ঢাকা ১১:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ রাতের আকাশে দেখা যাবে ‘সুপারমুন’

তথ্যপ্রযোক্তি ডেস্কঃ

চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙ্গেছে, উছলে পড়ে আলো’ বাঁধভাঙ্গা চাঁদের হাসি দেখে যারা আপ্লুত-বিমোহিত হন তাদের জন্য আজ মঙ্গলবার রাতটি হতে যাচ্ছে স্মৃতির পটে অক্ষয় করে রাখার মতো।আজ সত্যি সত্যি চাঁদের হাসি বাঁধ ভাঙবে; উছলে পড়বে আলো। বিরল এক মহাজাগতিক দৃশ্য অবলোকন করতে পারবে জগত্বাসী। মহাজাগতিক নিয়ম মেনে আজ চাঁদ চলে আসবে পৃথিবীর খুব কাছাকাছি। চাঁদকে দেখা যাবে তার স্বাভাবিক আকৃতি থেকে কয়েকগুণ বড়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আজ চাঁদ ওঠার কিছুক্ষণ পর পরই সুপারমুন দেখার সবচেয়ে সেরা সময়। আজকের সুপারমুনকে ‘পূর্ণ বরফ চাঁদ’ নাম দেয়া হয়েছে।কারন এখন পৃথিবীর বেশিরভাগ অঞ্চলে তুষারপাতের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এমন নামকরন।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আজ প্রায় ১৪ শতাংশ বড় দেখাবে চাঁদকে। বেলা সাড়ে তিনটা থেকে দেখা পাওয়া যাবে এ সুপারমুনের। এ বছরে বাকি তিন সুপারমুনের দেখা মিলবে যথাক্রমে আগামী ১২ জুলাই, ১০ আগস্ট ও ৯ সেপ্টেম্বর। আর এদের মাঝে শুধু আগস্ট মাসেই চাঁদ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে চলে আসবে।

উপবৃত্তাকার কক্ষপথে পৃথিবী থেকে চাঁদের এই নিকটতম অবস্থানকে অনুভূ বা পেরিজি বলা হয়। এসময় চাঁদ পৃথিবী থেকে থেকে ২ লাখ ২১ হাজার ৭৩৪ মাইল (৩ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটারেরও কম) দূরত্বে অবস্থান করবে। পৃথিবী থেকে চাঁদের গড় দূরত্ব ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪০২ কিলোমিটার। সুপার মুনের ঔজ্জল্য থাকবে স্বাভাবিকের চেয়ে ১২ দশমিক ৫ ভাগ থেকে ১৪ দশমিক ১ ভাগ বেশি।

বিজ্ঞান সংগঠন অনুসন্ধিত্সু চক্র জানায়, ‘অনুভূ’ সময়ের কাছাকাছি সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ প্রায় একটি সরল রেখায় অবস্থান করবে, সেই জন্য তখনই পূর্ণচন্দ্র হবে। দৃশ্যমান চাঁদের চাইতে বড় ও উজ্জ্বল দেখাবে। গবেষকরা চাঁদের এই অবস্থাকে বলেন অনুভূ পূর্ণচন্দ্র বা পেরিজি ফুলমুন। নাসা’র মতে পৃথিবীর সাথে চাঁদের দূরত্ব অনুসারে ‘সুপারমুন’ কতটকু বড় দেখাবে সেটা নির্ভর করে। যেমন সুপারমুনের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে আমরা যে চাঁদকে দেখি, তার চেয়ে এই চাঁদ দেখতে হবে প্রায় ১৪ ভাগ বড় ও উজ্জ্বল্য হবে ৩০ ভাগ বেশি।

চাঁদের এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগের জন্য পৃথিবীবাসী যেমন প্রহর গুনছেন, তেমনি রয়েছে ‘সুপারমুন’ আতংকও। চাঁদ পৃথিবীর কাছে আসলে প্রতিবারই পৃথিবীতে কোন না কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে। প্রবল জোয়ারের টানে অনেক সময় ডুবে যায় জাহাজ।

২০১১ সালের ১৯ মার্চ ‘সুপারমুন’ রাতে ইংল্যান্ডের সোলেন্ট সাগরে ভাসমান ৫টি বড় জাহাজ কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সাগরের অতল গহ্বরে তলিয়ে যায়।

আগামী ২০২৬ সালের আগে আর এমন ঘটনা ঘটবে না।শনিবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় আমেরিকান বিজনেস ম্যাগাজিন ‘ফোর্বস’। এতে বলা হয়, আমেরিকা থেকে আজ ভোরের একটু আগে এবং ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে সূর্যাস্তের পর সুপারমুন দেখা যাবে।যদি কেউ সুপারমুন দেখতে চায়, তবে আজ সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। কিন্তু যদি কেউ এদিন সুপারমুন দেখতে ব্যর্থ হয়, তবে আগামী সাত বছরের আগে আর দেখতে পারবে না।

টাইম অ্যন্ড ডেট ডটকমের মতে, সুপারমুন জ্যোতির্বিদ্যা-সংক্রান্ত টার্ম নয়। ১৯৭৯ সালে জ্যোতির্বেত্তা রিচার্ড নোলে প্রথমবারের মতো এটি ব্যবহার করেন। পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি আসা চাঁদকে ‘নতুন বা পূর্ণচাঁদ’ বলে সংজ্ঞায়িত করেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার যে চাঁদটি আকাশে উঠবে তা ২০১৯ সালের দ্বিতীয় সুপারমুন। এর আগে ২১ জানুয়ারি চলতি বছরের প্রথম সুপারমুন দেখা গিয়েছিল। ২০ থেকে ২১ জানুয়ারির ওই চাঁদটিকে বলা হয়েছে ব্লাড ওলফ সুপারমুন। তা ছিল বেশ রক্তাভ, উজ্জ্বল। আজকের সুপারমুনটি রক্তাভ না হলেও তা হবে খুবই উজ্জ্বল।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

আজ রাতের আকাশে দেখা যাবে ‘সুপারমুন’

আপডেট সময় ০১:৩১:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
তথ্যপ্রযোক্তি ডেস্কঃ

চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙ্গেছে, উছলে পড়ে আলো’ বাঁধভাঙ্গা চাঁদের হাসি দেখে যারা আপ্লুত-বিমোহিত হন তাদের জন্য আজ মঙ্গলবার রাতটি হতে যাচ্ছে স্মৃতির পটে অক্ষয় করে রাখার মতো।আজ সত্যি সত্যি চাঁদের হাসি বাঁধ ভাঙবে; উছলে পড়বে আলো। বিরল এক মহাজাগতিক দৃশ্য অবলোকন করতে পারবে জগত্বাসী। মহাজাগতিক নিয়ম মেনে আজ চাঁদ চলে আসবে পৃথিবীর খুব কাছাকাছি। চাঁদকে দেখা যাবে তার স্বাভাবিক আকৃতি থেকে কয়েকগুণ বড়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আজ চাঁদ ওঠার কিছুক্ষণ পর পরই সুপারমুন দেখার সবচেয়ে সেরা সময়। আজকের সুপারমুনকে ‘পূর্ণ বরফ চাঁদ’ নাম দেয়া হয়েছে।কারন এখন পৃথিবীর বেশিরভাগ অঞ্চলে তুষারপাতের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এমন নামকরন।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আজ প্রায় ১৪ শতাংশ বড় দেখাবে চাঁদকে। বেলা সাড়ে তিনটা থেকে দেখা পাওয়া যাবে এ সুপারমুনের। এ বছরে বাকি তিন সুপারমুনের দেখা মিলবে যথাক্রমে আগামী ১২ জুলাই, ১০ আগস্ট ও ৯ সেপ্টেম্বর। আর এদের মাঝে শুধু আগস্ট মাসেই চাঁদ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে চলে আসবে।

উপবৃত্তাকার কক্ষপথে পৃথিবী থেকে চাঁদের এই নিকটতম অবস্থানকে অনুভূ বা পেরিজি বলা হয়। এসময় চাঁদ পৃথিবী থেকে থেকে ২ লাখ ২১ হাজার ৭৩৪ মাইল (৩ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটারেরও কম) দূরত্বে অবস্থান করবে। পৃথিবী থেকে চাঁদের গড় দূরত্ব ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪০২ কিলোমিটার। সুপার মুনের ঔজ্জল্য থাকবে স্বাভাবিকের চেয়ে ১২ দশমিক ৫ ভাগ থেকে ১৪ দশমিক ১ ভাগ বেশি।

বিজ্ঞান সংগঠন অনুসন্ধিত্সু চক্র জানায়, ‘অনুভূ’ সময়ের কাছাকাছি সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ প্রায় একটি সরল রেখায় অবস্থান করবে, সেই জন্য তখনই পূর্ণচন্দ্র হবে। দৃশ্যমান চাঁদের চাইতে বড় ও উজ্জ্বল দেখাবে। গবেষকরা চাঁদের এই অবস্থাকে বলেন অনুভূ পূর্ণচন্দ্র বা পেরিজি ফুলমুন। নাসা’র মতে পৃথিবীর সাথে চাঁদের দূরত্ব অনুসারে ‘সুপারমুন’ কতটকু বড় দেখাবে সেটা নির্ভর করে। যেমন সুপারমুনের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে আমরা যে চাঁদকে দেখি, তার চেয়ে এই চাঁদ দেখতে হবে প্রায় ১৪ ভাগ বড় ও উজ্জ্বল্য হবে ৩০ ভাগ বেশি।

চাঁদের এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগের জন্য পৃথিবীবাসী যেমন প্রহর গুনছেন, তেমনি রয়েছে ‘সুপারমুন’ আতংকও। চাঁদ পৃথিবীর কাছে আসলে প্রতিবারই পৃথিবীতে কোন না কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে। প্রবল জোয়ারের টানে অনেক সময় ডুবে যায় জাহাজ।

২০১১ সালের ১৯ মার্চ ‘সুপারমুন’ রাতে ইংল্যান্ডের সোলেন্ট সাগরে ভাসমান ৫টি বড় জাহাজ কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সাগরের অতল গহ্বরে তলিয়ে যায়।

আগামী ২০২৬ সালের আগে আর এমন ঘটনা ঘটবে না।শনিবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় আমেরিকান বিজনেস ম্যাগাজিন ‘ফোর্বস’। এতে বলা হয়, আমেরিকা থেকে আজ ভোরের একটু আগে এবং ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে সূর্যাস্তের পর সুপারমুন দেখা যাবে।যদি কেউ সুপারমুন দেখতে চায়, তবে আজ সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। কিন্তু যদি কেউ এদিন সুপারমুন দেখতে ব্যর্থ হয়, তবে আগামী সাত বছরের আগে আর দেখতে পারবে না।

টাইম অ্যন্ড ডেট ডটকমের মতে, সুপারমুন জ্যোতির্বিদ্যা-সংক্রান্ত টার্ম নয়। ১৯৭৯ সালে জ্যোতির্বেত্তা রিচার্ড নোলে প্রথমবারের মতো এটি ব্যবহার করেন। পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি আসা চাঁদকে ‘নতুন বা পূর্ণচাঁদ’ বলে সংজ্ঞায়িত করেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার যে চাঁদটি আকাশে উঠবে তা ২০১৯ সালের দ্বিতীয় সুপারমুন। এর আগে ২১ জানুয়ারি চলতি বছরের প্রথম সুপারমুন দেখা গিয়েছিল। ২০ থেকে ২১ জানুয়ারির ওই চাঁদটিকে বলা হয়েছে ব্লাড ওলফ সুপারমুন। তা ছিল বেশ রক্তাভ, উজ্জ্বল। আজকের সুপারমুনটি রক্তাভ না হলেও তা হবে খুবই উজ্জ্বল।