ঢাকা ০৭:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রানবন্যার ম্যাচে সিলেটকে হারাল রংপুর

খেলাধূলা ডেস্কঃ

পেন্ডুলামের মত দুলছিল ম্যাচের ভাগ্য। কখনো মনে হচ্ছিল রংপুর রাইডার্স জিতবে, কখনোবা সিলেটে সিক্সার্সের সম্ভাবনা জোড়ালো হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত রানবন্যার ম্যাটিতে বিজয় কেতন উড়াল রাইডার্স। শনিবার সিক্সার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়ে বিপিএলে তৃতীয় জয়ের দেখা পেয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা।

ঘরের মাঠে আগে ব্যাট করতে নেমে নিধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৪ রান সংগ্রহ করে সিলেট। জবাবে ১৯.৩ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় রংপুর।

শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য ২৪ রান প্রয়োজন ছিল রংপুরের। মেহেদী রানার করা ১৯তম ওভারে ১৯ রান তুলে নেন ফরহাদ রেজা আর মাশরাফি। ম্যাচটা একেবারে রংপুরের হাতের মুঠোয় চলে আসে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন ছিল ৫ রান। অলক কাপালির প্রথম বলে লেগবাই থেকে আসে এক রান। দ্বিতীয় বল ডট। তৃতীয় বলে স্ট্রেইট ব্যাটে চার মেরে রংপুরের জয় নিশ্চিত করেন রেজা। মাত্র ৬ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।

১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ক্রিস গেইলকে বসে রাইডার্স। এরপর দ্বিতীয় ওভারে তাসকিন আহমেদের বলে সরাসরি উইকেটরক্ষক জাকের আলীর কাছে ক্যাচ দেন রুশো। জাকের আলী ক্যাচটি নিতে পারেননি। জীবন পেয়ে বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন রুশো। আলেক্স হেলসের (৩৩) সঙ্গে ৬৩ ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে ৬৭ রানের জুটি গড়েন রুশো। মাত্র ৩১ বলে তুলে নেন বিপিএলের চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি।

অবশেষে দলীয় ১৩০ রানে সেই তাসকিনের বলেই আউট হন রুশো।  ফেরার আগে নয় চার দুই ছক্কায় ৩৫ বলে তিনি করেন ৬১ রান। রুশোর সঙ্গে সমান তালে খেলছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স (২১ বলে ৩৪)। একই ওভারের শেষ বলে তাকেও সাজঘরে পাঠান তাসকিন, দারুণভাবে ম্যাচে ফেরে সিক্সার্স।

১৮তম ওভারে বল করতে এসে আরও দুই উইকেট তুলে নেন তাসকিন।  চতুর্থ বলে মিঠুন আলী আর ষষ্ঠ বলে নাহিদুলকে ফিরিয়ে সিক্সার্সের জয়ের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখেন তিনি। কিন্তু রানার এক ওভারেই সব শেষ হয়ে গেছে।

ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন রুশো। অথচ সেটি পাওয়ার কথা ছিল সাব্বিরের। ওপেনিংয়ে ওঠেছিলেন, খেলেছেন শেষ ওভার পর্যন্ত। মারকুটে স্বভাবের সাব্বিরকে যে রূপে দেখতে চায়  দেশের ক্রিকেটভক্তরা, অনেকদিন বাদে সে রূপেই দেখা গেল। শফিউল ইসলামের বলে আউট হওয়ার আগে মাত্র ৫১ বল মোকাবেলায় করেছেন ৮৫ রান। পাঁচ বাউন্ডারির সঙ্গে ছয় ওভার বাউন্ডারি। ২০১৬ বিপিএলে রাজশাহী কিংসের জার্সিতে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। সে স্মৃতিই যেন ফিরে এসেছিল সিলেটে।

সিলেটের বড় সংগ্রহে অবদান রাখেন নিকোলাস পুরানও। মাত্র ২৭ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন এই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান। চার বাউন্ডারি আর তিন ওভার বাউন্ডারিতে নিজের ইনিংসটি সাজান তিনি। আগের দুই ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করা ডেভিড ওয়ার্নার সুবিধা করে ওঠতে পারেননি এবার। ২১ বলে ১৯ রান করে রংপুর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয় অজি ওপেনার। এর আগে দলীয় ১৩ রানে লিটন দাসকে (১১) ফিরিয়ে সিক্সার্স শিবিরে শুরুর ধাক্কাটা দিয়েছিলেন এই মাশরাফিই। ৫২ রানের মাথায় দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আফিফ হোসেন (১৯) ফিরে যান রান আউট হয়ে। এরপর ওয়ার্নারের সঙ্গে ৫১ ও পুরানের সঙ্গে ৮২ রানের জুটি গড়ে সিক্সার্সকে ১৯৪ রানের বড় সংগ্রহ এনে দেন সাব্বির।

বল হাতে রংপুরের হয়ে ৩১ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট নেন অধিনায়ক মাশরাফি। অন্য সবাই রান বিলিয়েছেন দেদারসে। সবচেয়ে বেশি মার খেয়েছেন ফরহাদ রেজা। ৩ ওভারেই দিয়েছেন ৩৫ রান। ক্রিস গেইলও কম যাননি। ৩ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৩৪।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ: স্বাগত জানাতে মুরাদনগরে ব্যাপক প্রস্ততি

রানবন্যার ম্যাচে সিলেটকে হারাল রংপুর

আপডেট সময় ০১:১৫:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০১৯
খেলাধূলা ডেস্কঃ

পেন্ডুলামের মত দুলছিল ম্যাচের ভাগ্য। কখনো মনে হচ্ছিল রংপুর রাইডার্স জিতবে, কখনোবা সিলেটে সিক্সার্সের সম্ভাবনা জোড়ালো হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত রানবন্যার ম্যাটিতে বিজয় কেতন উড়াল রাইডার্স। শনিবার সিক্সার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়ে বিপিএলে তৃতীয় জয়ের দেখা পেয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা।

ঘরের মাঠে আগে ব্যাট করতে নেমে নিধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৪ রান সংগ্রহ করে সিলেট। জবাবে ১৯.৩ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় রংপুর।

শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য ২৪ রান প্রয়োজন ছিল রংপুরের। মেহেদী রানার করা ১৯তম ওভারে ১৯ রান তুলে নেন ফরহাদ রেজা আর মাশরাফি। ম্যাচটা একেবারে রংপুরের হাতের মুঠোয় চলে আসে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন ছিল ৫ রান। অলক কাপালির প্রথম বলে লেগবাই থেকে আসে এক রান। দ্বিতীয় বল ডট। তৃতীয় বলে স্ট্রেইট ব্যাটে চার মেরে রংপুরের জয় নিশ্চিত করেন রেজা। মাত্র ৬ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।

১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ক্রিস গেইলকে বসে রাইডার্স। এরপর দ্বিতীয় ওভারে তাসকিন আহমেদের বলে সরাসরি উইকেটরক্ষক জাকের আলীর কাছে ক্যাচ দেন রুশো। জাকের আলী ক্যাচটি নিতে পারেননি। জীবন পেয়ে বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন রুশো। আলেক্স হেলসের (৩৩) সঙ্গে ৬৩ ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে ৬৭ রানের জুটি গড়েন রুশো। মাত্র ৩১ বলে তুলে নেন বিপিএলের চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি।

অবশেষে দলীয় ১৩০ রানে সেই তাসকিনের বলেই আউট হন রুশো।  ফেরার আগে নয় চার দুই ছক্কায় ৩৫ বলে তিনি করেন ৬১ রান। রুশোর সঙ্গে সমান তালে খেলছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স (২১ বলে ৩৪)। একই ওভারের শেষ বলে তাকেও সাজঘরে পাঠান তাসকিন, দারুণভাবে ম্যাচে ফেরে সিক্সার্স।

১৮তম ওভারে বল করতে এসে আরও দুই উইকেট তুলে নেন তাসকিন।  চতুর্থ বলে মিঠুন আলী আর ষষ্ঠ বলে নাহিদুলকে ফিরিয়ে সিক্সার্সের জয়ের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখেন তিনি। কিন্তু রানার এক ওভারেই সব শেষ হয়ে গেছে।

ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন রুশো। অথচ সেটি পাওয়ার কথা ছিল সাব্বিরের। ওপেনিংয়ে ওঠেছিলেন, খেলেছেন শেষ ওভার পর্যন্ত। মারকুটে স্বভাবের সাব্বিরকে যে রূপে দেখতে চায়  দেশের ক্রিকেটভক্তরা, অনেকদিন বাদে সে রূপেই দেখা গেল। শফিউল ইসলামের বলে আউট হওয়ার আগে মাত্র ৫১ বল মোকাবেলায় করেছেন ৮৫ রান। পাঁচ বাউন্ডারির সঙ্গে ছয় ওভার বাউন্ডারি। ২০১৬ বিপিএলে রাজশাহী কিংসের জার্সিতে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। সে স্মৃতিই যেন ফিরে এসেছিল সিলেটে।

সিলেটের বড় সংগ্রহে অবদান রাখেন নিকোলাস পুরানও। মাত্র ২৭ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন এই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান। চার বাউন্ডারি আর তিন ওভার বাউন্ডারিতে নিজের ইনিংসটি সাজান তিনি। আগের দুই ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করা ডেভিড ওয়ার্নার সুবিধা করে ওঠতে পারেননি এবার। ২১ বলে ১৯ রান করে রংপুর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয় অজি ওপেনার। এর আগে দলীয় ১৩ রানে লিটন দাসকে (১১) ফিরিয়ে সিক্সার্স শিবিরে শুরুর ধাক্কাটা দিয়েছিলেন এই মাশরাফিই। ৫২ রানের মাথায় দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আফিফ হোসেন (১৯) ফিরে যান রান আউট হয়ে। এরপর ওয়ার্নারের সঙ্গে ৫১ ও পুরানের সঙ্গে ৮২ রানের জুটি গড়ে সিক্সার্সকে ১৯৪ রানের বড় সংগ্রহ এনে দেন সাব্বির।

বল হাতে রংপুরের হয়ে ৩১ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট নেন অধিনায়ক মাশরাফি। অন্য সবাই রান বিলিয়েছেন দেদারসে। সবচেয়ে বেশি মার খেয়েছেন ফরহাদ রেজা। ৩ ওভারেই দিয়েছেন ৩৫ রান। ক্রিস গেইলও কম যাননি। ৩ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৩৪।