আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ক্ষমতাসীন মোদি সরকারের আমলে ভারত স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির বিরোধী দল কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী।
সম্প্রতি দেশটিতে সাম্প্রদায়িক গণপিটুনি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ মোদিকে উদ্দেশ্যে করে একটি খোলা চিঠি দেন দেশটির ৫০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। কিন্তু মোদিকে চিঠি পাঠানোর কারণে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা সম্পর্কে রাহুল বলেন,‘‘এই মুহূর্তে দেশে কী চলছে, সে ব্যাপারে প্রত্যেকেই অবগত। কোনও গোপনীয়তা নেই। এমনকি গোটা বিশ^ও জেনে গিয়েছে। ক্রমশ স্বৈরতন্ত্রের দিকে এগোচ্ছি আমরা।’
রাহুলের দাবি মোদি সরকার সমালোচনা শুনতে পারে না। তিনি বলেন,‘‘প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিছু বললে, কেন্দ্রীয় সরকারের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুললে, আজকাল আটক করা হচ্ছে। হামলার মুখে পড়তে হয়। দেশের সংবাদমাধ্যমকেও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’’
রাহুল আরো বলেন,‘‘এক দিকে ধারণা জন্মেছে যে, এক ব্যক্তি-ই দেশ শাসন করবেন। দেশে একটি মাত্র আদর্শই থাকবে। বাকিদের মুখে কুলুপ এঁটে থাকতে হবে। আর অন্য দিকে বহু ভাষা, বহু সংস্কৃতি এবং বাক স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। দেশে এখন এই যুদ্ধই চলছে।’’
গত জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে খোলা চিঠি দিয়েছিলেন ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ, চিত্র পরিচালক মণিরতœম, অনুরাগ কাশ্যপ, শ্যাম বেনাগাল, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং অভিনেত্রী অপর্ণা সেন-সহ মোট ৫০ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
চিঠিতে বলা হয়, মুসলিম, দলিত এবং সংখ্যালঘুদের গণপিটুনি দিয়ে মারার ঘটনা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় ভিন্নমত থাকাটাও স্বাভাবিক বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন তারা।
প্রধানমন্ত্রীকে বিশিষ্টদের এই পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে বিহারের মুজফ্ফরপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) সূর্যকান্ত তিওয়ারির কাছে দুই মাস আগে একটি পিটিশন দাখিল করেন আইনজীবী সুধীর কুমার ওঝা। সেই পিটিশনের ভিত্তিতে গত ২০ আগস্ট একটি নির্দেশ দেন সিজেএম সূর্যকান্ত তিওয়ারি। বৃহস্পতিবার সদর পুলিশ স্টেশনে ওই নির্দেশের ভিত্তিতেই তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে একটি এফআইআর দায়ের করেছেন সুধীর।