জাতীয় ডেস্কঃ
তোর পোলারে পিডাই মারতেছি শোন, হত্যার আগে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে এই কথাগুলো বলা হয়েছিল নিহত রাসেল খানের মা শেফালী বেগমকে।
এরপর চিৎকার চেঁচামেচি, গোঙানির শব্দ। মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাসেল খান (২৫)।
এই ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুর সদর উপজেলার করদী এলাকায়। নিহত রাসেল ওই এলাকার হাবিব খানের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৮-১০ দিন পূর্বে করদি এলাকার সামসু কাজীর ছেলে রাসেল কাজী সঙ্গে বন্ধু রাসেল খানের মাধ্যে একটি সিমকার্ড নিয়ে কথাকাটাকাটি এবং হাতাহাতি হয়। এরই জের ধরে বুধবার রাত ৮টার দিকে স্থানীয় সনমন্দি বাজার থেকে রাসেলকে ডেকে নিয়ে ৪-৫ জন মিলে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় ও ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে।
এ সময় গুরুতর আহত হন রাসেল খান। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। রাসেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ওইদিন রাতেই তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর সোমবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাসেল।
রাসেল পেশায় একজন ভ্যানচালক ছিলেন। নিহত রাসেলর স্ত্রী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
রাসেলের মা শেফালী বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, মোবাইল ফোনে কল দিয়ে মারধরের শব্দ শোনানো হয় আমাকে। আমার ছেলে বাঁচার জন্য অনেক চিৎকার করেছে তবুও ওরে ছাড়েনি। মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ফেরে রেখে যায়। আমার ছেলের বউ অন্তঃসত্ত্বা। অনাগত সন্তান কাকে বাবা ডাকবে? আমি এই হত্যার বিচার চাই।
নিহতের খালাতো ভাই জুয়েল মাতুব্বর বলেন, এভাবে একজন বন্ধুকে আরেকজন বন্ধু হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করতে পারে? আমি এ হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার এসআই মো. শাহিন সরদার বলেন, নিহত রাসেল খানের মাথা, ঘারসহ সারা শরীরে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়। এই কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় নিহতের পরিবার মাদারীপুর আদালতে অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।
সূত্রঃ যুগান্তর