ঢাকা ০১:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫, ২১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগর উপজেলা ভূমি অফিস সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেংকারীর অভিযোগ

সুমন সরকার:

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকা ঘুষ কেলেংকারীসহ ভূমি সংক্রান্ত সেবা প্রত্যাশীদেরকে নানাভাবে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার শ্রীকাইল মৌজায় খাস জমি বরাদ্ধ দেয়ার নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ওই টাকা ঘুষ গ্রহন করেন সার্ভেয়ার আরিফুল ইসলাম। প্রতারণা করে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে কোন কাজ করে না দেয়ায় ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী সাদেক মিয়া বাদী হয়ে ওই সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে ভূমি সংস্কার বোর্ডে অভিযোগ দাখিল করেছেন।

এ নিয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বুধবার তদন্ত কমিটি বিষয়টির উপর শুনানীর দিন ধার্য করেছে বলে জানা গেছে। এদিকে এর আগেও অসাধূ এ সার্ভেয়ারের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও রহস্য জনক কারনে তিনি এখনো বহাল তবিয়্যতে রয়েছে।

অভিযোগে জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আরিফুল ইসলাম এ অফিসে বসে গত আড়াই বছর যাবত ভূমি সংক্রান্ত সেবা প্রত্যাশীদেরকে নানা ভাবে হয়রানী করে আসছে। খারিজ কিংবা যেকোন ভূমি সংক্রান্ত সেবার জন্য তার কাছে গেলেই তিনি ইচ্ছেমতো হাতিয়ে নেন উৎকুচ। চাহিদা মতো অর্থ না পেলে তিনি কোন খারিজ কিংবা অন্যান্য কাগজে মোটেও স্বাক্ষর করেন না। জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার বাসিন্দা সার্ভেয়ার আরিফের রয়েছে কর্মস্থল এলাকায় বিপুল সংখ্যক লোকজন। রয়েছে দালাল সিন্ডিকেটও। যার ফলে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলার সাহস পায় না। গত আড়াই বছরের মধ্যে মুরাদনগর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ বদলী হলেও অদৃশ্য কারণে সার্ভেয়ার আরিফ রয়েছেন বহাল তবিয়্যতে। ইতিপুর্বে এ সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশসহ নানা সমালোচনা হলেও রহস্য জনক কারণে তাকে বদলী করতে পারছেনা প্রশাসন। এতে জেলা প্রশাসনের ভাবমুর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। এদিকে দুর্নীতিবাজ সার্ভেয়ার আরিফের বিরুদ্ধে ভূমি সংস্কার বোর্ডে লিখিত অভিযোগ করে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে অভিযোগকারী ব্যবসায়ী সাদেক মিয়া। তার অভিযোগের বিষয়ে প্রথমে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে শুনানীর কথা থাকলেও নানা ধরনের হুমকির কারণে তিনি সেখানে যেতে পারেননি।

পরে ভূক্তভোগী এ নিয়ে ভূমি সংস্কার বোর্ডে অবহিত করার পর মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমশিনারের কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে শুনানী করার জন্য জেলা প্রশাসক তদন্ত কমিটিকে নির্দেশ প্রদান করেন। অভিযোগকারী সাদেক মিয়া জানান, বছরখানেক আগে শ্রীকাইল মৌজাস্থিত বিশ^জিৎ চক্রবর্তীর বাড়ীর দক্ষিণ পাশে ৩০ শতাংশ ডোবা লিজ নিয়ে দেয়ার জন্য সার্ভেয়ার আরিফ তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা উৎকুচ গ্রহন করেন। পরে দীর্ঘদিন যাবত ঘুরাঘুরি করার পর ওই খাস ভূমি সাদেক মিয়াকে লীজ এনে না দেয়ায় তিনি তার দেয়া দুই লাখ টাকা ফেরত চান। কিন্তু ওই টাকা কর্মকর্তাদেরকে দিয়ে দিয়েছেন বলে জানান সার্ভেয়ার আরিফ। এতে ভূক্তভোগী তার টাকা ফেরত চাইলে তাকে উল্টো হুমকি ধমকি প্রদান করেন। বিষয়টি তিনি স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সাংবাদিকদেরকেও অবহিত করে রাখেন। যদিও ভূমি সংস্কার বোর্ডে লিখিত অভিযোগে সাদেক মিয়া সার্ভেয়ারকে দুই লাখ টাকা ঘুষ প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ করেননি। পরে সাংবাদিকদের কাছে ঘুষ কেলেংকারীর বিষয়সহ সার্বিক বিষয়ে অবহিত করে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগের বিষয়ে সার্ভেয়ার আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি সাদেক মিয়ার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা উৎকুচ গ্রহন করিনি, এটা একবারেই মিথ্যা বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন একটি অভিযোগ,কোন সেবা প্রত্যাশীকেও উৎকুচের জন্য হয়রানী করিনি, আমার কোন দালাল সিন্ডিকেটও নেই, এ সবই আমার বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত। তিনি বলেন, আমি কোন অনিয়মের সাথে জড়িত থাকলে গঠিত তদন্ত কমিটিই আমার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরের ৭ শহীদ পরিবারের মাঝে রমজানের উপহার পাঠালেন সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ

মুরাদনগর উপজেলা ভূমি অফিস সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেংকারীর অভিযোগ

আপডেট সময় ০১:২৬:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২০

সুমন সরকার:

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকা ঘুষ কেলেংকারীসহ ভূমি সংক্রান্ত সেবা প্রত্যাশীদেরকে নানাভাবে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার শ্রীকাইল মৌজায় খাস জমি বরাদ্ধ দেয়ার নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ওই টাকা ঘুষ গ্রহন করেন সার্ভেয়ার আরিফুল ইসলাম। প্রতারণা করে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে কোন কাজ করে না দেয়ায় ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী সাদেক মিয়া বাদী হয়ে ওই সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে ভূমি সংস্কার বোর্ডে অভিযোগ দাখিল করেছেন।

এ নিয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বুধবার তদন্ত কমিটি বিষয়টির উপর শুনানীর দিন ধার্য করেছে বলে জানা গেছে। এদিকে এর আগেও অসাধূ এ সার্ভেয়ারের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও রহস্য জনক কারনে তিনি এখনো বহাল তবিয়্যতে রয়েছে।

অভিযোগে জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আরিফুল ইসলাম এ অফিসে বসে গত আড়াই বছর যাবত ভূমি সংক্রান্ত সেবা প্রত্যাশীদেরকে নানা ভাবে হয়রানী করে আসছে। খারিজ কিংবা যেকোন ভূমি সংক্রান্ত সেবার জন্য তার কাছে গেলেই তিনি ইচ্ছেমতো হাতিয়ে নেন উৎকুচ। চাহিদা মতো অর্থ না পেলে তিনি কোন খারিজ কিংবা অন্যান্য কাগজে মোটেও স্বাক্ষর করেন না। জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার বাসিন্দা সার্ভেয়ার আরিফের রয়েছে কর্মস্থল এলাকায় বিপুল সংখ্যক লোকজন। রয়েছে দালাল সিন্ডিকেটও। যার ফলে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলার সাহস পায় না। গত আড়াই বছরের মধ্যে মুরাদনগর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ বদলী হলেও অদৃশ্য কারণে সার্ভেয়ার আরিফ রয়েছেন বহাল তবিয়্যতে। ইতিপুর্বে এ সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশসহ নানা সমালোচনা হলেও রহস্য জনক কারণে তাকে বদলী করতে পারছেনা প্রশাসন। এতে জেলা প্রশাসনের ভাবমুর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। এদিকে দুর্নীতিবাজ সার্ভেয়ার আরিফের বিরুদ্ধে ভূমি সংস্কার বোর্ডে লিখিত অভিযোগ করে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে অভিযোগকারী ব্যবসায়ী সাদেক মিয়া। তার অভিযোগের বিষয়ে প্রথমে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে শুনানীর কথা থাকলেও নানা ধরনের হুমকির কারণে তিনি সেখানে যেতে পারেননি।

পরে ভূক্তভোগী এ নিয়ে ভূমি সংস্কার বোর্ডে অবহিত করার পর মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমশিনারের কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে শুনানী করার জন্য জেলা প্রশাসক তদন্ত কমিটিকে নির্দেশ প্রদান করেন। অভিযোগকারী সাদেক মিয়া জানান, বছরখানেক আগে শ্রীকাইল মৌজাস্থিত বিশ^জিৎ চক্রবর্তীর বাড়ীর দক্ষিণ পাশে ৩০ শতাংশ ডোবা লিজ নিয়ে দেয়ার জন্য সার্ভেয়ার আরিফ তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা উৎকুচ গ্রহন করেন। পরে দীর্ঘদিন যাবত ঘুরাঘুরি করার পর ওই খাস ভূমি সাদেক মিয়াকে লীজ এনে না দেয়ায় তিনি তার দেয়া দুই লাখ টাকা ফেরত চান। কিন্তু ওই টাকা কর্মকর্তাদেরকে দিয়ে দিয়েছেন বলে জানান সার্ভেয়ার আরিফ। এতে ভূক্তভোগী তার টাকা ফেরত চাইলে তাকে উল্টো হুমকি ধমকি প্রদান করেন। বিষয়টি তিনি স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সাংবাদিকদেরকেও অবহিত করে রাখেন। যদিও ভূমি সংস্কার বোর্ডে লিখিত অভিযোগে সাদেক মিয়া সার্ভেয়ারকে দুই লাখ টাকা ঘুষ প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ করেননি। পরে সাংবাদিকদের কাছে ঘুষ কেলেংকারীর বিষয়সহ সার্বিক বিষয়ে অবহিত করে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগের বিষয়ে সার্ভেয়ার আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি সাদেক মিয়ার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা উৎকুচ গ্রহন করিনি, এটা একবারেই মিথ্যা বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন একটি অভিযোগ,কোন সেবা প্রত্যাশীকেও উৎকুচের জন্য হয়রানী করিনি, আমার কোন দালাল সিন্ডিকেটও নেই, এ সবই আমার বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত। তিনি বলেন, আমি কোন অনিয়মের সাথে জড়িত থাকলে গঠিত তদন্ত কমিটিই আমার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে।