ঢাকা ০৫:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে জনস্বার্থ উপেক্ষা করে ব্রীজ নির্মাণকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা

মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন আন্দিকুট ইউনিয়নের জারেরা(জাড্ডা) গ্রামের মধ্যবর্তী খালে ব্রীজ নির্মাণ নিয়ে এলাকার বিরাজমান দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। জনস্বার্থ উপেক্ষা করে মাজারে যাতায়াতের দোহাই দিয়ে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে সোজা রাস্তায় বাকাঁ করে ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু করায় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবির প্রেক্ষিতে জারেরা (জাড্ডা) গ্রামের মধ্যবর্তী খালে দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে ব্রীজ নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত হয়। সে মতে দরপত্র শেষে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু করে। কিন্তু জনস্বার্থ উপেক্ষা করে সোজা রাস্তায় বাকা করে মাজারমূখি ব্রীজের কাজ শুরু করায় স্থানীয় লোকজন বাধাঁ প্রদান করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিতু মরিয়ম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আব্দুল হাই খান ও ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক সরকার সরেজমিন পরিদর্শন করে পরিস্থিতি শান্ত করলেও এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে আসেনি। এলাকাবাসীর বাধাঁ উপেক্ষা করেই ব্রীজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। ফলে উক্ত ব্রীজ নির্মাণ নিয়ে শান্তিপ্রিয় ওই এলাকায় এখন চরম অশান্তি বিরাজ করছে।

সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, উত্তর দিকের রাস্তার সাথে মিল রেখে ব্রীজটি সোজাভাবে নির্মাণ করলে স্থানীয় প্রায় দুই হাজার লোকজন ও যানবাহন চলাচলে উপকৃত হতো। পাশাপাশি মাজারেও নির্বিঘেœ লোকজন যাতায়াত করতে পারতো। ব্রীজটি বাকা করে নির্মাণ করলে মাজারে যাতায়াতের সুবিধা হলেও জাড্ডা গ্রামের পূর্বদিকের বৃহত্তর অংশের প্রায় দুই হাজার লোকজন চলাচলে একটু কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। জনস্বার্থ উপেক্ষা করে বছরে  একদিন মাজারে লোকজন যাতায়াতের গুরত্ব বেশী দেয়া হচ্ছে।

জারেরা (জাড্ডা) গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল হক, মুক্তিযোদ্ধা মোসলেহ উদ্দিন বীরপ্রতিক, সাবেক ইউপি সদস্য শহীদ মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান, আব্দুর রহিম মাস্টার, দুলাল মিয়া মাস্টার, আওয়ামীলীগ সভাপতি ডাক্তার সৌকত হোসেন, প্রবাসী বিল্লাল হোসেন, ব্যবসায়ী কবির হোসেন, রাশেদ মিয়া, দুলাল মিয়া, সমাজসেবক হামদু মিয়া ও শাহজাহান মিয়া জানান, জনস্বার্থ উপেক্ষা করে মাজারমূখি লোকজনের সাথে আতাঁতের মাধ্যমে সোজা রাস্তায় বাকা করে ব্রীজ নির্মাণ করা হচ্ছে। যে ভাবে কাজ চলছে এ ভাবে ব্রীজ হলে এলাকাবাসী উক্ত ব্রীজ দিয়ে চলাচলের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। তারা এলাকার জনস্বার্থ ও মাজারের সুবিধার্থে রাস্তা বরাবর সোজা করে ব্রীজটি নির্মাণের জন্য প্রশাসনের নিকট দাবি জানিয়েছে।

বিষয়টির ব্যাপারে সমন শাহ্ ফকির মাজারের খাদেম আবুল বাশার জানান, মাজারের ভক্তবৃন্দরা অনেক কষ্ট করে উক্ত ব্রীজের ব্যবস্থা করেছে। একটি মহল পবিত্র এ মাজারকে তোয়াক্কা না করে ব্রীজটি অন্যদিকে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিতু মরিয়ম জানান, মাজারের সাথে যোগাযোগের জন্যই মূলত এ ব্রীজটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ব্রীজটি নির্মাণ হলে এলাকার লোকজনও সুবিধা ভোগ করতে পারবে। এলাকাবাসী বাধাঁ দিলে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনকে বুঝিয়ে বিষয়টি সমাধান করে দেই।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আব্দুল হাই খান জানান, উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে আলোচনা সাপেক্ষে ব্রীজের কাজ শুরু করা হয়েছে। এলাকার লোকজন যদি বেশী বাড়াবাড়ি করে তাহলে স্থান পরিবর্তন করে ব্রীজটি অন্য কোথাও স্থানান্তর করা হবে। ব্রীজ নির্মাণ করার জন্য অনেক জায়গা রয়েছে।

আন্দিকুট ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক সরকার জানান, উক্ত ব্রীজ নির্মাণ নিয়ে এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে বাধাঁ দিলে   ইউএনও এবং পিআইও এসে এলাকার লোকজনকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। কিছু লোকজনের সুবিধা মতো না হওয়ায় তারা শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে তুলেছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস পালিত

মুরাদনগরে জনস্বার্থ উপেক্ষা করে ব্রীজ নির্মাণকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা

আপডেট সময় ১২:৩৯:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৮
মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন আন্দিকুট ইউনিয়নের জারেরা(জাড্ডা) গ্রামের মধ্যবর্তী খালে ব্রীজ নির্মাণ নিয়ে এলাকার বিরাজমান দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। জনস্বার্থ উপেক্ষা করে মাজারে যাতায়াতের দোহাই দিয়ে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে সোজা রাস্তায় বাকাঁ করে ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু করায় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবির প্রেক্ষিতে জারেরা (জাড্ডা) গ্রামের মধ্যবর্তী খালে দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে ব্রীজ নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত হয়। সে মতে দরপত্র শেষে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু করে। কিন্তু জনস্বার্থ উপেক্ষা করে সোজা রাস্তায় বাকা করে মাজারমূখি ব্রীজের কাজ শুরু করায় স্থানীয় লোকজন বাধাঁ প্রদান করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিতু মরিয়ম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আব্দুল হাই খান ও ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক সরকার সরেজমিন পরিদর্শন করে পরিস্থিতি শান্ত করলেও এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে আসেনি। এলাকাবাসীর বাধাঁ উপেক্ষা করেই ব্রীজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। ফলে উক্ত ব্রীজ নির্মাণ নিয়ে শান্তিপ্রিয় ওই এলাকায় এখন চরম অশান্তি বিরাজ করছে।

সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, উত্তর দিকের রাস্তার সাথে মিল রেখে ব্রীজটি সোজাভাবে নির্মাণ করলে স্থানীয় প্রায় দুই হাজার লোকজন ও যানবাহন চলাচলে উপকৃত হতো। পাশাপাশি মাজারেও নির্বিঘেœ লোকজন যাতায়াত করতে পারতো। ব্রীজটি বাকা করে নির্মাণ করলে মাজারে যাতায়াতের সুবিধা হলেও জাড্ডা গ্রামের পূর্বদিকের বৃহত্তর অংশের প্রায় দুই হাজার লোকজন চলাচলে একটু কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। জনস্বার্থ উপেক্ষা করে বছরে  একদিন মাজারে লোকজন যাতায়াতের গুরত্ব বেশী দেয়া হচ্ছে।

জারেরা (জাড্ডা) গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল হক, মুক্তিযোদ্ধা মোসলেহ উদ্দিন বীরপ্রতিক, সাবেক ইউপি সদস্য শহীদ মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান, আব্দুর রহিম মাস্টার, দুলাল মিয়া মাস্টার, আওয়ামীলীগ সভাপতি ডাক্তার সৌকত হোসেন, প্রবাসী বিল্লাল হোসেন, ব্যবসায়ী কবির হোসেন, রাশেদ মিয়া, দুলাল মিয়া, সমাজসেবক হামদু মিয়া ও শাহজাহান মিয়া জানান, জনস্বার্থ উপেক্ষা করে মাজারমূখি লোকজনের সাথে আতাঁতের মাধ্যমে সোজা রাস্তায় বাকা করে ব্রীজ নির্মাণ করা হচ্ছে। যে ভাবে কাজ চলছে এ ভাবে ব্রীজ হলে এলাকাবাসী উক্ত ব্রীজ দিয়ে চলাচলের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। তারা এলাকার জনস্বার্থ ও মাজারের সুবিধার্থে রাস্তা বরাবর সোজা করে ব্রীজটি নির্মাণের জন্য প্রশাসনের নিকট দাবি জানিয়েছে।

বিষয়টির ব্যাপারে সমন শাহ্ ফকির মাজারের খাদেম আবুল বাশার জানান, মাজারের ভক্তবৃন্দরা অনেক কষ্ট করে উক্ত ব্রীজের ব্যবস্থা করেছে। একটি মহল পবিত্র এ মাজারকে তোয়াক্কা না করে ব্রীজটি অন্যদিকে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিতু মরিয়ম জানান, মাজারের সাথে যোগাযোগের জন্যই মূলত এ ব্রীজটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ব্রীজটি নির্মাণ হলে এলাকার লোকজনও সুবিধা ভোগ করতে পারবে। এলাকাবাসী বাধাঁ দিলে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনকে বুঝিয়ে বিষয়টি সমাধান করে দেই।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আব্দুল হাই খান জানান, উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে আলোচনা সাপেক্ষে ব্রীজের কাজ শুরু করা হয়েছে। এলাকার লোকজন যদি বেশী বাড়াবাড়ি করে তাহলে স্থান পরিবর্তন করে ব্রীজটি অন্য কোথাও স্থানান্তর করা হবে। ব্রীজ নির্মাণ করার জন্য অনেক জায়গা রয়েছে।

আন্দিকুট ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক সরকার জানান, উক্ত ব্রীজ নির্মাণ নিয়ে এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে বাধাঁ দিলে   ইউএনও এবং পিআইও এসে এলাকার লোকজনকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। কিছু লোকজনের সুবিধা মতো না হওয়ায় তারা শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে তুলেছে।