবীদের বিদ্যুতের শক দিচ্ছেন। তবে স্বেচ্ছাসেবীরা এই শক টেরই পাচ্ছেন না। ট্রানস্ক্যানিয়াল ম্যাগনেটিক সিমুলেশন প্রক্রিয়ায় কৃত্রিমভাবে মস্তিষ্কের এমন এক স্থানকে উদ্দীপিত করা হচ্ছে, যা অংক কষার ক্ষমতার উপর প্রভাব রাখে।
দাবি করা হয়েছে, এই শক খেয়ে আসলেই মস্তিষ্কের অঙ্ক করার ক্ষমতা বাড়ছে। ১০ মিনিট ধরে স্বেচ্ছাসেবীরা কঠিন কঠিন গুণ-বিয়োগের অঙ্ক করেছেন। তারা বলেছেন, এই ফলাফল চমকে দেওয়ার মতো। ক্রিস্টিয়ান রুফ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, যখনই মস্তিষ্কের এই অংশকে উদ্দীপিত করা হয়, স্বেচ্ছাসেবীরা অনেক ভালোভাবে বিয়োগের অংক করেন। অর্থাত্, তাদের পক্ষে বিয়োগ করা অনেক সহজ হয়। অথচ গুণ করার সময়ে কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। মনে হচ্ছে, এই অংশটি শুধু বিয়োগের জন্য দায়ী। আরেক অংশে শক দিয়ে গুণের দক্ষতা বাড়ানো গেছে।
সব ধরনের মস্তিষ্কের সিমুলেশনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বলে পূর্বাভাষ পাওয়া যাচ্ছে বলে তারা জানান। ক্রিস্টিয়ান রুফ আরো বলেন, কয়েকটি গবেষণায় স্বেচ্ছাসেবীদের ‘ওয়ার্কিং মেমরি’ আরো উন্নত করার চেষ্টা হয়েছে। মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করে তাদের কিছু সংখ্যা মনে রাখতে হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে সেটা করার পর ৪ মাস পরে দেখা গেছে যে, সেই স্বেচ্ছাসেবীরা অন্যদের তুলনায় সেই সংখ্যাগুলো অনেক ভালোভাবে মনে রাখতে পেরেছেন।
শুধু জুরিখে নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও বিদ্যুতের মাধ্যমে মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করা হচ্ছে। সেখানে মার্কিন সেনাবাহিনীর ড্রোন পাইলটদের জন্য এমনটা করা হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে তাদের মনিটরের পর্দার সামনে বসে খড়ের গাদায় সূচ খুঁজতে হয়। সামান্য মনোযোগের অভাব ঘটলে তার পরিণতি মারাত্মক হতে পারে। ট্রানস্ক্যানিয়াল ম্যাগনেটিক সিমুলেশনের মাধ্যমে একাগ্রতা ও মনোযোগ অনেকটা বাড়ানো সম্ভব।
তাহলে আমাদের ভবিষ্যত্ কি এমনটাই হতে চলেছে? ক্রিস্টিয়ান রুফ বলেন, ‘নিউরো এনহ্যান্সমেন্ট বা মস্তিষ্কের স্বাভাবিক ক্ষমতা বাড়ানোর প্রচেষ্টার সীমা কী হওয়া উচিত, অবশ্যই তা নিয়ে আলোচনা চলছে। শরীরের এমন অংশের উপর কতটা হস্তক্ষেপ করা উচিত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ মস্তিষ্কের কোনো একটি অংশের ক্ষমতা বাড়ালে অন্য কোনো ক্ষমতা কমে যাবার ঝুঁকি আছে কি না সেটাও ভাবতে হবে। -ডয়চে ভেলে
ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

অঙ্কের দক্ষতায় মস্তিষ্কে শক!

আপডেট সময় ০৭:২৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৮
 তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্কঃ
স্কুলে থাকতে অংকের ভয় অনেকেরই থাকে। কিন্তু মস্তিষ্কে বিদ্যুতের শক দিয়ে অংকে দক্ষতা যদি বাড়ানো যেত, তাহলে কেমন হতো? বিজ্ঞানীরা মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট কিছু অংশ উদ্দীপিত করে ক্ষমতা বাড়াতে এমন প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা নাকি এভাবে মস্তিষ্ককে চাঙ্গা করে তুলছেন। ক্রিস্টিয়ান রুফ ও তাঁর সহকর্মীরা স্বেচ্ছাসেবীদের বিদ্যুতের শক দিচ্ছেন। তবে স্বেচ্ছাসেবীরা এই শক টেরই পাচ্ছেন না। ট্রানস্ক্যানিয়াল ম্যাগনেটিক সিমুলেশন প্রক্রিয়ায় কৃত্রিমভাবে মস্তিষ্কের এমন এক স্থানকে উদ্দীপিত করা হচ্ছে, যা অংক কষার ক্ষমতার উপর প্রভাব রাখে।
দাবি করা হয়েছে, এই শক খেয়ে আসলেই মস্তিষ্কের অঙ্ক করার ক্ষমতা বাড়ছে। ১০ মিনিট ধরে স্বেচ্ছাসেবীরা কঠিন কঠিন গুণ-বিয়োগের অঙ্ক করেছেন। তারা বলেছেন, এই ফলাফল চমকে দেওয়ার মতো। ক্রিস্টিয়ান রুফ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, যখনই মস্তিষ্কের এই অংশকে উদ্দীপিত করা হয়, স্বেচ্ছাসেবীরা অনেক ভালোভাবে বিয়োগের অংক করেন। অর্থাত্, তাদের পক্ষে বিয়োগ করা অনেক সহজ হয়। অথচ গুণ করার সময়ে কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। মনে হচ্ছে, এই অংশটি শুধু বিয়োগের জন্য দায়ী। আরেক অংশে শক দিয়ে গুণের দক্ষতা বাড়ানো গেছে।
সব ধরনের মস্তিষ্কের সিমুলেশনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বলে পূর্বাভাষ পাওয়া যাচ্ছে বলে তারা জানান। ক্রিস্টিয়ান রুফ আরো বলেন, কয়েকটি গবেষণায় স্বেচ্ছাসেবীদের ‘ওয়ার্কিং মেমরি’ আরো উন্নত করার চেষ্টা হয়েছে। মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করে তাদের কিছু সংখ্যা মনে রাখতে হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে সেটা করার পর ৪ মাস পরে দেখা গেছে যে, সেই স্বেচ্ছাসেবীরা অন্যদের তুলনায় সেই সংখ্যাগুলো অনেক ভালোভাবে মনে রাখতে পেরেছেন।
শুধু জুরিখে নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও বিদ্যুতের মাধ্যমে মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করা হচ্ছে। সেখানে মার্কিন সেনাবাহিনীর ড্রোন পাইলটদের জন্য এমনটা করা হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে তাদের মনিটরের পর্দার সামনে বসে খড়ের গাদায় সূচ খুঁজতে হয়। সামান্য মনোযোগের অভাব ঘটলে তার পরিণতি মারাত্মক হতে পারে। ট্রানস্ক্যানিয়াল ম্যাগনেটিক সিমুলেশনের মাধ্যমে একাগ্রতা ও মনোযোগ অনেকটা বাড়ানো সম্ভব।
তাহলে আমাদের ভবিষ্যত্ কি এমনটাই হতে চলেছে? ক্রিস্টিয়ান রুফ বলেন, ‘নিউরো এনহ্যান্সমেন্ট বা মস্তিষ্কের স্বাভাবিক ক্ষমতা বাড়ানোর প্রচেষ্টার সীমা কী হওয়া উচিত, অবশ্যই তা নিয়ে আলোচনা চলছে। শরীরের এমন অংশের উপর কতটা হস্তক্ষেপ করা উচিত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ মস্তিষ্কের কোনো একটি অংশের ক্ষমতা বাড়ালে অন্য কোনো ক্ষমতা কমে যাবার ঝুঁকি আছে কি না সেটাও ভাবতে হবে। -ডয়চে ভেলে