মো. শরিফুল আলম চৌধুরী:
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় প্রবল বর্ষনে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা মেরামত করেছেন স্থানীয় লোকজন।
সোমবার মুরাদনগরের কাজিয়াতল দাখিল মাদ্রাসা থেকে মুন্সী বাড়ি হয়ে দারোরা বাজার পর্যন্ত রাস্তাটি স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করা হয়।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, দীর্ঘদিন মেরামত না করায় রাস্তাটি প্রতি বর্ষায়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এবারের বর্ষনে রাস্তাটির অবস্থা আরও বেহাল হয়ে পড়ে। তাঁরা এই রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি জানিয়েছেন।
স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা মেরামতের কাজে নেতৃত্ব দেন মুরাদনগর প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক ও কাজিয়াতল ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. শরিফুল আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে এ রাস্তায় চলাচলকারী এলাকায় একজন বয়স্ক নারী ও একাধিক মাদ্রাসা ও স্কুল ছাত্রছাত্রীসহ পথচারী অসুস্থ হন। তাঁদেরকে হাসপাতালে নেওয়া জরুরি হলেও ভাঙা রাস্তার কারণে কোনো যানবাহন পাওয়া যায়নি। পরে তাঁদেরক কোলে করে দারোরা বাজার পর্যন্ত নেওয়া হয়। এমন দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে তাঁরা নিজেরা রাস্তাটির কিছু অংশ মেরামত করেন। স্থানীয় কয়েকজন লোক বলেন, সাম্প্রতিক ভারী বর্ষনে উপজেলার অনেক কাঁচা রাস্তার মতো কাজিয়াতল দাখিল মাদ্রাসা থেকে দারোরা বাজার পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে রাস্তাটির দারোরা বাজার থেকে দৌলত খান চেয়ারম্যানের বাড়ি পর্যন্ত অংশ কাঁচা হওয়ায় তা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখানকার অন্তত ২০টি স্থান ভেঙে গিয়ে তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় এলাকার লোকজন প্রতিবছরের মতো জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসে বসে না থেকে গতকাল প্রায় এক কিলোমিটার অংশ নিজেরাই মেরামত করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দারোরা বাজারের দক্ষিণে পুষ্কনীড় পাড়ে অংশে অন্তত ১০টি গর্ত রয়েছে। কাজিয়াতল মুন্সী বাড়ি হতে দাখিল মাদ্রাসা হয়ে কাজিয়াতল ভোরের ঘাট ব্রিজ পর্যন্ত অংশে আরও ১৫টি গর্ত। এসব স্থানে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ কোনো যানবাহনই চলতে পারে না।
ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে গ্রামে আসা বিল্লাল হোসেন বলেন, এলাকার অনেক লোক রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে থাকেন। বাড়ি আসার পর এই রাস্তায় আসতে চাইলে কোনো যানচালকই রাজি হন না। বাধ্য হয়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হয়। এ কারণে গতকাল কাজিয়াতল মুন্সী বাড়ি থেকে দাখিল মাদ্রাসা পর্যন্ত এলাকার লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তাটি মেরামত করেন। স্থানীয় শেখ সজীব ওয়াজদে জয় ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠনের সদস্যরা এতে সহযোগিতা করেন।
সংগঠনটির সভাপতি প্রবাসী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাস্তাটি দিয়ে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার হাটের দিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। এবার ভারী বর্ষনে পানি নেমে যাওয়ার পরও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এটি সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছিলেন না। তাই নিজেদের উদ্যোগে সড়কটির কিছু অংশ মেরামত করেছি। দ্রুত সড়কটি পাকা চাই।’
এ ব্যাপারে দারোরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহজাহান বিএসসি বলেন, আপাতত রাস্তাটি সংস্কারের কোনো বরাদ্দ নেই। তবে সামনে বরাদ্দ পেলে রাস্তাটি মেরামত করা হবে। রাস্তা পাকাকরণের বিষয়ে এলজিইডির মুরাদনগর কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুদুল আলম বলেন, রাস্তাটি পাকা করার বিষয়ে তাঁদের কোনো পরিকল্পনা এখন নেই। এ বিষয়ে স্থানীয় সাংসদ চাইলে উদ্যোগ নেওয়া যাবে।