ঢাকা ১১:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রক্তে রঞ্জিত অশান্ত ইরাক, জ্বলছে ইরানি কনসুলেট নিহত ২৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইরাকের দক্ষিণের শহর নাজাফে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ইরাকের সরকার-বিরোধী আন্দোলন। বুধবার রাত থেকে তা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে দক্ষিণের অন্য শহরগুলোতেও।বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দেল মেহদির শহর নাসিরিয়ায়। সেনা-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে বৃহস্পতিবার ইরাকে অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বুধবার রাতে নজাফের ইরানি কনসুলেটে হামলা চালায় ইরাকের সরকার-বিরোধী আন্দোলনকারীরা। তারা কনসুলেটের মূল ফটক ভেঙে ভিতরে ঢুকে আগুন লাগিয়ে দেন। পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ইরাকি বাহিনী। বিক্ষোভকারীদের নিরস্ত করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। এ সময় দুপক্ষের সংঘর্ষে ৩৫ জন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনীরও ৩২ জন আহত হন। ঘটনার সময়ে কনসুলেটের ভিতরে ইরানের কোনো রাষ্ট্রদূত বা কর্মী না থাকায় কেউ হতাহত হয়নি। এ ঘটনার পর থেকে কার্ফু জারি রয়েছে নজাফে। কিন্তু বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণ ইরাকের আর এক শহর নাসিরিয়ায়। ২৭ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি অন্তত দেড়শো জন আহত হয়েছেন সেখানে। জ্বলছে বাগদাদও। আজ বাগদাদের রাস্তাতেও নামেন অসংখ্য তরুণ। মুখে মাস্ক, মাথায় হেলমেট। সেখানেও দুই বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।

রক্তে রঞ্জিত অশান্ত ইরাক, জ্বলছে ইরানি কনসুলেট নিহত ২৮

গত দুমাসে ইরাকের সরকার-বিরোধী আন্দোলনে মোট ৩৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এরই মধ্যে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীও। মঙ্গলবার বাগদাদে বিক্ষিপ্ত ভাবে তিনটি বিস্ফোরণ ঘটে। ছয়জন নিহত হয়েছিলেন। আজ ওই হামলার দায় নিয়েছে আইএস।

উল্লেখ্য, ইরাকে সরকার-বিরোধী ক্ষোভের সূত্রপাত আজ থেকে ১৬ বছর আগে। ২০০৩ সালে মার্কিন সেনা অভিযানে সাদ্দাম হোসেনের গদিচ্যুত হওয়ার পর থেকেই ইরাকের রাজধানী শহর ও দক্ষিণে শিয়া-অধ্যুষিত শহরগুলোতে ক্ষোভ ছড়াতে শুরু করে। ১৬ বছর আগের সেই পরিবর্তন পড়শি রাষ্ট্রের দরজা খুলে দেয় ইরাকে। অর্থনীতি, রাজনীতি, প্রতিরক্ষা- প্রতিটি ক্ষেত্রে আধিপত্য বিস্তার করতে থাকে ইরান। প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়াতে থাকে ইরাকিদের মধ্যে।

মাস দুয়েক আগে সেই ক্ষোভ প্রথম ‘আন্দোলনের’ চেহারা নেয়। পথে নামে বাগদাদবাসী। প্রথম দিকে আন্দোলনের প্রকাশ্য দাবি ছিল মূলত, চাকরি চাই, উন্নত মানের সরকারি পরিষেবা চাই। কিন্তু ক্রমশ আন্দোলনের চেহারা বদলাতে থাকে। দাবি ওঠে ‘এই সরকারই আর চাই না। এই সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত, এই সরকার ইরানের হাতের পুতুল।’

বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, ইরাকের পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন দলগুলি ইরানের কথা শুনে চলে। ইরানের বিরুদ্ধে এই ক্ষোভেরই প্রতিফলন গতকাল নাজাফের ঘটনা। তবে ইরানের কনসুলেটে হামলা এই প্রথম নয়। এ মাসের গোড়াতেই কারবালার ইরানি কনসুলেটে হামলা চালান ইরাকের বিক্ষোভকারীরা। সে বার নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে চার বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছিলেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে কৃষক ও উদ্যোক্তাদের দিনব্যাপী কর্মশালা

রক্তে রঞ্জিত অশান্ত ইরাক, জ্বলছে ইরানি কনসুলেট নিহত ২৮

আপডেট সময় ১২:৩৭:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইরাকের দক্ষিণের শহর নাজাফে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ইরাকের সরকার-বিরোধী আন্দোলন। বুধবার রাত থেকে তা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে দক্ষিণের অন্য শহরগুলোতেও।বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দেল মেহদির শহর নাসিরিয়ায়। সেনা-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে বৃহস্পতিবার ইরাকে অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বুধবার রাতে নজাফের ইরানি কনসুলেটে হামলা চালায় ইরাকের সরকার-বিরোধী আন্দোলনকারীরা। তারা কনসুলেটের মূল ফটক ভেঙে ভিতরে ঢুকে আগুন লাগিয়ে দেন। পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ইরাকি বাহিনী। বিক্ষোভকারীদের নিরস্ত করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। এ সময় দুপক্ষের সংঘর্ষে ৩৫ জন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনীরও ৩২ জন আহত হন। ঘটনার সময়ে কনসুলেটের ভিতরে ইরানের কোনো রাষ্ট্রদূত বা কর্মী না থাকায় কেউ হতাহত হয়নি। এ ঘটনার পর থেকে কার্ফু জারি রয়েছে নজাফে। কিন্তু বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণ ইরাকের আর এক শহর নাসিরিয়ায়। ২৭ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি অন্তত দেড়শো জন আহত হয়েছেন সেখানে। জ্বলছে বাগদাদও। আজ বাগদাদের রাস্তাতেও নামেন অসংখ্য তরুণ। মুখে মাস্ক, মাথায় হেলমেট। সেখানেও দুই বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।

রক্তে রঞ্জিত অশান্ত ইরাক, জ্বলছে ইরানি কনসুলেট নিহত ২৮

গত দুমাসে ইরাকের সরকার-বিরোধী আন্দোলনে মোট ৩৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এরই মধ্যে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীও। মঙ্গলবার বাগদাদে বিক্ষিপ্ত ভাবে তিনটি বিস্ফোরণ ঘটে। ছয়জন নিহত হয়েছিলেন। আজ ওই হামলার দায় নিয়েছে আইএস।

উল্লেখ্য, ইরাকে সরকার-বিরোধী ক্ষোভের সূত্রপাত আজ থেকে ১৬ বছর আগে। ২০০৩ সালে মার্কিন সেনা অভিযানে সাদ্দাম হোসেনের গদিচ্যুত হওয়ার পর থেকেই ইরাকের রাজধানী শহর ও দক্ষিণে শিয়া-অধ্যুষিত শহরগুলোতে ক্ষোভ ছড়াতে শুরু করে। ১৬ বছর আগের সেই পরিবর্তন পড়শি রাষ্ট্রের দরজা খুলে দেয় ইরাকে। অর্থনীতি, রাজনীতি, প্রতিরক্ষা- প্রতিটি ক্ষেত্রে আধিপত্য বিস্তার করতে থাকে ইরান। প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়াতে থাকে ইরাকিদের মধ্যে।

মাস দুয়েক আগে সেই ক্ষোভ প্রথম ‘আন্দোলনের’ চেহারা নেয়। পথে নামে বাগদাদবাসী। প্রথম দিকে আন্দোলনের প্রকাশ্য দাবি ছিল মূলত, চাকরি চাই, উন্নত মানের সরকারি পরিষেবা চাই। কিন্তু ক্রমশ আন্দোলনের চেহারা বদলাতে থাকে। দাবি ওঠে ‘এই সরকারই আর চাই না। এই সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত, এই সরকার ইরানের হাতের পুতুল।’

বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, ইরাকের পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন দলগুলি ইরানের কথা শুনে চলে। ইরানের বিরুদ্ধে এই ক্ষোভেরই প্রতিফলন গতকাল নাজাফের ঘটনা। তবে ইরানের কনসুলেটে হামলা এই প্রথম নয়। এ মাসের গোড়াতেই কারবালার ইরানি কনসুলেটে হামলা চালান ইরাকের বিক্ষোভকারীরা। সে বার নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে চার বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছিলেন।