ঢাকা ০৬:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চান্দিনায় ট্রাক্টর চাপায় স্কুল ছাত্রীর মৃত্যুতে সড়ক অবরোধ, চালক আটক

চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার চান্দিনায় গ্যাস লাইন নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর চাপায় মাহমুদা আক্তার ইয়াসমিন (১৫) নামে এক স্কুল ছাত্রী নিহত হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা।

নিহত স্কুল ছাত্রী মাহমুদা আক্তার ইয়াসমিন চান্দিনা উপজেলার বাতাঘাসী ইউনিয়নের নাজিরপুর গ্রামের মনির হোসেন এর মেয়ে। সে কুটুম্বপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মনির হোসেন জানান, আমাদের বিদ্যালয়ের সামনের কাঁচা সড়ক দিয়ে গ্যাস লাইন নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর চলাচল করে। ২৬ মার্চ উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসে। সকাল ৯টার দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আমি দাঁড়ানো ছিলাম আর ছাত্রীরা বিদ্যালয়ের দিকে আসছিল। ১৭-১৮ বছরের একটি ট্রাক্টর চালক মেয়েদেরকে দেখে জোরে হর্ন চেপে ট্রাক্টরটি রাস্তায় এদিক-সেদিক ঘুরাচ্ছিল। এসময় ট্রাক্টরের সাথে ধাক্কা লেগে একজন পানিতে পড়ে যায় আরেকজন চাকায় পিষ্ট হয়। এদিকে, ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা স্কুলের পাশের মহাসড়ক অবরোধ করে। পরে হাইওয়ে পুলিশ এসে লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় পুলিশের লাঠির আঘাতে ইয়াছিন (১৬) নামে এক শিক্ষার্থী আহত হয়। তার মাথার পেছনের অংশ ফেটে গেলে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আহত শিক্ষার্থী ইয়াছিন জানায়, গ্যাস কোম্পানীর মতো দায়িত্বশীল একটি প্রতিষ্ঠানে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ট্রাক্টর চালককের চাকরি দেওয়ার প্রতিবাদে এবং চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আমরা মহাসড়কে অবস্থান নেই। এ সময় পুলিশ এসে আমাদের এলোপাথারী মারধর করে। এতে পুলিশের এক সদস্য লাঠি দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে।

এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ ইলিয়টগঞ্জ ফাঁড়ির ইন-চার্জ (ইন্সপেক্টর) মনিরুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনাটি মহাসড়কে হয়নি। আঞ্চলিক সড়কে হয়েছে। আর শিক্ষার্থীরা এসে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় শিক্ষার্থীদের সরে যেতে অনেকবার বলা হলেও তারা কথা শুনেনি। এখানে হাইওয়ে ও থানা পুলিশ ছিল। পুলিশের কোন সদস্য এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন ঘটনা করেছে সেটা আমার জানা নেই।

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দাউকান্দি সার্কেল) মহিদুল ইসলাম জানান, আমরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছি। নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্য, স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। গাড়ি ও চালক আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে, দুপুর সোয়া ১২টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর, জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম, চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এসএম জাকারিয়া।

এ সময় গ্যাস লাইন নির্মাণ কোম্পানী চিটাগং-ফেনী-বাখরাবাদ গ্যাস লাইন প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল যোবায়ের জানান, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার এর উপস্থিতিতে আমরা নিহতের পরিবারকে ৬ লাখ টাকার চেক দিয়েছি। ভবিষ্যতে আমরা দক্ষ ও লাইসেন্স প্রাপ্ত চালক নিয়োগ দেব। এছাড়া জেলা প্রশাসকের তহবিল থেকে নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

চান্দিনায় ট্রাক্টর চাপায় স্কুল ছাত্রীর মৃত্যুতে সড়ক অবরোধ, চালক আটক

আপডেট সময় ১২:৪৫:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০১৯
চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার চান্দিনায় গ্যাস লাইন নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর চাপায় মাহমুদা আক্তার ইয়াসমিন (১৫) নামে এক স্কুল ছাত্রী নিহত হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা।

নিহত স্কুল ছাত্রী মাহমুদা আক্তার ইয়াসমিন চান্দিনা উপজেলার বাতাঘাসী ইউনিয়নের নাজিরপুর গ্রামের মনির হোসেন এর মেয়ে। সে কুটুম্বপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মনির হোসেন জানান, আমাদের বিদ্যালয়ের সামনের কাঁচা সড়ক দিয়ে গ্যাস লাইন নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর চলাচল করে। ২৬ মার্চ উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসে। সকাল ৯টার দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আমি দাঁড়ানো ছিলাম আর ছাত্রীরা বিদ্যালয়ের দিকে আসছিল। ১৭-১৮ বছরের একটি ট্রাক্টর চালক মেয়েদেরকে দেখে জোরে হর্ন চেপে ট্রাক্টরটি রাস্তায় এদিক-সেদিক ঘুরাচ্ছিল। এসময় ট্রাক্টরের সাথে ধাক্কা লেগে একজন পানিতে পড়ে যায় আরেকজন চাকায় পিষ্ট হয়। এদিকে, ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা স্কুলের পাশের মহাসড়ক অবরোধ করে। পরে হাইওয়ে পুলিশ এসে লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় পুলিশের লাঠির আঘাতে ইয়াছিন (১৬) নামে এক শিক্ষার্থী আহত হয়। তার মাথার পেছনের অংশ ফেটে গেলে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আহত শিক্ষার্থী ইয়াছিন জানায়, গ্যাস কোম্পানীর মতো দায়িত্বশীল একটি প্রতিষ্ঠানে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ট্রাক্টর চালককের চাকরি দেওয়ার প্রতিবাদে এবং চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আমরা মহাসড়কে অবস্থান নেই। এ সময় পুলিশ এসে আমাদের এলোপাথারী মারধর করে। এতে পুলিশের এক সদস্য লাঠি দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে।

এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ ইলিয়টগঞ্জ ফাঁড়ির ইন-চার্জ (ইন্সপেক্টর) মনিরুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনাটি মহাসড়কে হয়নি। আঞ্চলিক সড়কে হয়েছে। আর শিক্ষার্থীরা এসে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় শিক্ষার্থীদের সরে যেতে অনেকবার বলা হলেও তারা কথা শুনেনি। এখানে হাইওয়ে ও থানা পুলিশ ছিল। পুলিশের কোন সদস্য এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন ঘটনা করেছে সেটা আমার জানা নেই।

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দাউকান্দি সার্কেল) মহিদুল ইসলাম জানান, আমরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছি। নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্য, স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। গাড়ি ও চালক আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে, দুপুর সোয়া ১২টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর, জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম, চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এসএম জাকারিয়া।

এ সময় গ্যাস লাইন নির্মাণ কোম্পানী চিটাগং-ফেনী-বাখরাবাদ গ্যাস লাইন প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল যোবায়ের জানান, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার এর উপস্থিতিতে আমরা নিহতের পরিবারকে ৬ লাখ টাকার চেক দিয়েছি। ভবিষ্যতে আমরা দক্ষ ও লাইসেন্স প্রাপ্ত চালক নিয়োগ দেব। এছাড়া জেলা প্রশাসকের তহবিল থেকে নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।