ঢাকা ০৪:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুলশান অফিসে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন, বিএনপির সাক্ষাৎকার বিঘ্নিত

জাতীয় ডেস্ক:

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার তৃতীয় দিনের মতো আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে গুলশানে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে শুরু হয়েছে।

তবে গুলশান কার্যালয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ইন্টারনেটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার ফলে সাক্ষাৎকার গ্রহণে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়ছেন বিএনপি নেতারা। এ জন্য তারা সরকারের নিন্দা জানিয়েছেন।

গত রবিবার শুরু থেকেই লন্ডনে বসে স্কাইপের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।

আজ সকালে চট্টগ্রাম বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার চলছে। দুপুর আড়াইটার পর কুমিল্লা ও সিলেট বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার হবে। সাক্ষাৎকার গ্রহণে উপস্থিত আছেন দলের পার্লামেন্টারি বোর্ড। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরাই এ বোর্ডের সদস্য।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে বন্দি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে অবস্থান করায় বোর্ডের সভাপতিত্ব করছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিগত নির্বাচনগুলোতে বিএনপি চেয়ারপারসন পার্লামেন্টারি বোর্ডে সভাপতিত্ব করলেও এবারই প্রথম পার্লামেন্টারি বোর্ডে সভাপতিত্ব করছেন ফখরুল।

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘ইন্টারনেটে কোনো কাজ করা যাচ্ছে না। বিটিআরসি আমাদের গুলশান কার্যালয়ের সব ধরনের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। এতে আমাদের নির্বাচনী কার্যক্রম থমকে গেছে। কারণ নির্বাচনের অনেক কার্যক্রমই আমরা অনলাইনে সম্পন্ন করছিলাম। সেগুলো আর করতে পারছি না।’

এদিকে নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) স্কাইপে বন্ধ করে দিয়েছে আমাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নগ্ন হস্তক্ষেপ করছে। সরকার নিয়ন্ত্রিত বিটিআরসি ইন্টারভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্কাইপের সেবা বন্ধ করে দিয়ে এক ঘৃন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। ইতোমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানস্থ কার্যালয়ে ইন্টারনেট ভিত্তিক সকল যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।

রিজভী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দিন বলেছেন- বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই। তার এই বক্তব্যের পরপরই সরকার নিয়ন্ত্রিত বিটিআরসি কর্তৃক স্কাইপে বন্ধ করে দেয়াতে আবারও প্রমাণিত হলো-নির্বাচনী মাঠ আওয়ামী জোটের একচেটিয়া দখলে থাকবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নমিনেশন প্রত্যাশীদের সঙ্গে স্কাইপেতে কথা বলা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন নয়। কমিশন সচিব এ বিষয়টি নিশ্চিত করার পরও তড়িঘড়ি করে বিটিআরসি-কে দিয়ে স্কাইপে বন্ধ করে দেয়া সরকারের হিংসাত্মক ও কুরুচির পরিচায়ক। সরকার আগামী জাতীয় নির্বাচনকে নিজেদের অনুকূলে নেয়ার জন্য ক্লান্তিহীনভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে। বিএনপির নির্বাচনী প্রক্রিয়ার তৎপরতাকে বাধা প্রদান করার জন্য সরকার সবধরনের শক্তি প্রয়োগ করছে।’

রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আওয়াজ ভেসে উঠলেই সরকার মূর্ছা যায়, আর সেজন্যই দূর থেকে ভেসে আসা শব্দকেও আটকানোর জন্য উঠেপড়ে লাগে। আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী সংকীর্ণ রাজনীতির বলয় থেকে কোনদিন বেরিয়ে আসতে পারবে না। সরকার ও সরকার প্রধান ভিন্ন মত, বিরোধী দল, বিরোধী কণ্ঠস্বর নীরব করার জন্য সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। জনগণের নিরাভিমান আনুগত্যই সরকারের কাম্য। যতদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে ততদিন গণতন্ত্রের ফাঁড়া কাটবে না এবং দেশ থেকে বিপদ দূর হবে না। সরকার কর্তৃক তারেক রহমানের কণ্ঠের আওয়াজকে বাধা দেয়ার অর্থই হচ্ছে গণতন্ত্রের গলা টিপে ধরা। আর এজন্য স্কাইপে বন্ধ করা হয়েছে। আসলে সরকার বলপ্রয়োগ করেই ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে, জনগণের সমর্থন নিয়ে নয়। আমি সরকারের এই ন্যাক্কারজনক সংকীর্ণ মানসিকতার ধিক্কার জানাই এবং অবিলম্বে ইন্টারভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যম স্কাইপে খুলে দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে রাতের অন্ধকারে চলে গোমতী নদীর মাটি কাটার মহোৎসব, নির্বিকার প্রশাসন

গুলশান অফিসে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন, বিএনপির সাক্ষাৎকার বিঘ্নিত

আপডেট সময় ০৯:১০:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ নভেম্বর ২০১৮
জাতীয় ডেস্ক:

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার তৃতীয় দিনের মতো আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে গুলশানে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে শুরু হয়েছে।

তবে গুলশান কার্যালয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ইন্টারনেটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার ফলে সাক্ষাৎকার গ্রহণে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়ছেন বিএনপি নেতারা। এ জন্য তারা সরকারের নিন্দা জানিয়েছেন।

গত রবিবার শুরু থেকেই লন্ডনে বসে স্কাইপের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।

আজ সকালে চট্টগ্রাম বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার চলছে। দুপুর আড়াইটার পর কুমিল্লা ও সিলেট বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার হবে। সাক্ষাৎকার গ্রহণে উপস্থিত আছেন দলের পার্লামেন্টারি বোর্ড। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরাই এ বোর্ডের সদস্য।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে বন্দি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে অবস্থান করায় বোর্ডের সভাপতিত্ব করছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিগত নির্বাচনগুলোতে বিএনপি চেয়ারপারসন পার্লামেন্টারি বোর্ডে সভাপতিত্ব করলেও এবারই প্রথম পার্লামেন্টারি বোর্ডে সভাপতিত্ব করছেন ফখরুল।

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘ইন্টারনেটে কোনো কাজ করা যাচ্ছে না। বিটিআরসি আমাদের গুলশান কার্যালয়ের সব ধরনের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। এতে আমাদের নির্বাচনী কার্যক্রম থমকে গেছে। কারণ নির্বাচনের অনেক কার্যক্রমই আমরা অনলাইনে সম্পন্ন করছিলাম। সেগুলো আর করতে পারছি না।’

এদিকে নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) স্কাইপে বন্ধ করে দিয়েছে আমাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নগ্ন হস্তক্ষেপ করছে। সরকার নিয়ন্ত্রিত বিটিআরসি ইন্টারভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্কাইপের সেবা বন্ধ করে দিয়ে এক ঘৃন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। ইতোমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানস্থ কার্যালয়ে ইন্টারনেট ভিত্তিক সকল যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।

রিজভী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দিন বলেছেন- বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই। তার এই বক্তব্যের পরপরই সরকার নিয়ন্ত্রিত বিটিআরসি কর্তৃক স্কাইপে বন্ধ করে দেয়াতে আবারও প্রমাণিত হলো-নির্বাচনী মাঠ আওয়ামী জোটের একচেটিয়া দখলে থাকবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নমিনেশন প্রত্যাশীদের সঙ্গে স্কাইপেতে কথা বলা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন নয়। কমিশন সচিব এ বিষয়টি নিশ্চিত করার পরও তড়িঘড়ি করে বিটিআরসি-কে দিয়ে স্কাইপে বন্ধ করে দেয়া সরকারের হিংসাত্মক ও কুরুচির পরিচায়ক। সরকার আগামী জাতীয় নির্বাচনকে নিজেদের অনুকূলে নেয়ার জন্য ক্লান্তিহীনভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে। বিএনপির নির্বাচনী প্রক্রিয়ার তৎপরতাকে বাধা প্রদান করার জন্য সরকার সবধরনের শক্তি প্রয়োগ করছে।’

রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আওয়াজ ভেসে উঠলেই সরকার মূর্ছা যায়, আর সেজন্যই দূর থেকে ভেসে আসা শব্দকেও আটকানোর জন্য উঠেপড়ে লাগে। আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী সংকীর্ণ রাজনীতির বলয় থেকে কোনদিন বেরিয়ে আসতে পারবে না। সরকার ও সরকার প্রধান ভিন্ন মত, বিরোধী দল, বিরোধী কণ্ঠস্বর নীরব করার জন্য সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। জনগণের নিরাভিমান আনুগত্যই সরকারের কাম্য। যতদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে ততদিন গণতন্ত্রের ফাঁড়া কাটবে না এবং দেশ থেকে বিপদ দূর হবে না। সরকার কর্তৃক তারেক রহমানের কণ্ঠের আওয়াজকে বাধা দেয়ার অর্থই হচ্ছে গণতন্ত্রের গলা টিপে ধরা। আর এজন্য স্কাইপে বন্ধ করা হয়েছে। আসলে সরকার বলপ্রয়োগ করেই ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে, জনগণের সমর্থন নিয়ে নয়। আমি সরকারের এই ন্যাক্কারজনক সংকীর্ণ মানসিকতার ধিক্কার জানাই এবং অবিলম্বে ইন্টারভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যম স্কাইপে খুলে দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।