ঢাকা ১২:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৫ মার্চ ২০২৫, ২০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এইচএম এরশাদ আর নেই

জাতীয় ডেস্ক:

সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এইচএম এরশাদ আর নেই। রবিবার সকাল পৌনে ৮টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নইলাহি রাজিউন)।

 

এর আগে ৪ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। ওই দিন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের জানান, এরশাদের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত। এটি আমাদের কাছে শুভ লক্ষণ মনে হচ্ছে না। কিডনি যেভাবে কাজ করা কথা ছিল সেভাবে কাজ করছে না। তাকে বিদেশে নেয়ার অবস্থাও নেই।

সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এইচএম এরশাদের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার আজ বাদ জোহর ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

 

জানাজার এক ঘণ্টা আগে জাতীয় পতাকা ও সেনাবাহিনীর পতাকা মোড়ানো এরশাদের কফিন মসজিদ প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয় পরে এরশাদের মরদেহ সিএমএইচের হিমঘরে নেয়া হয়।

আগামীকাল সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ২য় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয়পার্টির কাকরাইল আফিসে নেয়া হবে। বাদ আছর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে তৃতীয় জানাজা হবে। রাতে তার মরদেহ সিএমএইচের হিমঘরে রাখা হবে।

এছাড়া সোমবার ঢাকায় দুটি ও মঙ্গলবার রংপুরে অন্য জানাজা হবে বলে জানান তিনি।

জাপা মহাসচিব বলেন, রবিবার বাদ জোহর সেনাবাহিনীর কেন্দ্রীয় মসজিদে এরশাদের প্রথম জানাজা হবে। এরপর লাশ নেওয়া হবে বনানীতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সেখানে নেতাকর্মীদের শ্রদ্ধা জানানোর পর লাশ রাখা হবে হিমঘরে।

সোমবার সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় জানাজা ও বাস আসর বায়তুল মোকাররম মসজিদে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার রংপুরে নেওয়া হবে সাবেক রাষ্ট্রপতির লাশ। রংপুর জেলা স্কুল মাঠে চতুর্থ জানাজার পর এরশাদের লাশ ফের ঢাকায় আনা হবে। এরপর ঢাকার সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হবে রংপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হওয়া এই সাংসদকে।

উল্লেখ্য, রবিবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এরশাদ। ৯০ বছর বয়সী এরশাদ রক্তে সংক্রমণসহ লিভার জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ২২ জুন সিএমএইচে ভর্তি করা হয় তাকে। এর আগেও তিনি একাধিকবার দেশ-বিদেশে চিকিৎসা নেন।

১৬ জুলাই সকাল ১০টায় হেলিকপ্টার যোগে রংপুরে নেয়া হবে। রংপুর জেলা স্কুল মাঠ অথবা ঈদগাহ মাঠে বাদ জোহর চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ জুলাই বিকালে সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

এরশাদকে গত ২২ জুন সকালে হাসপাতালে ভর্তির পর কয়েকদিন অবস্থার দৃশ্যমান কিছুটা উন্নতি মনে হলেও গত রবিবার ভোর থেকে তার অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। তার ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়েছে। ফুসফুসে পানি জমেছে, ফলে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে। চিকিৎসকরা কৃত্রিম উপায়ে তাকে অক্সিজেন দিয়ে রেখেছিলেন।

মঙ্গলবার বিকাল থেকে এরশাদের প্রচণ্ড কাঁপুনি দিয়ে দফায়-দফায় জ্বর আসে। অবস্থা খারাপের দিকে গেলে বুধবার সকালে তাকে সিএমএইচের ক্রিটিক্যাল ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

এরশাদ ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ভারতের কোচবিহার জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পরে তার পরিবার রংপুরে চলে আসে। রংপুরেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন তিনি। ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করেন। এরশাদ ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। ১৯৬০-১৯৬২ সালে তিনি চট্টগ্রাম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কেন্দ্রে অ্যাডজুট্যান্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় পশ্চিম পাকিস্তানেই ছিলেন এরশাদ। পাকিস্তান থেকে আটকে পড়া বাঙালিরা যখন ১৯৭৩ সালে দেশে ফিরে আসে তখন তিনিও প্রত্যাবর্তন করেন। পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরার পর ১৯৭৩ সালে তাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অ্যাডজুটান্ট জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১২ ডিসেম্বর ১৯৭৩ সালে তিনি কর্নেল ও ১৯৭৫ সালের জুন মাসে সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি পান।

এরপর ১৯৭৫ সালের ২৪ আগস্ট ভারতে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় তিনি মেজর জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি পান ও উপ-সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এরশাদকে সেনাবাহিনীপ্রধান পদে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং ১৯৭৯ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন এরশাদ। ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক (সিএমএলএ) হিসেবে দেশ শাসন করেন। এরপর তিনি রাষ্ট্রপতি আহসানউদ্দিন চৌধুরীকে অপসারণ করে ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। স্বৈরাচারবিরোধী প্রবল গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

১৯৯১ সালে জেনারেল এরশাদ গ্রেফতারর হন এবং তাকে কারাবন্দি করে রাখা হয়। ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে জেলে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় এরশাদ রংপুরের পাঁচটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনেও এরশাদ সংসদে পাঁচটি আসনে বিজয়ী হন। ছয় বছর জেলে থাকার পর ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের আমলে তিনি জামিনে মুক্ত হন।

২০০১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এরশাদের জাতীয় পার্টি ১৪টি আসনে জয়ী হয়। ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে মহাজোট গঠন করেন তিনি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল ২৭টি আসনে জয় লাভ করে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আসন পায় ৩৪টি। এবার এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হন। ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হন তিনি। সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এরশাদ।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরের ৭ শহীদ পরিবারের মাঝে রমজানের উপহার পাঠালেন সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ

এইচএম এরশাদ আর নেই

আপডেট সময় ১০:৪৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০১৯
জাতীয় ডেস্ক:

সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এইচএম এরশাদ আর নেই। রবিবার সকাল পৌনে ৮টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নইলাহি রাজিউন)।

 

এর আগে ৪ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। ওই দিন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের জানান, এরশাদের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত। এটি আমাদের কাছে শুভ লক্ষণ মনে হচ্ছে না। কিডনি যেভাবে কাজ করা কথা ছিল সেভাবে কাজ করছে না। তাকে বিদেশে নেয়ার অবস্থাও নেই।

সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এইচএম এরশাদের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার আজ বাদ জোহর ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

 

জানাজার এক ঘণ্টা আগে জাতীয় পতাকা ও সেনাবাহিনীর পতাকা মোড়ানো এরশাদের কফিন মসজিদ প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয় পরে এরশাদের মরদেহ সিএমএইচের হিমঘরে নেয়া হয়।

আগামীকাল সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ২য় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয়পার্টির কাকরাইল আফিসে নেয়া হবে। বাদ আছর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে তৃতীয় জানাজা হবে। রাতে তার মরদেহ সিএমএইচের হিমঘরে রাখা হবে।

এছাড়া সোমবার ঢাকায় দুটি ও মঙ্গলবার রংপুরে অন্য জানাজা হবে বলে জানান তিনি।

জাপা মহাসচিব বলেন, রবিবার বাদ জোহর সেনাবাহিনীর কেন্দ্রীয় মসজিদে এরশাদের প্রথম জানাজা হবে। এরপর লাশ নেওয়া হবে বনানীতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সেখানে নেতাকর্মীদের শ্রদ্ধা জানানোর পর লাশ রাখা হবে হিমঘরে।

সোমবার সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় জানাজা ও বাস আসর বায়তুল মোকাররম মসজিদে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার রংপুরে নেওয়া হবে সাবেক রাষ্ট্রপতির লাশ। রংপুর জেলা স্কুল মাঠে চতুর্থ জানাজার পর এরশাদের লাশ ফের ঢাকায় আনা হবে। এরপর ঢাকার সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হবে রংপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হওয়া এই সাংসদকে।

উল্লেখ্য, রবিবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এরশাদ। ৯০ বছর বয়সী এরশাদ রক্তে সংক্রমণসহ লিভার জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ২২ জুন সিএমএইচে ভর্তি করা হয় তাকে। এর আগেও তিনি একাধিকবার দেশ-বিদেশে চিকিৎসা নেন।

১৬ জুলাই সকাল ১০টায় হেলিকপ্টার যোগে রংপুরে নেয়া হবে। রংপুর জেলা স্কুল মাঠ অথবা ঈদগাহ মাঠে বাদ জোহর চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ জুলাই বিকালে সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

এরশাদকে গত ২২ জুন সকালে হাসপাতালে ভর্তির পর কয়েকদিন অবস্থার দৃশ্যমান কিছুটা উন্নতি মনে হলেও গত রবিবার ভোর থেকে তার অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। তার ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়েছে। ফুসফুসে পানি জমেছে, ফলে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে। চিকিৎসকরা কৃত্রিম উপায়ে তাকে অক্সিজেন দিয়ে রেখেছিলেন।

মঙ্গলবার বিকাল থেকে এরশাদের প্রচণ্ড কাঁপুনি দিয়ে দফায়-দফায় জ্বর আসে। অবস্থা খারাপের দিকে গেলে বুধবার সকালে তাকে সিএমএইচের ক্রিটিক্যাল ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

এরশাদ ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ভারতের কোচবিহার জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পরে তার পরিবার রংপুরে চলে আসে। রংপুরেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন তিনি। ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করেন। এরশাদ ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। ১৯৬০-১৯৬২ সালে তিনি চট্টগ্রাম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কেন্দ্রে অ্যাডজুট্যান্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় পশ্চিম পাকিস্তানেই ছিলেন এরশাদ। পাকিস্তান থেকে আটকে পড়া বাঙালিরা যখন ১৯৭৩ সালে দেশে ফিরে আসে তখন তিনিও প্রত্যাবর্তন করেন। পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরার পর ১৯৭৩ সালে তাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অ্যাডজুটান্ট জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১২ ডিসেম্বর ১৯৭৩ সালে তিনি কর্নেল ও ১৯৭৫ সালের জুন মাসে সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি পান।

এরপর ১৯৭৫ সালের ২৪ আগস্ট ভারতে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় তিনি মেজর জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি পান ও উপ-সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এরশাদকে সেনাবাহিনীপ্রধান পদে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং ১৯৭৯ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন এরশাদ। ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক (সিএমএলএ) হিসেবে দেশ শাসন করেন। এরপর তিনি রাষ্ট্রপতি আহসানউদ্দিন চৌধুরীকে অপসারণ করে ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। স্বৈরাচারবিরোধী প্রবল গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

১৯৯১ সালে জেনারেল এরশাদ গ্রেফতারর হন এবং তাকে কারাবন্দি করে রাখা হয়। ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে জেলে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় এরশাদ রংপুরের পাঁচটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনেও এরশাদ সংসদে পাঁচটি আসনে বিজয়ী হন। ছয় বছর জেলে থাকার পর ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের আমলে তিনি জামিনে মুক্ত হন।

২০০১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এরশাদের জাতীয় পার্টি ১৪টি আসনে জয়ী হয়। ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে মহাজোট গঠন করেন তিনি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল ২৭টি আসনে জয় লাভ করে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আসন পায় ৩৪টি। এবার এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হন। ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হন তিনি। সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এরশাদ।