ধর্ম ও জীবন ডেস্কঃ
অবশেষে টঙ্গীর ময়দানে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন নিয়ে বিরোধের অবসান হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে দুই পক্ষই একসঙ্গে ইজতেমা করার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে।
তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ মিটে গেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। দুই পক্ষই ফেব্রুয়ারিতে একসঙ্গে বিশ্ব ইজতেমা করতে সম্মত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সচিবালয়ে তাবলীগ জামাতের বিবদমান দু’পক্ষকে নিয়ে এক বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী যৌথভাবে জানিয়েছেন যে, এবার ইজতেমা একটাই হবে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ সভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলেন, ‘আজকের সভার পর ইজতেমা একটাই হবে। কোনো বিভক্তি হবেনা। তাবলীগ জামাতের দুই গ্রুপের সঙ্গে এটা বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন যে, যাকে নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়েছিলো ভারতের মাওলানা সাদ কান্দালভী এবারের ইজতেমায় আসছেন না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে একসঙ্গে ইজতেমা হবে। বৃহস্পতিবার ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দুই পক্ষের দুইজন প্রতিনিধি বসে ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করবেন।
বৈঠকে মাওলানা সাদ আহমাদ কান্ধলভী ও মাওলানা জোবায়ের আহমেদের পক্ষের তাবলিগ জামাত নেতারা উপস্থিত ছিলেন। দুপক্ষে নেতৃত্ব দেন ওয়াসিকুল ইসলাম ও মাওলানা জোবায়ের। উভয়পক্ষেই ১৬-১৭ জন করে সদস্য উপস্থিত ছিলেন। দুই পক্ষের বিরোধ মীমাংসায় সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন করেন কাকরাইল মসজিদের ইমাম মাওলানা মাজহারুল ইসলাম।
এ ছাড়া সরকারের পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ, স্বরাষ্ট্র সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, ধর্ম সচিব মো. আনিসুর রহমান, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের প্রধান বেনজির আহমেদ, আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত সোমবার ইজতেমার আয়োজন নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক হয়। তবে ওই বৈঠকে সাদপন্থী অনুসারীরা অংশ নিলেও সাদবিরোধী অংশের মুরব্বিরা যোগ দেননি।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের বিশ্ব ইজতেমার পর তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষ আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করে। নিজামুদ্দীন মার্কাজপন্থী মাওলানা সাদের অনুসারীরা ১১, ১২ ও ১৩ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করেন। এর বিরোধিতা করে ১৮, ১৯ ও ২০ জানুয়ারি ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করে মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা। এ নিয়ে সারা বছরই উত্তেজনা থাকে। গত ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে এ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়। সংঘর্ষে দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হন।