স্বাস্থ্য:
যেকোনো বিষয়ে তথ্য জানতে ও জানাতে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের উপর নির্ভরতা দিনদিন বেড়েই চলেছে। স্বাস্থ্যখাতেও রয়েছে সঠিক তথ্য ও নির্দেশনার অভাব। শুধু এ কারণেই প্রতিনিয়ত অসংখ্য রোগী ও তার স্বজনেরা সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হন। আর কতিপয় অসাধু এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসাও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন।
স্বাস্থ্যসেবা পেতে সবার আগে দরকার সঠিক ধারনা ও তথ্য- এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই বেশ কিছু চিকিৎসক ও পেশাজীবী মিলে ফেসবুক ভিত্তিক গ্রুপ ডিএসডিআর প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর এগিয়ে আসেন আরও চিকিৎসকেরা। প্রায় ২০ হাজার গ্রুপ মেম্বারদের অর্ধশত চিকিৎসক নিয়মিত তাদের সামাজিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে এই গ্রুপে রোগীদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রাথমিক পরামর্শ ও কোথায় গেলে সুচিকিৎসা হবে সে বিষয়ে তথ্য দেন।
গ্রুপের একজন এডমিন ডা. সাকলায়েন রাসেল জানালেন, প্রায়ই আমরা চেম্বারে এরকম রোগী পাই যারা তাদের রোগটা কোন বিষয়ের ডাক্তার ভালো চিকিৎসা করতে পারেন এই বিষয়টাও বুঝতে পারেন না। অথচ একজন এমবিবিএস ডাক্তার দেখালে হয়তো আগে থেকেই এই রোগ সনাক্ত হত এবং প্রয়োজনে সঠিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ভালো হয়ে উঠত আরো আগেই। ডিএসডিআর সেই কাজটা করছে, এখানে আমরা সবাইকে উপসর্গ দেখে সে কোথায় গেলে চিকিৎসা পাবে অন্তত সেই তথ্যটা দিতে চেষ্টা করছি।
অনলাইনে স্বাস্থ্যসেবা আসলে কতটা সুদূরপ্রসারী ভাবনা? এর উত্তরে গ্রুপের মডারেটর শমরিতা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী নাকিব কামরান জানালেন, আমরা কখনোই শারীরিক পুরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে কোন বিষয়ের চিকিৎসা দেয়াকে সমর্থন করি না। সে ভাবনা থেকেই এই গ্রুপে কাউকেই কখনো ভার্চুয়াল প্রেসক্রিপশন দেয়া হয় না। আমরা চেষ্টা করি তার প্রশ্নের ভিত্তিতে তাকে তার সমস্যা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা দিয়ে তিনি কোন বিষয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন সে পরামর্শ দেয়ার। এর ফলে কেউ যখন বুঝতে পারে, সে নিজেও ঐ বিষয়ের অনেক ডাক্তার থেকে তার সুবিধামত সেবা নিতে পারেন।
সমসাময়িক বিষয়ে স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক পোস্ট-এর পাশাপাশি ডিএসডিআর গ্রুপে আরও বেশ কিছু ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য দেয়া হয় যেমন, কোথায় কোন রোগের পরীক্ষা করা যায়, কেমন খরচ পড়ে, কোন পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতি কী ? এছাড়া অনেক সময়ই প্রেসক্রিপশনের কিছু বিষয়ে বা চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়েও অনেকের অস্পষ্ট ধারনা থাকে, এগুলো গ্রুপের মডারেটররা বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। ওষুধের কার্যকারিতা ও অবাধে এন্টিবায়োটিক সেবন থেকে বিরত রাখার লক্ষেও কাজ করেন তারা।
গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুধুই ডাক্তাররা না, এ প্লাটফর্মে বিভিন্ন পেশাজীবীরাও যুক্ত হয়েছেন, আছেন সাংবাদিক, শিক্ষকেরাও। গ্রুপ লিংক: https://www.facebook.com/groups/397519470727469/?ref=bookmarks