ঢাকা ০৬:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা বেশি নিঃসঙ্গতার শিকার হয়’

লাইফস্টাইল ডেস্ক:

কিশোর বা তরুণদের চেয়ে কিশোরী ও তরুণীদের মধ্যে একাকীত্বে ভোগার সম্ভাবনা বেশি থাকে বলে প্রকাশিত হয়েছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ‘অফিস অব ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস’ এর এক জরিপে উঠে এসেছে যে, ব্রিটেনের প্রতি দশজন তরুণের একজন একাকীত্বে ভোগেন।

গবেষণা অনুযায়ী, একাকীত্বকে ‘ব্যর্থতা’ হিসেবে ধরে নেয়া হবে বলে তরুণরা এটিকে ‘লজ্জাজনক’ বলে মনে করেন। অনেক তরুণই সামাজিক মাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন তাদের এই একাকীত্ব লুকানোর একটি পথ হিসেবে এবং তারা ভান করে যে তারা নিঃসঙ্গ বোধ করে না।

যুক্তরাজ্যের পরিসংখ্যান সংস্থার মতে, ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের ১১ শতাংশ প্রায়ই নিঃসঙ্গ বোধ করে এবং ৩৪ শতাংশ মাঝেমধ্যে নিঃসঙ্গ বোধ করে। আর একাকীত্বে ভুগতে থাকা এই তরুণদের মধ্যে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যাই বেশী।

কেন এই নিঃসঙ্গতা: কী কারণে মানুষের মধ্যে একাকীত্ব বোধ তৈরি হয়- সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয় এই গবেষণায়। গবেষণা অনুযায়ী, একাকীত্বে ভোগার অন্যতম প্রধান কারণ কিশোর ও তরুণ বয়সে বয়ঃসন্ধির সময়কালীন বিভিন্ন ঘটনা।

প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্কুলে ওঠার সময়, মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ওঠা এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সময় নিঃসঙ্গতা বোধ করার সম্ভাবনা বাড়ে। আর ছোট শহর বা গ্রামে বাস করা তরুণদের চেয়ে শহরে বেড়ে ওঠা তরুণদের নিঃসঙ্গতায় ভোগার প্রবণতা বেশী বলেও বলা হয় ঐ গবেষণায়।

এছাড়া আর্থিকভাবে অপেক্ষাকৃত অসচ্ছল তরুণদেরও একাকী বোধ করার সম্ভাবনা বেশী থাকে বলে উল্লেখ করা হয় গবেষণার প্রতিবেদনে। অসুস্থতা, পারিবারিক সমস্যা, প্রিয়জন বা কোনো আত্মীয়ের মৃত্যু বা হেনস্থার শিকার হলেও একাকীত্ব বোধ তৈরি হওয়া সম্ভব।

আর সমাজের মানুষের কাছে একাকী হিসেবে পরিচিত হতে চাওয়ার ভয়কেও একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণায়। সমাজের মানুষের কাছ নিঃসঙ্গ হিসেবে পরিচিত হওয়া বিব্রতকর একটি বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ এর ফলে মানুষ ঐ ব্যক্তিকে সামাজিকভাবে অনাকর্ষণীয় বা মানুষের অপছন্দের চরিত্র হিসেবে মনে করতে পারে।

সামাজিক মাধ্যমে অভিনয়: সামাজিক মাধ্যম যেমন প্রিয়জনের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার একটি মঞ্চ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে, তেমনি মানুষের একাকীত্ব বোধ লুকানোর একটি মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার করা হতে পারে।

গবেষণার জন্য যেসব তরুণদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশই মনে করে সামাজিক মাধ্যমে প্রকৃত বন্ধুত্ব নয়, বরং সৌজন্যমূলক বাক্যালাপ হয়ে থাকে মানুষের সাথে। যার ফলে নিজেদেরকে অন্যদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন মনে করে তরুণরা।

এবছরে একাকীত্ব নিয়ে বিবিসি পরিচালিত এক জরিপে সারা পৃথিবী থেকে ৫৫ হাজারের বেশী মানুষ অংশ নেয় এবং জরিপে অংশ নেয়া ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের প্রায় ৪০ শতাংশই ‘প্রায়শই’ বা ‘প্রতিনিয়তই’ নিঃসঙ্গ বোধ করে বলে জানায়।

ওই জরিপে উঠে আসে যে, একাকীত্ব দূর করার লক্ষ্যে ডেটিংকে সবচেয়ে অকার্যকর সমাধান বলে মনে করে তরুণরা।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

‘ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা বেশি নিঃসঙ্গতার শিকার হয়’

আপডেট সময় ০১:৫৮:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ডিসেম্বর ২০১৮
লাইফস্টাইল ডেস্ক:

কিশোর বা তরুণদের চেয়ে কিশোরী ও তরুণীদের মধ্যে একাকীত্বে ভোগার সম্ভাবনা বেশি থাকে বলে প্রকাশিত হয়েছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ‘অফিস অব ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস’ এর এক জরিপে উঠে এসেছে যে, ব্রিটেনের প্রতি দশজন তরুণের একজন একাকীত্বে ভোগেন।

গবেষণা অনুযায়ী, একাকীত্বকে ‘ব্যর্থতা’ হিসেবে ধরে নেয়া হবে বলে তরুণরা এটিকে ‘লজ্জাজনক’ বলে মনে করেন। অনেক তরুণই সামাজিক মাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন তাদের এই একাকীত্ব লুকানোর একটি পথ হিসেবে এবং তারা ভান করে যে তারা নিঃসঙ্গ বোধ করে না।

যুক্তরাজ্যের পরিসংখ্যান সংস্থার মতে, ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের ১১ শতাংশ প্রায়ই নিঃসঙ্গ বোধ করে এবং ৩৪ শতাংশ মাঝেমধ্যে নিঃসঙ্গ বোধ করে। আর একাকীত্বে ভুগতে থাকা এই তরুণদের মধ্যে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যাই বেশী।

কেন এই নিঃসঙ্গতা: কী কারণে মানুষের মধ্যে একাকীত্ব বোধ তৈরি হয়- সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয় এই গবেষণায়। গবেষণা অনুযায়ী, একাকীত্বে ভোগার অন্যতম প্রধান কারণ কিশোর ও তরুণ বয়সে বয়ঃসন্ধির সময়কালীন বিভিন্ন ঘটনা।

প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্কুলে ওঠার সময়, মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ওঠা এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সময় নিঃসঙ্গতা বোধ করার সম্ভাবনা বাড়ে। আর ছোট শহর বা গ্রামে বাস করা তরুণদের চেয়ে শহরে বেড়ে ওঠা তরুণদের নিঃসঙ্গতায় ভোগার প্রবণতা বেশী বলেও বলা হয় ঐ গবেষণায়।

এছাড়া আর্থিকভাবে অপেক্ষাকৃত অসচ্ছল তরুণদেরও একাকী বোধ করার সম্ভাবনা বেশী থাকে বলে উল্লেখ করা হয় গবেষণার প্রতিবেদনে। অসুস্থতা, পারিবারিক সমস্যা, প্রিয়জন বা কোনো আত্মীয়ের মৃত্যু বা হেনস্থার শিকার হলেও একাকীত্ব বোধ তৈরি হওয়া সম্ভব।

আর সমাজের মানুষের কাছে একাকী হিসেবে পরিচিত হতে চাওয়ার ভয়কেও একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণায়। সমাজের মানুষের কাছ নিঃসঙ্গ হিসেবে পরিচিত হওয়া বিব্রতকর একটি বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ এর ফলে মানুষ ঐ ব্যক্তিকে সামাজিকভাবে অনাকর্ষণীয় বা মানুষের অপছন্দের চরিত্র হিসেবে মনে করতে পারে।

সামাজিক মাধ্যমে অভিনয়: সামাজিক মাধ্যম যেমন প্রিয়জনের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার একটি মঞ্চ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে, তেমনি মানুষের একাকীত্ব বোধ লুকানোর একটি মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার করা হতে পারে।

গবেষণার জন্য যেসব তরুণদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশই মনে করে সামাজিক মাধ্যমে প্রকৃত বন্ধুত্ব নয়, বরং সৌজন্যমূলক বাক্যালাপ হয়ে থাকে মানুষের সাথে। যার ফলে নিজেদেরকে অন্যদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন মনে করে তরুণরা।

এবছরে একাকীত্ব নিয়ে বিবিসি পরিচালিত এক জরিপে সারা পৃথিবী থেকে ৫৫ হাজারের বেশী মানুষ অংশ নেয় এবং জরিপে অংশ নেয়া ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের প্রায় ৪০ শতাংশই ‘প্রায়শই’ বা ‘প্রতিনিয়তই’ নিঃসঙ্গ বোধ করে বলে জানায়।

ওই জরিপে উঠে আসে যে, একাকীত্ব দূর করার লক্ষ্যে ডেটিংকে সবচেয়ে অকার্যকর সমাধান বলে মনে করে তরুণরা।