জাতীয়:
গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে না যাওয়ার ব্যাপারে উস্কানির অভিযোগ ওঠার পর ৪১টি এনজিওকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন। মন্ত্রী জানান, তারা রোহিঙ্গাদের নানাভাবে প্ররোচিত করছিল। এজন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের সবধরনের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
২০১৭ সালের আগস্ট থেকে কয়েক মাসে লাখ লাখ নির্যাতিত রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। মানবিক দিক বিবেচনা করে সীমান্ত খুলে দেয় বাংলাদেশ। এতে সারা বিশ্ব বাংলাদেশের প্রশংসা করে। বিভিন্ন সময় আশ্রয় নেয়া প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে নিজ দেশে ফেরানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমারের ওপর কূটনৈতিক চাপও সৃ্ষ্টি করা হচ্ছে।
তবে মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবে বারবার এমনটা আশ্বাস দিলেও নানা চলছাতুরির আশ্রয় নিচ্ছে। গত বছরের নভেম্বরে প্রথম দফায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের তারিখ ঘোষণা হলেও মিয়ানমারের কারণে তা হয়নি। সবশেষ গত ২২ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় দিনক্ষণ ঠিক করেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি।
দ্বিতীয় দফায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ার পেছনে মূল কারণ রোহিঙ্গাদের অনীহা। অভিযোগ রয়েছে, কিছুসংখ্যক বিদেশি এনজিও রোহিঙ্গাদের ভুল বুঝিয়ে ফিরে না যাওয়ার ব্যাপারে প্ররোচিত করছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বানচাল হওয়ায় সরকার এনজিওদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা তৈরির পর ১৩৯টি এনজিও ওই এলাকায় তাদের কার্যক্রম শুরু করে। এদের মধ্যে নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকায় তালিকা করে ৪১টি এনজিওকে সে এলাকা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
তবে প্রত্যাহার করা এনজিওগুলোর মধ্যে কারা কারা রয়েছে সে ব্যাপারে মন্ত্রী কিছু বলেননি।
এখনো বিভিন্ন এনজিও একই কাজ করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এদের কার্যক্রমে নজরদারি রয়েছে। তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দেশি-বিদেশি এসব এনজিওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিতে বিদেশ থেকে তদবির করা হচ্ছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মোমেন বলেন, ‘বিদেশি বেসরকারি সংস্থাগুলো (এনজিও) বাইরে থেকে টাকা এনে রোহিঙ্গাদের সাহায্য করে। এতে আমরা লাভবান হই। কিন্তু যখনই টাকাগুলো সঠিক পন্থায় খরচ না হয়, তখনই সমস্যার সৃষ্টি হয়।’