মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ
রোজ শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ইং(মুরাদনগর বার্তা ডটকম):
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রাজা-চাপিতলা গ্রামে ১৯৭১ সলের ৩১ অক্টোবর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক হানাদারদের গুলিতে ৩ মুক্তিযোদ্ধাসহ ৫১ জন নর-নারী শহীদ হওয়ার ঘটনর ৪৫ বছরেও স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়নি।
চাপিতলা ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ ভূইয়া শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে চাপিতলা গ্রামে স্মৃতিসৌধ নির্মানের জন্য ২০১৪ সালের ৩১ আগষ্ট মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নিকট আবেদন করলে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ হ ম মোজাম্মেল হক বিষয়টি তালিকাভূক্ত করার জন্য সচিবকে নির্দেশ দেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এ, এম, মোক্তার হোসেন মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সমূহ সংরক্ষণ শীর্ষক প্রণয়ানাধীন প্রকল্পে বিষয়টি অন্তড়র্ভুক্ত করার জন্য ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেন (যার স্মারক নং ৪৫০)। কিন্তু এক বছর ৪ মাস অতিবাহিত হলেও মন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষিত হয়ে আছে।
জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক হানাদারদের অত্যাধুনিক অস্ত্রে সু-সজ্জিত একটি বিশাল বাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে ৩ মুক্তিযোদ্ধাসহ ৫১ জন নারী-পুরুষ শহীদ হয়। এ ঘটনায় ২০ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ অর্ধশত নারী-পুরুষ আহত, ২১ নারীর শ্লীতাহানি ২০৬টি বাড়ি ও অর্ধ-শতাধিক গবাদি পশু জ্বালিয়ে দেয়াসহ ব্যাপক লুন্ঠন করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাঙ্গালি জাতির গৌরবময় ইতিহাস ও বীরত্বে গাঁথা রাজা চাপিতলা গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মূখ সমরের স্মৃতি রক্ষার্থে স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও কোন স্মৃতিসৌধ নির্মাণ না হওয়ায় স্থানীয়দের এখন গণদাবি রাজা চাপিতলা গ্রামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, শহীদদের কবর সংরক্ষণ, যুদ্ধাহত ও শহীদ পরিবারদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ পূণর্বাসন করা হউক।
চাপিতলা ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ ভূইয়া জানান, শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে স্মৃতিসৌধ নির্মানের জন্য তিনি ২০০৬ সালের ১২ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেন। বিষয়টির প্রতিবেদন দেয়ার জন্য তিনি উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন (যার স্মারক নং ৩৯৭, তারিখ-৩০-০৩-২০০৬ইং)। ঐ বছরের ২৫ এপ্রিল উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা সরেজমিন পরিদর্শন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন (যার স্মারক নং ১১২, তারিখ-২০-০৪-২০০৬ইং)। এখানেই বিষয়টি ফাইল বন্দি হয়ে পড়ে।
পরবর্তীতে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব এর নিকট আবেদন করেন। সে মতে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা পূনরায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দেন (যার স্মারক নং ৪১৭, তারিখ-২৯-১১-২০০৭ইং)। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করেন (যার স্মারক নং ১৩২৬, তারিখ-৩১-১২-২০০৭ইং)। তৎকালীন জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুর রহমান বিষয়টির সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব এর নিকট পাঠান (যার স্মারক নং ৪৮৭, তারিখ-০২-০৩-২০০৮ইং)।এখানেই বিষয়টি ফাইলবন্দি হয়ে পড়েছিল।
এ বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কান্ডার মো: হারুন-অর-রশিদ জানান, আমরা মন্ত্রনালয়সহ বেশ কয়ক বার তদবির করেছি কোন ফলাফল পাইনায়। এখন স্থানীয় ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
মুরাদনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল কাইউম খসরু বলেন, ঐখানে যারা শহিদ হয়েছেন তাদের নামের তালিকা আমি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কান্ডারের কাছে চেয়েছি। নামের তালিকা পেলে অচিরেই চাপিতলা প্রইমারি স্কুল মাঠে শহিদদের নাম উল্ল্যেখ করে স্মৃতিসৌধ নির্মানের কাজ শেষ হবে।