শামীম আহম্মেদ, মুরাদনগরঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন ঐতিহ্যবাহী সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবার শরীফের ঐতিহাসিক ২ দিন ব্যাপী ইছালে ছাওয়াব মাহ্ফিল শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বাদ জোহর কোরআন তেলাওয়াত, হামদ, নাতে রাসুল (সা.) পরিবেশনের পর দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে ইছালে ছাওয়াবের মাহফিল আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেন দরবার শরীফের পীর ও বাংলাদেশ তা’লীমে হিযবুল্লাহ’র আমীর অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা মাহমুদুর রহমান।

বয়ান কালে অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা মাহমুদুর রহমান বলেন, পৃথিবীর মানুষকে কল্যাণকর পথের সন্ধান দিতে যত নবী-রাসুলের আগমন হয়েছে তন্মধ্যে একমাত্র হযরত মুহাম্মদ (সা:)’ই একমাত্র নবী যিনি বিশ্বব্যাপী মিশন ভিশন নিয়ে প্রেরিত হয়েছেন। আর হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর জীবনী যেভাবে চুলচেরা বিশ্লেষিত ও আলোচিত হয়েছে পৃথিবীতে আর কারো জীবনী এত বিশ্লেষিত ও আলোচিত হয়নি। মুসলিম, অমুসলিম কোন গবেষক আলোচক তার পবিত্র জীবন জিন্দেগীর মধ্যে প্রাক নবুয়াত এবং নবুয়াতের পরের কোন অংশেই মানুষেরে অকল্যান হয় কিংবা মানবতার অপমান হয় এরকম কোন কিছুই পাননি। সঙ্গত কারনে হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর যাবতীয় আচার আচরণ আন্তর্জাতিক মানেরও অনেক উর্ধ্বে। আমরা সকলে যদি আমাদের জীবনের সকল পর্যায়ে পথে-ঘাটে, মাঠে প্রান্তরে, সমাজে-সংসারে, অফিসে-আদালতে অর্থাৎ জীবনের সর্বক্ষেত্রে তাঁর অনুসরণ করি তাহলে আর কোন দু:খ-দুর্দশা অভাব-অভিযোগ, অনুযোগ, মান-অভিমান, অন্যায়-অশান্তি ইত্যাদি কোন কিছুই থাকবে না। এ গ্যারান্টি স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে দিয়েছেন।

বাদ মাগরিব ঐতিহাসিক সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবার শরীফের প্রধান আকর্ষন বর্তমান গদ্দিনশীন পীর অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা মাহমুদুর রহমান কর্তৃক পেশকৃত চার তরিকার গুরত্বপূর্ণ জিকিরের তালীম প্রদান করা হয়। এতে সারা দেশ থেকে আগত লক্ষাধিক আশিকীন, যাকেরীন, মুহিব্বীন ও খলিফাবৃন্দসহ দেশ-বিদেশের অসংখ্য ওলামায়ে কেরাম, পীর-মাশায়েখগণ উপস্থিত ছিলেন। ঐতিহাসিক এ ২ দিন ব্যাপী ইছালে ছাওয়াব মাহফিলকে কেন্দ্র করে দরবার শরীফের পক্ষ থেকে অসংখ্য তোরণ, বিশাল পেন্ডেল ও ষ্টেইজ ছাড়াও আগত মেহমানদের থাকা, খাওয়া, অজু, গোছল, টয়লেট ও গাড়ী পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে

নবীপুর শ্রীকাইল ও কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কের মেটংঘর থেকে শ্রীকাইল পর্যন্ত রাস্তাটি যানযট মুক্ত রাখতে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, চিকিৎসা সেবার জন্য ফ্রি ক্যাম্প, সাংবাদিকদের জন্য তথ্য কেন্দ্র, মাদরাসা ময়দান এবং প্রবেশ রাস্তাকে আগের চেয়ে অনেকাংশে বৃদ্ধি করা হয়েছে। পুরো মাহফিলকে নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় প্রশাসনসহ মাদরাসার একদল প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চৌকস ছাত্রবৃন্দ স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। ১ম দিনে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনসাধারণ সমাবেত হয়েছেন। এ মাহফিলকে কেন্দ্র করে আশ-পাশের এলাকাগুলো ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।

শুক্রবার মাহফিলে দেশ-বিদেশের দেশ-বরেণ্য পীর-মাশায়েখগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক নেতৃবৃন্দসহ কয়েক লক্ষাধিক ভক্তবৃন্দের সমাগম হবার সম্ভাবনা রয়েছে।

কাল (শনিবার) বাদ ফজর তালিম, যিকির-আযকার শেষে বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করে আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ২ দিন ব্যাপী ইছালে ছাওয়াব মাহফিল শেষ হবে।