ধর্ম ও জীবন ডেস্কঃ
অবশেষে তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হবে তিন দিনের এই ইজতেমা। গত কয়েক বছর ধরে দুই পর্বে হলেও এবার এক পর্বেই হবে ইজতেমা। প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে ইজতেমা হলেও এবার আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে পিছিয়ে যায়।
বৈঠকে এক পক্ষের সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, খান সাহাবুদ্দিন নাসিম এবং অপর পক্ষের মাওলানা জুবায়ের, মাওলানা ওমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন।
তাবলিগ জামাত নিয়ে বছরদুয়েক ধরে বিরোধ চলছে। দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভির কিছু বক্তব্য বিতর্কের সৃষ্টি করে। তাকে কেন্দ্র করে তাবলিগ সংশ্লিষ্টরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। গত বছর ইজতেমায় মাওলানা সাদ এলেও বিরোধী পক্ষের বিক্ষোভের কারণে টঙ্গীর মাঠে যেতে পারেননি। গত ১ ডিসেম্বর এবারের ইজতেমার আয়োজনকে কেন্দ্র করে টঙ্গীর মাঠে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে দুজন নিহত এবং কয়েকশ আহত হন।
প্রতি বছর জানুয়ারির শুরুতে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হলেও এবার জাতীয় নির্বাচন এবং নিজেদের দ্বন্দ্বের কারণে তা পিছিয়ে যায়। নতুনভাবে যাত্রা শুরুর পর সরকার এই বিরোধ মেটাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়। দুই পক্ষকে নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকের পর গত বুধবার সিদ্ধান্ত হয়, দুই পক্ষ একসঙ্গে ইজতেমা করবে এবং বিতর্কিত মাওলানা সাদ এবারের ইজতেমায় আসবেন না।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবত ইজতেমা নিয়ে বিশৃঙ্খলা চলছে। এটাকে প্রশমিত করার জন্য এতদিন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছি। বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সবাইকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। বুধবারের বৈঠকে আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করার ফলে দুই গ্রুপকে একত্রে বসাতে সক্ষম হয়েছি। ওই বৈঠকে শেষ পর্যন্ত আমরা ঐক্যমতে পৌঁছাই, এবার বিশ্ব ইজতেমা একসঙ্গেই হবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কিছুই চাপিয়ে দিইনি। আমরা শুধু একটা কথাই বলেছি, তাবলিগ জামাতের এত বড় কাজ যেন একসাথে করা হয়, সারাদেশবাসী যেন খুশি হয়। উনারা রাজি হয়েছেন। ’
শেখ আবদুল্লাহ বলেন, ‘এই তিন দিন একসাথেই বিশ^ ইজতেমা সুন্দরভাবে হবে। আমরা বিশ্ববাসীকে আবেদন করবো, আপনারা জেনে খুশি হবেন, বাংলাদেশের তাবলিগ জামাত নিয়ে এখন আর দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নেই। আমরা এদেশে শান্তিপূর্ণভাবে করার প্রয়াস নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যদি এভাবে আগ্রহ প্রকাশ না করতেন এবং উনি যদি উদ্যোগ না নিতেন তাহলে এ কাজটা সম্পন্ন হতো না। প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপের ফলেই আমরা এ কাজটা সম্পন্ন করতে পেরেছি।’
গত কয়েক বছর ধরে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা হলেও এবার এক পর্বেই হবে। ইজতেমার আয়োজনে সরকারের পক্ষ থেকে যথাসময়ে সব ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
ঐক্যবদ্ধভাবে ইজতেমা করার জন্য দু’পক্ষের কিছু শর্ত ছিল, সেগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনোটা মিটমাট না হলে ঐক্যবদ্ধ হলো কীভাবে। ওনাদের সব প্রশ্নের সন্তোষজনক সমাধান করতে পারছি বলেই তাদের আমরা সন্তুষ্ট করতে পেরেছি। এক হয়ে (ইজতেমা) করছেন মানেই আমরা তাদের অল্প হলেও সন্তুষ্ট করতে পেরেছি। একদিনে সবটুকু হয় না।’ তিনি বলেন, ‘লেট আস হোপ ফর দ্য বেস্ট। ভবিষ্যতে আরও সময় পাব সেই সময়ে চেষ্টা করব যেটুকু বাকি আছে সবটুকু সমাধান করে চিরদিনের জন্য দ্বন্দ্ব দূর করার।’