আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর দখল করে ইসরায়েলের বসতি স্থাপনকে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বেসামরিক বসতি স্থাপনের বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে ইসরাইল স্বাগত জানালেও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিন। খবর বিবিসি ও রয়টার্স’র।
মাইক পম্পেও বলেন, ‘আইনি বিতর্কের সকল পক্ষের বক্তব্য শোনার পর যুক্তরাষ্ট্র এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বেসামরিক বসতি স্থাপন আইনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ নয়।’ বেসামরিক বসতি স্থাপনকে আইনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বলা ঠিক হয়নি এবং এর ফলে শান্তি ব্যাহত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন পম্পেও ।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বসিত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান বদল ঐতিহাসিক ভুলকে ঠিক করেছে। তিনি অন্যান্য দেশকেও যুক্তরাষ্ট্রের পথ অনুসরণের আহ্বান জানান।
এদিকে ফিলিস্তিনের প্রধান মধ্যস্থতাকারী সায়েব অ্যারেকাত মার্কিন সিদ্ধান্তটিকে বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক আইন ‘জঙ্গলের আইন’ দিয়ে প্রতিস্থাপিত হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
১৯৬৭ সালে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর দখল করে সেখানে বেসামরিক বসতি স্থাপন শুরু করে ইসরায়েল। একে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন বলে সরব হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এই ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পাল্টেছে সময়ে সময়ে। ১৯৭৮ সালে প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার ইসরায়েলের বসতি স্থাপনকে আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন। তবে ১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের অবস্থান পাল্টায়। তখনকার প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান একে অবৈধ নয় বলে উল্লেখ করেন।
এরপর থেকে ২০১৬ সালের আগে পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশেই ছিল। তবে ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আগের অবস্থান থেকে সরে আসেন। তখন অবৈধ ইসরায়েলি বসতি নির্মাণ বন্ধে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবে ভেটো প্রদান থেকে নিজেদের বিরত রাখে যুক্তরাষ্ট্র।
২০১৯ সালে এসে ট্রাম্প প্রশাসন মনে করছে তাদের এই সিদ্ধান্তের ফলে এই ইস্যুতে সমস্যা সমাধানের পথ তৈরি হবে।