ঢাকা ০২:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেদার‌ল্যান্ডের রাজধানীতে প্রথমবারের মতো মাইকে আজান

ধর্ম ও জীবন ডেস্ক:

নেদারল্যান্ডের রাজধানী আমস্টারডামে প্রথমবারের মতো মাইকে আজান দেওয়া হয়েছে। মাইকে আজানের সুর বেজে উঠলে আমস্টারডামের স্থানীয় নাগরিকরা বাইরে দাঁড়িয়ে তাদের মুঠোফোনে আবেগঘন মুহূর্তটি ধারণ করেন। তুরস্কের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে খবরটি জানা গেছে।

শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) আমস্টারডামের মুসলিমরা নামাজের আগে ব্লু মসজিদে প্রথমবারের মতো মাইকে আজানের ব্যবস্থা করে। মসজিদের মুখপাত্র নূরদীন উইল্ডম্যান আনাদোলু নিউজ এজেন্সিকে বলেন, বিভিন্ন প্রক্রিয়া পেরিয়ে মাইকে আজান দেওয়ার ব্যবস্থা করতে দেরি হয়ে যায়। কিন্তু এতদসত্ত্বেও আজান শোনে আমস্টারডামের মানুষজন অত্যন্ত আনন্দবোধ করছেন।

আজান শোনে মুগ্ধতায় স্তব্ধ স্থানীয়রা। ছবি: সংগৃহীত

ব্লু মসজিদ-কর্তৃপক্ষ এর আগের শুক্রবার (০৯ নভেম্বর) মাইকে আজানের ব্যবস্থা-পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু অজ্ঞাতপরিচয়ধারীরা অডিও সিস্টেমের কেবলটি কেটে দেওয়ায় সম্ভব হয়নি।

উইল্ডম্যান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, নেদারল্যান্ডসের ৭% মসজিদে বছরের পর বছর ধরে মাইকে আজানের ব্যবস্থা রয়েছে। এবং মসজিদগুলোতে উচ্চ স্বরে আজান দেওয়াও হয়। তবে রাজধানী আমস্টারডাম শহরে এই প্রথমবারের মতো আজান দেওয়া হয়েছে।

উইল্ডম্যান বলেন, স্থানীয়দের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কেউ কেউ এর সমালোচনা করলেও সাধারণভাবে প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক।

মসজিদে আগতরা এবং বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা স্থানীয়রা তাদের মুঠোফোনে আবেগঘন ও আনন্দপূর্ণ মুহুর্তটি রেকর্ড করে। উরসুলা ভ্যান স্প্রোঁসেন নামে এক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, তিনি আজান শুনে প্রথমবার মসজিদে আসেন। আর আজানের সুর-লহরী তার ভীষণ ভালো লেগেছে।

নেদারল্যান্ডসে আজান
পাশ্চাত্যের মুসলমানরা নামাজের আগে আজান দিতে দিয়ে বিভিন্ন ঝামেলার মুখোমুখি হন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কখনো কখনো যুক্তি দেয়, আজানের মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য কোনো অসুবিধা সৃষ্টি করবে।

নেদারল্যান্ডসের সংবিধান অনুযায়ী সে দেশে ধর্মের স্বাধীনতা সুরক্ষিত রয়েছে। সেখানে সব ধর্মের পক্ষে ১৯৮০ সালে বিধিবদ্ধ একটি আইনের মাধ্যমে ধর্মবিশ্বাসীদের উপাসনা করার আহ্বান জানানো হয়েছিল।

আইন অনুযায়ী স্থানীয় পৌরসভাগুলো আজান-ব্যবস্থাকে সময়কাল ও আয়তনে সীমাবদ্ধ করতে পারে; তবে এটি নিষিদ্ধ করতে পারে না।

অন্যদিকে ২০১৩ সালের এপ্রিলে সুইডেনের মুসলিমরা দক্ষিণ স্টকহোমের ফিত্তজা মসজিদে সর্বপ্রথম লাউড স্পিকারে আজান দিয়েছিলেন।

নেদারল্যান্ডসে ইসলাম
২০১০-১১ সালে পরিচালিত এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, ইসলাম নেদারল্যান্ডসের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম। দেশটির চারটি বড় শহর আমস্টারডাম, রটারড্যাম, দ্য হেগ ও উট্রেচট-এ বেশিরভাগ মুসলিম বসবাস করেন।

নেদারল্যান্ডসে ইসলামের আগমন ঘটে ১৬ শতাব্দীতে। তখন প্রাথমিকভাবে কিছু সংখ্যক ওসমানি (অটোম্যান) ব্যবসায়ী দেশটির বন্দর শহরগুলোতে বসতি স্থাপন শুরু করেছিলেন। ফলে ইমস্টারডামে ১৭ শতাব্দীতে নেদারল্যান্ডের প্রথম মসজিদ নির্মাণ হয়। মসজিদটি তখন অসম্পূর্ণভাবে তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমানে নেদারল্যান্ডসে প্রায় ৫০০টি মসজিদ রয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

নেদার‌ল্যান্ডের রাজধানীতে প্রথমবারের মতো মাইকে আজান

আপডেট সময় ০৫:৩৭:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২০

ধর্ম ও জীবন ডেস্ক:

নেদারল্যান্ডের রাজধানী আমস্টারডামে প্রথমবারের মতো মাইকে আজান দেওয়া হয়েছে। মাইকে আজানের সুর বেজে উঠলে আমস্টারডামের স্থানীয় নাগরিকরা বাইরে দাঁড়িয়ে তাদের মুঠোফোনে আবেগঘন মুহূর্তটি ধারণ করেন। তুরস্কের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে খবরটি জানা গেছে।

শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) আমস্টারডামের মুসলিমরা নামাজের আগে ব্লু মসজিদে প্রথমবারের মতো মাইকে আজানের ব্যবস্থা করে। মসজিদের মুখপাত্র নূরদীন উইল্ডম্যান আনাদোলু নিউজ এজেন্সিকে বলেন, বিভিন্ন প্রক্রিয়া পেরিয়ে মাইকে আজান দেওয়ার ব্যবস্থা করতে দেরি হয়ে যায়। কিন্তু এতদসত্ত্বেও আজান শোনে আমস্টারডামের মানুষজন অত্যন্ত আনন্দবোধ করছেন।

আজান শোনে মুগ্ধতায় স্তব্ধ স্থানীয়রা। ছবি: সংগৃহীত

ব্লু মসজিদ-কর্তৃপক্ষ এর আগের শুক্রবার (০৯ নভেম্বর) মাইকে আজানের ব্যবস্থা-পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু অজ্ঞাতপরিচয়ধারীরা অডিও সিস্টেমের কেবলটি কেটে দেওয়ায় সম্ভব হয়নি।

উইল্ডম্যান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, নেদারল্যান্ডসের ৭% মসজিদে বছরের পর বছর ধরে মাইকে আজানের ব্যবস্থা রয়েছে। এবং মসজিদগুলোতে উচ্চ স্বরে আজান দেওয়াও হয়। তবে রাজধানী আমস্টারডাম শহরে এই প্রথমবারের মতো আজান দেওয়া হয়েছে।

উইল্ডম্যান বলেন, স্থানীয়দের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কেউ কেউ এর সমালোচনা করলেও সাধারণভাবে প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক।

মসজিদে আগতরা এবং বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা স্থানীয়রা তাদের মুঠোফোনে আবেগঘন ও আনন্দপূর্ণ মুহুর্তটি রেকর্ড করে। উরসুলা ভ্যান স্প্রোঁসেন নামে এক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, তিনি আজান শুনে প্রথমবার মসজিদে আসেন। আর আজানের সুর-লহরী তার ভীষণ ভালো লেগেছে।

নেদারল্যান্ডসে আজান
পাশ্চাত্যের মুসলমানরা নামাজের আগে আজান দিতে দিয়ে বিভিন্ন ঝামেলার মুখোমুখি হন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কখনো কখনো যুক্তি দেয়, আজানের মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য কোনো অসুবিধা সৃষ্টি করবে।

নেদারল্যান্ডসের সংবিধান অনুযায়ী সে দেশে ধর্মের স্বাধীনতা সুরক্ষিত রয়েছে। সেখানে সব ধর্মের পক্ষে ১৯৮০ সালে বিধিবদ্ধ একটি আইনের মাধ্যমে ধর্মবিশ্বাসীদের উপাসনা করার আহ্বান জানানো হয়েছিল।

আইন অনুযায়ী স্থানীয় পৌরসভাগুলো আজান-ব্যবস্থাকে সময়কাল ও আয়তনে সীমাবদ্ধ করতে পারে; তবে এটি নিষিদ্ধ করতে পারে না।

অন্যদিকে ২০১৩ সালের এপ্রিলে সুইডেনের মুসলিমরা দক্ষিণ স্টকহোমের ফিত্তজা মসজিদে সর্বপ্রথম লাউড স্পিকারে আজান দিয়েছিলেন।

নেদারল্যান্ডসে ইসলাম
২০১০-১১ সালে পরিচালিত এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, ইসলাম নেদারল্যান্ডসের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম। দেশটির চারটি বড় শহর আমস্টারডাম, রটারড্যাম, দ্য হেগ ও উট্রেচট-এ বেশিরভাগ মুসলিম বসবাস করেন।

নেদারল্যান্ডসে ইসলামের আগমন ঘটে ১৬ শতাব্দীতে। তখন প্রাথমিকভাবে কিছু সংখ্যক ওসমানি (অটোম্যান) ব্যবসায়ী দেশটির বন্দর শহরগুলোতে বসতি স্থাপন শুরু করেছিলেন। ফলে ইমস্টারডামে ১৭ শতাব্দীতে নেদারল্যান্ডের প্রথম মসজিদ নির্মাণ হয়। মসজিদটি তখন অসম্পূর্ণভাবে তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমানে নেদারল্যান্ডসে প্রায় ৫০০টি মসজিদ রয়েছে।