ঢাকা ০৯:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে মাদ্রাসার নথিপত্র ও টাকা নিয়ে ২২ দিন ধরে উধাও সুপার, আদালতে মামলা

শামীম আহম্মদ:

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল দক্ষিণ পাড়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে নানান অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদরাসার সভাপতি শরিফুল আলম চৌধুরী বাদি হয়ে কুমিল্লার ৮নং আমলি আদলতে এই মামলা দায়ের করে। আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ইরফানুল হক চৌধুরী কুমিল্লা জেলা ডিবির ওসিকে মামলার তদন্তভার অর্পণ করেন। অভিযুক্ত মাদরাসা সুপার মোস্তাফিজুর রহমান উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন পূর্বধইর পশ্চিম ইউনিয়নের নবীয়াবাদ গ্রামের মৃত রুপ মিয়ার ছেলে।

মামলার সূত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উন্নয়ন তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ, নিয়মিত মাদরাসায় না এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিক বিষয় নিয়ে অভিযোগ করেন স্থানীয় অভিভাবক। তার অনিয়ম ও দূর্নীতি নিয়ে শিক্ষক কর্মচারীগণ অভিযোগ করে ব্যবস্থাপনা কমিটির নিকট। তাদেরকে যখন সুপার পরোয়া করেনা তখন তারা নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ করেন।

পরে গত ১২ অক্টোবর দুপুরে প্রতিষ্ঠানের মূল কাগজ পত্র ও টাকা পয়সাসহ সুপার পালিয়ে যায়। পর দিন ১৩ তারিখ সুপারের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ মুরাদনগর থানার একটি সাধারণ ডায়ইরি করে (যার নং ৪৯৬, তাং ১৩/১০/১৯ইং)। গত ১৯ অক্টোবর শনিবার মাদরাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সুপার মোস্তাফিজুর রহমান প্রতিষ্ঠানের গুরত্বপূর্ন কাগজপত্র, নগদ অর্থ নিয়ে পলাতক থাকাসহ, বিভিন্ন অনিয়ম ও অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি প্রাথমিক ভাবে প্রমানিত হওয়ায়, সভায় মাদরাসার কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সহ-সুপার আবদুল হাফিজকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মাদরাসা শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, সুপারের নানান অনিয়ম ও অসদাচরণে অতিষ্ঠ হয়ে আমরা ১২ জন শিক্ষক কর্মচারী ব্যবস্থাপনা কমিটির নিকট লিখিত অভিযোগ দেই। তিনি ব্যবস্থাপনা কমিটিকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখান। যার ফলে আমরা নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ দায়ের করি।

মাদরাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শরিফুল আলম চৌধুরী বলেন, সুপার সাহেব দীর্ঘদিন যাবত উন্নয়ন তহবিলের সঠিক হিসাব দিতে পারেনি। তাছাড়া তিনি সপ্তাহে দুইদিন মাদরাসায় এসে বাকী চার দিনের স্বাক্ষর করে থাকেন। শুধু তাই নয়, তার অধিনস্থ শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে অসদাচরণ করেন। যা একজন শিক্ষকের নৈতিক আদর্শের পরিপন্থি। ব্যবস্থাপনা কমিটি একাধিক সভায় তাকে মৌখিক ভাবে নিজেকে শোধরানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন।

তিনি এটাকে পুঁজি করে অনিয়মের মাত্রা বাড়িয়ে দিলে তাকে শোকজ করা হয়। শোকজের জবাব না দিয়ে উল্টো মাদরাসার গুরত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও টাকা নিয়ে গত ১২ দিন যাবত উধাও। তার সেল ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। নিরুপায় হয়ে আমি মুরাদনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করি এবং মাদরাসার কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সহ-সুপার আবদুল হাফিজকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২২ দিন গত হলেও সুপার আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি এবং আমরাও যোগাযোগ করে তাকে পাইনি বিধায় তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছি।

অভিযুক্ত সুপার মোস্তাফিজুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘বিধি মোতাবেক টাকা ও কাগজপত্র আমি সাথে এনেছি। অসুস্থ্য তাই মাদরাসায় যাইনা। কতৃপক্ষকে অবহিত করেছেন? এমন প্রশ্নে তিনি বিষয়টি পাশ কাটিয়ে বলেন, আমার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ মিথ্যা।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত

মুরাদনগরে মাদ্রাসার নথিপত্র ও টাকা নিয়ে ২২ দিন ধরে উধাও সুপার, আদালতে মামলা

আপডেট সময় ১২:২৪:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৯

শামীম আহম্মদ:

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল দক্ষিণ পাড়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে নানান অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদরাসার সভাপতি শরিফুল আলম চৌধুরী বাদি হয়ে কুমিল্লার ৮নং আমলি আদলতে এই মামলা দায়ের করে। আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ইরফানুল হক চৌধুরী কুমিল্লা জেলা ডিবির ওসিকে মামলার তদন্তভার অর্পণ করেন। অভিযুক্ত মাদরাসা সুপার মোস্তাফিজুর রহমান উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন পূর্বধইর পশ্চিম ইউনিয়নের নবীয়াবাদ গ্রামের মৃত রুপ মিয়ার ছেলে।

মামলার সূত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উন্নয়ন তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ, নিয়মিত মাদরাসায় না এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিক বিষয় নিয়ে অভিযোগ করেন স্থানীয় অভিভাবক। তার অনিয়ম ও দূর্নীতি নিয়ে শিক্ষক কর্মচারীগণ অভিযোগ করে ব্যবস্থাপনা কমিটির নিকট। তাদেরকে যখন সুপার পরোয়া করেনা তখন তারা নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ করেন।

পরে গত ১২ অক্টোবর দুপুরে প্রতিষ্ঠানের মূল কাগজ পত্র ও টাকা পয়সাসহ সুপার পালিয়ে যায়। পর দিন ১৩ তারিখ সুপারের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ মুরাদনগর থানার একটি সাধারণ ডায়ইরি করে (যার নং ৪৯৬, তাং ১৩/১০/১৯ইং)। গত ১৯ অক্টোবর শনিবার মাদরাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সুপার মোস্তাফিজুর রহমান প্রতিষ্ঠানের গুরত্বপূর্ন কাগজপত্র, নগদ অর্থ নিয়ে পলাতক থাকাসহ, বিভিন্ন অনিয়ম ও অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি প্রাথমিক ভাবে প্রমানিত হওয়ায়, সভায় মাদরাসার কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সহ-সুপার আবদুল হাফিজকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মাদরাসা শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, সুপারের নানান অনিয়ম ও অসদাচরণে অতিষ্ঠ হয়ে আমরা ১২ জন শিক্ষক কর্মচারী ব্যবস্থাপনা কমিটির নিকট লিখিত অভিযোগ দেই। তিনি ব্যবস্থাপনা কমিটিকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখান। যার ফলে আমরা নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ দায়ের করি।

মাদরাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শরিফুল আলম চৌধুরী বলেন, সুপার সাহেব দীর্ঘদিন যাবত উন্নয়ন তহবিলের সঠিক হিসাব দিতে পারেনি। তাছাড়া তিনি সপ্তাহে দুইদিন মাদরাসায় এসে বাকী চার দিনের স্বাক্ষর করে থাকেন। শুধু তাই নয়, তার অধিনস্থ শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে অসদাচরণ করেন। যা একজন শিক্ষকের নৈতিক আদর্শের পরিপন্থি। ব্যবস্থাপনা কমিটি একাধিক সভায় তাকে মৌখিক ভাবে নিজেকে শোধরানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন।

তিনি এটাকে পুঁজি করে অনিয়মের মাত্রা বাড়িয়ে দিলে তাকে শোকজ করা হয়। শোকজের জবাব না দিয়ে উল্টো মাদরাসার গুরত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও টাকা নিয়ে গত ১২ দিন যাবত উধাও। তার সেল ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। নিরুপায় হয়ে আমি মুরাদনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করি এবং মাদরাসার কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সহ-সুপার আবদুল হাফিজকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২২ দিন গত হলেও সুপার আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি এবং আমরাও যোগাযোগ করে তাকে পাইনি বিধায় তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছি।

অভিযুক্ত সুপার মোস্তাফিজুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘বিধি মোতাবেক টাকা ও কাগজপত্র আমি সাথে এনেছি। অসুস্থ্য তাই মাদরাসায় যাইনা। কতৃপক্ষকে অবহিত করেছেন? এমন প্রশ্নে তিনি বিষয়টি পাশ কাটিয়ে বলেন, আমার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ মিথ্যা।