শামীম আহম্মেদ:
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের আড়ালিয়া গ্রামে রোকসানা আক্তার নামে এক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। কিন্তুু নিহতের স্বজনদের দাবি তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার স্বামী আবুল হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ।
এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আনুমানিক দেড় বছর পূর্বে ধামঘর গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে রোকসানা আক্তারকে (২০) নগদ এক লক্ষ টাকা ও স্বর্ণালংকার যৌতুক নিয়ে বিয়ে করেন আড়ালিয়া গ্রামের জয়দল হোসেনের ছেলে আবুল হোসেন (২৫)।
সাম্প্রতিক আবুল হোসেন তার বসত ভিটায় দালান নির্মাণের কাজে হাত দেয়। নির্মান কাজ সম্পন্ন করতে টাকার সমস্যা দেখা দিলে স্ত্রী রোকসানা আক্তারকে বাবার বাড়ি থেকে ২ লক্ষ টাকা আনার জন্য চাপ দেয় স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন। চাপ সহ্য করতে না পেরে বাপের বাড়ি থেকে দু’দফায় এক লক্ষ টাকা এনে দেয় রোকসানা। এতেও পরিবারের লোকজন সন্তুষ্টি না হয়ে আরো এক লাখ টাকার জন্য তাকে চাপ দিলে সে অপরাগতা প্রকাশ করে। যার ফলে রোকসানা আক্তারের উপর নেমে আসে অত্যাচার নির্যাতন। গত শুক্রবার দিনেও স্বামী, স্বশুর, স্বাশুরি ও ননদরা মিলে তাকে মারধর করে এবং শুক্রবার গভীর রাতে তাদের বাড়ির ওঠানেই লাশ মিলে রোকসানার।
নিহত রোকসানা আক্তারের দুই ভাই সাইদুল ইসলাম ও আল-আমিন জানান, বোনের সংসারে অশান্তি দূর করতে ২ বারে এক লক্ষ টাকা ভগ্নিপতিকে দেই। আরো ১ লক্ষ টাকার জন্য তার স্বামী, স্বশুর, স্বাশুরি ও ননদরা মিলে তাকে প্রায়ই নির্যাতন করতো। শুক্রবার রাত আনুমানিক ৩টায় আবুল হোসেনের পরিবারের লোকজন আমাদেরকে জানায়, তোমার বোন মারা গেছে। আমরা গিয়ে দেখি আমার বোনের লাশ তাদের বাড়ির ওঠানে পড়ে আছে। আমরা ধারণা করছি, আমার বোন রোকসানা আক্তারকে নির্যাতন শেষে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে বাড়ির আঙ্গিনায় লাশ ফেলে রেখেছে। উক্ত ঘটনায় রোকসানা আক্তারের স্বামী অভিযুক্ত আবুল হোসেন পুলিশী হেফাজতে এবং তার পরিবারের অন্যান্য লোকজন পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মুরাদনগর থানার ওসি (তদন্ত) নাহিদ আহমেদ জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্বামী আবুল হোসেনকে আটক করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য থানায় এনেছি। নিহতের ভাই সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৫ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছে।