মো: হাবিবুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি:
একের পর এক মামলা দিয়ে স্থানীয়দের হয়রানীর পাশাপাশি আতঙ্কে রেখেছে। শুধু তাই নয় নিজের বউয়ের হাত কেটে জন্মদাতা পিতার নামেও করেছে মামলা। আপন দুই ভাইকে বাড়ি ছাড়া করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দিয়ে। প্রতিবন্ধি ভাইয়ের লাশ ডোবায় পাওয়া গেলে এ ঘটনায় হত্যা মামলায় নাম জড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করেছে অনেকের কাছ থেকে।
ভুয়া দলিলে জমি দখলের অভিযোগ এনে ভূক্তভুগিরা এসিল্যান্ড অফিসে অভিযোগ দিলে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার এহেন কর্মকান্ডে এলাকার সাধরণ মানুষের মাধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অহেতুক মামলার ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও এবার তার জন্মদাতা পিতা অতিষ্ঠ হয়ে প্রতিকার চেয়ে আশি বছর বয়সে রোববার থানায় গিয়ে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন (৪৩) কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার বাইড়া গ্রামের সৈয়দুর রহমানের ছেলে।
অহেতুক মামলার ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও এবার তার জন্মদাতা পিতা অতিষ্ঠ হয়ে প্রতিকার চেয়ে আশি বছর বয়সে রোববার থানায় গিয়ে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন (৪৩) কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার বাইড়া গ্রামের সৈয়দুর রহমানের ছেলে।
অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেনের পিতা সৈয়দুর রহমান (৮০) বলেন, ‘দেলোয়ার আমার সন্তান এটা মনে হলেই মাঝে মাঝে কষ্ট পাই। ভুয়া দলিল দিয়ে মূল্যবান জায়গা লিখে নিয়ে নামজারি করে জমি বিক্রি করতে গেলে আমি দেলোয়ারকে বাধাঁ দেই। ফলে সে তার বউয়ের হাত কেটে আমার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা দেয়। আশি বছর বয়সেও একটি রাত আরামে ঘুমাতে পারি না তার মানসিক নির্যাতনে। প্রতিদিন অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও মেরে ফেলার হুমকিতে নিরুপায় হয়ে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এবার কোন প্রতিকার না পেলে বিষ খেয়ে মরা ছাড়া উপায় নাই।’
দেলোয়ারের বড় ভাই জাকির হোসেন বলেন, ‘দেলোয়ার আমাদের ভাই হয়েও আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে এবং সুকৌশলে আমাদেরকে দিয়ে অন্যের বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছে। এখন আমরা ভয়ে বাড়ি থাকি না অন্যত্র ভাড়া থাকি।’
একই গ্রামের শহিদুল হক বলেন, দেলোয়ার আমাদের জমি দখল করে নিয়ে উল্টো আমিও আমার ভাই ভাতিজাদের নামে চাঁদাবাজি মামলা করে (মামলা নং-৩৪০/১৯)। থানা পুলিশ ঘটনা মিথ্যা মর্মে কোর্টে রিপোর্ট দিলে দেলোয়ার তা নারাজি দিয়ে মামলা পিবিআইতে (পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন) নিয়ে যায়। এখন মামলা আপোসে যেতে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করছে দেলোয়ার।
সরেজমিনে গিয়ে ২০জন স্থানীয়দের সাথে কথা হলে, তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর দেলোয়রের প্রতিবন্ধি ভাই সুমনের লাশ পাওয়া যায় ডোবার মধ্যে। এ ঘটনায় আট জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০-১২জন দিয়ে থানায় হত্যা মামলা করে। অজ্ঞাত নামের স্থলে নাম দিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে নিরব চাঁদাবাজি করেছে সে। তারা আরো বলেন, শক্ত সিন্ডেকেট গড়ে জমি দখল, মিথ্যা মামলাসহ নানান বিতর্কিত কাজ করছে দেলোয়ার।
এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন বলেন, জমি জায়গা নিয়ে কিছু মামলা আছে। তবে আমি মিথ্যা মামলা করিনি। আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে এমন কয়েকজন আমার বন্ধু আছে। সময়ের প্রয়োজনে আমি তাদের সাথে উঠাবসা করি।
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, দেলোয়ারের বৃদ্ধ পিতা তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। সার্বিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।