ঢাকা ১২:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে রং তুলিতে ব্যস্ত সময় পার করছে কুমারপাড়া

ফাহাদ রহমান :

“এসো হে বৈশাখ এসো এসো” আসছে ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব । সময় আছে মাত্র দুই দিন তাই বর্ষবরণ করার জন্য চলছে নানান প্রস্তুতি। আর এই বৈশাখকে সামনে রেখে নানান রঙের ও প্রকারের বাহারী রঙের হাড়ি, কলস, দইয়ের পাত্র, সানকিসহ নানা তৈজসপত্র তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন কুমারপল্লীর মৃৎশিল্পীরা।

জেলার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর,কামেল্লা,পাচকিত্তা,শ্রীকাইল এলাকার কুমারপাড়াগুলোতে চলছে মাটির তৈজসপত্র তৈরির পর রং তুলির শেষ ব্যস্ততা। নববর্ষের বর্ষবরণ এবং বিভিন্ন স্থানের মেলায় মাটির পাত্র, হাড়ি, কলস, দইয়ের পাত্র, সানকিসহ বিভিন্ন খেলনা যেমন-বাঘ, হরিণ, গরু, ঘোড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন পশু-পাখি, ফুলের টব, রকমারী পুতুল তৈরী করতে বিরামহীন কাজ করছে কুমারপালেরা। বিভিন্ন তৈজসপত্র ও ঘর সাজানোর উপকরণগুলো ইতোমধ্যেই চলে গিয়েছে শহরের বিভিন্ন দোকানে। ইচ্ছে মত রং আর তুলির আঁচড়ে সাজিয়ে নিচ্ছেন এসব উপকরণগুলো।

রামচন্দ্রপুরের কুমারপাড়া এলাকায় পৌঁছতেই চোখে পড়লো কুমারদের রং তুলির শেষ কর্মব্যস্ততা। কুমার পরিবারের সবাই ব্যস্ত নিজ নিজ কাজে। পরিবারের ছোট্ট শিশুটিও কাঁদার বালতি মাথায় নিয়ে ছুটছে এদিক সেদিক। বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরাও এই কাজে সহযোগিতা করছেন।

কুমারপাড়ার মিথেন কুমার পালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মাটির তৈজসপত্র তৈরিতে ব্যস্ত তারা। মেলা উপলক্ষে গৃহস্থলী আসবাবপত্র, খেলনা ও শো-পিছ তৈরী করে কেউ কেউ শুকিয়ে পোড়ার কাজ করছে আবার কেউ কেউ পেড়ানো শেষ করে রঙ এর কাজ করছে। যেগুলো রঙ শুকিয়ে গেছে সেগুলো বাজারের পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে।

মিথেন চন্দ্র বলেন, প্রতি বছর পহেলা বৈশাখকে ঘিরে মাটির তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই তারা বংশানুক্রমের নিয়মানুযায়ী পুরো বৈশাখ মাস কেউ কোন কাজ করবে না। আর এজন্যই পরিবারের ছোট থেকে শুরু করে বয়বৃদ্ধদেরও সাহায্যে নিতে হয়। এসময়ের মধ্যে রাত জেগে হলেও ৩০ চৈত্রের মধ্যে তাদের কাজ শেষ করবে।

এই পেশার সাথে জড়িত বিশ্বজিৎ চন্দ্র পাল বলেন, “আগে এই গেরামের সবাই মাডির কাজ করত। এহন প্লেলাষ্টিকের জিনিস বাইর হয়নে এই মাডির কাম সব্বাই ছাইরা দিসে। তবে আমরার এই মাডির কামডারে দইরা রাহনের লাই¹া সরকারের কাম করনের দরকার”।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে রং তুলিতে ব্যস্ত সময় পার করছে কুমারপাড়া

আপডেট সময় ১০:৫৬:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ এপ্রিল ২০১৯
ফাহাদ রহমান :

“এসো হে বৈশাখ এসো এসো” আসছে ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব । সময় আছে মাত্র দুই দিন তাই বর্ষবরণ করার জন্য চলছে নানান প্রস্তুতি। আর এই বৈশাখকে সামনে রেখে নানান রঙের ও প্রকারের বাহারী রঙের হাড়ি, কলস, দইয়ের পাত্র, সানকিসহ নানা তৈজসপত্র তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন কুমারপল্লীর মৃৎশিল্পীরা।

জেলার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর,কামেল্লা,পাচকিত্তা,শ্রীকাইল এলাকার কুমারপাড়াগুলোতে চলছে মাটির তৈজসপত্র তৈরির পর রং তুলির শেষ ব্যস্ততা। নববর্ষের বর্ষবরণ এবং বিভিন্ন স্থানের মেলায় মাটির পাত্র, হাড়ি, কলস, দইয়ের পাত্র, সানকিসহ বিভিন্ন খেলনা যেমন-বাঘ, হরিণ, গরু, ঘোড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন পশু-পাখি, ফুলের টব, রকমারী পুতুল তৈরী করতে বিরামহীন কাজ করছে কুমারপালেরা। বিভিন্ন তৈজসপত্র ও ঘর সাজানোর উপকরণগুলো ইতোমধ্যেই চলে গিয়েছে শহরের বিভিন্ন দোকানে। ইচ্ছে মত রং আর তুলির আঁচড়ে সাজিয়ে নিচ্ছেন এসব উপকরণগুলো।

রামচন্দ্রপুরের কুমারপাড়া এলাকায় পৌঁছতেই চোখে পড়লো কুমারদের রং তুলির শেষ কর্মব্যস্ততা। কুমার পরিবারের সবাই ব্যস্ত নিজ নিজ কাজে। পরিবারের ছোট্ট শিশুটিও কাঁদার বালতি মাথায় নিয়ে ছুটছে এদিক সেদিক। বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরাও এই কাজে সহযোগিতা করছেন।

কুমারপাড়ার মিথেন কুমার পালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মাটির তৈজসপত্র তৈরিতে ব্যস্ত তারা। মেলা উপলক্ষে গৃহস্থলী আসবাবপত্র, খেলনা ও শো-পিছ তৈরী করে কেউ কেউ শুকিয়ে পোড়ার কাজ করছে আবার কেউ কেউ পেড়ানো শেষ করে রঙ এর কাজ করছে। যেগুলো রঙ শুকিয়ে গেছে সেগুলো বাজারের পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে।

মিথেন চন্দ্র বলেন, প্রতি বছর পহেলা বৈশাখকে ঘিরে মাটির তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই তারা বংশানুক্রমের নিয়মানুযায়ী পুরো বৈশাখ মাস কেউ কোন কাজ করবে না। আর এজন্যই পরিবারের ছোট থেকে শুরু করে বয়বৃদ্ধদেরও সাহায্যে নিতে হয়। এসময়ের মধ্যে রাত জেগে হলেও ৩০ চৈত্রের মধ্যে তাদের কাজ শেষ করবে।

এই পেশার সাথে জড়িত বিশ্বজিৎ চন্দ্র পাল বলেন, “আগে এই গেরামের সবাই মাডির কাজ করত। এহন প্লেলাষ্টিকের জিনিস বাইর হয়নে এই মাডির কাম সব্বাই ছাইরা দিসে। তবে আমরার এই মাডির কামডারে দইরা রাহনের লাই¹া সরকারের কাম করনের দরকার”।