ঢাকা ০৮:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ ২০২৫, ২০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডেঙ্গু নিয়ে দুই মেয়রের বক্তব্যে হাইকোর্টের ‘বিস্ময়’

জাতীয় ডেস্ক:

‘ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই’ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রের এমন বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। বলেছে, ‘মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য সিটি করপোরেশনকে আমরা পদক্ষেপ নিতে বলেছিলাম। কিন্তু পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ২১-২২ জন মানুষ মারা গেল। মেয়র বলেছেন, কিছু হয়নি। একজন মেয়র কী করে বলেন কিছু হয়নি। যার সন্তান মারা গেছে সেই বোঝে কষ্ট কী!’

বুধবার জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানিকালে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটি করপোরেশনে ডেঙ্গু মশা নিধনে ওষুধ কেন কাজ করছে না এবং যে ওষুধ আমদানি করা হচ্ছে তা ভেজাল কি না, আর ভেজাল হলে কারা জড়িত তা তদন্ত করে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

আদালত বলেছে, ‘এর আগে এ মামলার শুনানিতে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের বলেছিলাম যে, সামনে বর্ষা মৌসুম। মশা নিধনে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করুন। যাতে এটা মহামারির আকার ধারণ না করতে পারে। কিন্তু এখন প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে দেখছি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েইে চলেছে। সরকার অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে কিন্তু সেটার যথাযথ বাস্তবায়নের দায়িত্ব কার, অবশ্যই সিটি করপোরেশনের।’

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নুরুন্নাহার নূপুর। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

আদেশের পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সিটি করপোরেশন মশা নিয়ন্ত্রণে যে ব্যবস্থা নিচ্ছে সেটা অকার্যকর। মিডিয়ায় রিপোর্ট এসেছে এই যে ওষুধগুলো দেওয়া হচ্ছে, সে ওষুধগুলোর মধ্যে কার্যকারিতা নেই। তারপরও ওই ওষুধগুলো তারা দিচ্ছে। এখানে ২০/২২ কোটি টাকার অর্থনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আছে। এগুলো চলেই যাচ্ছে। এগুলো দুর্নীতির মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে। যারা এ কাজগুলো করছে তাদের বিরুদ্ধে সিটি করপোরশেন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘এরপর আদালত দুটি নির্দেশনা দিয়েছেন। এক. ওই অকার্যকর ওষুধ যারা এনেছেন, যারা সরবরাহ করেছেন এর সঙ্গে যারা জড়িত এটি একটি দুর্নীতি। সিটি করপোরেশন এ দুর্নীতি কমিটি গঠন করে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে। এ নির্দেশনা কার্যকর করে ২০ আগস্টের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে হবে।’

‘দুই. সিটি করপোরেশন যেটা চিন্তা করছে ভালো ওষুধ আনবে-সে ব্যাপারে বলেছেন এটা অতিদ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, সরকারের সহায়তা নিয়ে কার্যকর ওষুধ এনে তা ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে।’

গত ২ জুলাই এ সংক্রান্ত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মশা নিধনে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। দুই সপ্তাহের মধ্যে এফিডেভিট আকারে অবহিত করতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় আদালত। এরপর দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বুধবার দুটি প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরের ৭ শহীদ পরিবারের মাঝে রমজানের উপহার পাঠালেন সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ

ডেঙ্গু নিয়ে দুই মেয়রের বক্তব্যে হাইকোর্টের ‘বিস্ময়’

আপডেট সময় ০৩:০০:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০১৯
জাতীয় ডেস্ক:

‘ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই’ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রের এমন বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। বলেছে, ‘মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য সিটি করপোরেশনকে আমরা পদক্ষেপ নিতে বলেছিলাম। কিন্তু পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ২১-২২ জন মানুষ মারা গেল। মেয়র বলেছেন, কিছু হয়নি। একজন মেয়র কী করে বলেন কিছু হয়নি। যার সন্তান মারা গেছে সেই বোঝে কষ্ট কী!’

বুধবার জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানিকালে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটি করপোরেশনে ডেঙ্গু মশা নিধনে ওষুধ কেন কাজ করছে না এবং যে ওষুধ আমদানি করা হচ্ছে তা ভেজাল কি না, আর ভেজাল হলে কারা জড়িত তা তদন্ত করে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

আদালত বলেছে, ‘এর আগে এ মামলার শুনানিতে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের বলেছিলাম যে, সামনে বর্ষা মৌসুম। মশা নিধনে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করুন। যাতে এটা মহামারির আকার ধারণ না করতে পারে। কিন্তু এখন প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে দেখছি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েইে চলেছে। সরকার অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে কিন্তু সেটার যথাযথ বাস্তবায়নের দায়িত্ব কার, অবশ্যই সিটি করপোরেশনের।’

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নুরুন্নাহার নূপুর। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

আদেশের পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সিটি করপোরেশন মশা নিয়ন্ত্রণে যে ব্যবস্থা নিচ্ছে সেটা অকার্যকর। মিডিয়ায় রিপোর্ট এসেছে এই যে ওষুধগুলো দেওয়া হচ্ছে, সে ওষুধগুলোর মধ্যে কার্যকারিতা নেই। তারপরও ওই ওষুধগুলো তারা দিচ্ছে। এখানে ২০/২২ কোটি টাকার অর্থনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আছে। এগুলো চলেই যাচ্ছে। এগুলো দুর্নীতির মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে। যারা এ কাজগুলো করছে তাদের বিরুদ্ধে সিটি করপোরশেন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘এরপর আদালত দুটি নির্দেশনা দিয়েছেন। এক. ওই অকার্যকর ওষুধ যারা এনেছেন, যারা সরবরাহ করেছেন এর সঙ্গে যারা জড়িত এটি একটি দুর্নীতি। সিটি করপোরেশন এ দুর্নীতি কমিটি গঠন করে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে। এ নির্দেশনা কার্যকর করে ২০ আগস্টের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে হবে।’

‘দুই. সিটি করপোরেশন যেটা চিন্তা করছে ভালো ওষুধ আনবে-সে ব্যাপারে বলেছেন এটা অতিদ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, সরকারের সহায়তা নিয়ে কার্যকর ওষুধ এনে তা ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে।’

গত ২ জুলাই এ সংক্রান্ত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মশা নিধনে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। দুই সপ্তাহের মধ্যে এফিডেভিট আকারে অবহিত করতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় আদালত। এরপর দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বুধবার দুটি প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়।