ঢাকা ০৫:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে রোগীর ভিড় সামলাচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিক কর্মীরা

শামীম আহম্মেদ, মুরাদনগর:

গত মাসের ২৪ তারিখ ঢাকা ফেরত গার্মেন্টস কর্মী রফিয়া বেগম দেশে করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বোড়ারচর গ্রামে নিজ বাড়িতে চলে এসেছেন। কদিন বাদে হালকা জ্বরে আক্রান্ত হলে একটু চিন্তিত হয়ে পড়েন। তিনি শুনেছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা হাসপাতাল গুলোতে জ্বরের চিকিৎসা নাকি আপাতত বন্ধ।

চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত কেন্দ্র গুলোতেও জ্বরের রোগী দেখছেন না কেউ। অন্যথায় বাড়ির পাশের কমিউনিটি ক্লিনিকে (সিসি) যেতে হয়েছে তাকে। সেখানে দায়িত্বরত স্বাস্থ্য কর্মী (সিএইচসিপি) করোনা প্রতিরোধক নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়াই তাকে চিকিৎসা দিয়েছেন। কমিউনিটি ক্লিনিক (সিসি) থেকে প্রাপ্ত চিকিৎসাতেই রফিয়া বেগম সুস্থ্য হয়েছেন।

রফিয়া বেগমকে চিকিৎসা দেওয়া কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) শাহজাহান বারী ভূঁইয়া সুমন বলেন, তাদের জন্য কোনো করোনা প্রতিরোধক নিরাপত্তা সামগ্রী এখনো দেওয়া হয়নি। মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকলেও কোনো প্রকার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পোষাক (পিপিই), গ্লাভস কিংবা মাস্ক কিছুই হাতে পাননি তাঁরা। ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রোগী দেখতে হেেচ্ছ। মৌসুম পরিবর্তনের কারণে আগত রোগীদের বেশির ভাগই জ্বরে আক্রান্ত। এখন এদের মধ্যে কেউ যদি করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকে তবুও তার রোগ চিহ্নিত কিংবা চিকিৎসা না দেবার কোন সুযোগ সিএইচসিপিদের নেই। এ ছাড়া চিকিৎসা দিতে গিয়ে নিজে এবং আরো অনেকে করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা তো আছেই।

উপজেলায় ৪৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক আছে বলে নিশ্চিত করেছেন সিএইচসিপি মুরাদনগর উপজেলার এসোসিয়েশনের সভাপতি জালাল উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘প্রাইভেট ক্লিনিক ও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রোগীরা আমাদের কাছেই ভিড় করছে চিকিৎসার জন্য। আগে যেখানে গড়ে প্রতিদিন ৩০-৪০ জন রোগী দেখেছি এখন দেখতে হচ্ছে তার দ্বিগুণ। তিনি আরো জানান, ‘এসব রোগীদের বেশিরভাগই জ্বর, কাশি, গলা ব্যাথাসহ করোনার প্রাথমিক উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছে। যেহেতু উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এখনো কোনো ধরণের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী পাননি তাই নিরুপায় হয়েই ঝুঁকি নিয়ে রোগী দেখছেন তারা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ নাজমুল আলম উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘সিএইচসিপিদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে আমরাও কনসার্ন। তাদেরকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী সরবরাহের সিদ্ধান্ত আমরা ইতোমধ্যে নিয়েছি। শীঘ্রই বিভিন্ন নিরাপত্তা সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে।’ তবে কবে নাগাদ সকল সিএইচসিপি করোনা প্রতিরোধক নিরাপত্তা উপকরণ হাতে পাবে সেটা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি তিনি।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে কৃষক ও উদ্যোক্তাদের দিনব্যাপী কর্মশালা

মুরাদনগরে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে রোগীর ভিড় সামলাচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিক কর্মীরা

আপডেট সময় ০৪:০৬:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ এপ্রিল ২০২০

শামীম আহম্মেদ, মুরাদনগর:

গত মাসের ২৪ তারিখ ঢাকা ফেরত গার্মেন্টস কর্মী রফিয়া বেগম দেশে করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বোড়ারচর গ্রামে নিজ বাড়িতে চলে এসেছেন। কদিন বাদে হালকা জ্বরে আক্রান্ত হলে একটু চিন্তিত হয়ে পড়েন। তিনি শুনেছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা হাসপাতাল গুলোতে জ্বরের চিকিৎসা নাকি আপাতত বন্ধ।

চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত কেন্দ্র গুলোতেও জ্বরের রোগী দেখছেন না কেউ। অন্যথায় বাড়ির পাশের কমিউনিটি ক্লিনিকে (সিসি) যেতে হয়েছে তাকে। সেখানে দায়িত্বরত স্বাস্থ্য কর্মী (সিএইচসিপি) করোনা প্রতিরোধক নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়াই তাকে চিকিৎসা দিয়েছেন। কমিউনিটি ক্লিনিক (সিসি) থেকে প্রাপ্ত চিকিৎসাতেই রফিয়া বেগম সুস্থ্য হয়েছেন।

রফিয়া বেগমকে চিকিৎসা দেওয়া কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) শাহজাহান বারী ভূঁইয়া সুমন বলেন, তাদের জন্য কোনো করোনা প্রতিরোধক নিরাপত্তা সামগ্রী এখনো দেওয়া হয়নি। মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকলেও কোনো প্রকার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পোষাক (পিপিই), গ্লাভস কিংবা মাস্ক কিছুই হাতে পাননি তাঁরা। ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রোগী দেখতে হেেচ্ছ। মৌসুম পরিবর্তনের কারণে আগত রোগীদের বেশির ভাগই জ্বরে আক্রান্ত। এখন এদের মধ্যে কেউ যদি করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকে তবুও তার রোগ চিহ্নিত কিংবা চিকিৎসা না দেবার কোন সুযোগ সিএইচসিপিদের নেই। এ ছাড়া চিকিৎসা দিতে গিয়ে নিজে এবং আরো অনেকে করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা তো আছেই।

উপজেলায় ৪৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক আছে বলে নিশ্চিত করেছেন সিএইচসিপি মুরাদনগর উপজেলার এসোসিয়েশনের সভাপতি জালাল উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘প্রাইভেট ক্লিনিক ও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রোগীরা আমাদের কাছেই ভিড় করছে চিকিৎসার জন্য। আগে যেখানে গড়ে প্রতিদিন ৩০-৪০ জন রোগী দেখেছি এখন দেখতে হচ্ছে তার দ্বিগুণ। তিনি আরো জানান, ‘এসব রোগীদের বেশিরভাগই জ্বর, কাশি, গলা ব্যাথাসহ করোনার প্রাথমিক উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছে। যেহেতু উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এখনো কোনো ধরণের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী পাননি তাই নিরুপায় হয়েই ঝুঁকি নিয়ে রোগী দেখছেন তারা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ নাজমুল আলম উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘সিএইচসিপিদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে আমরাও কনসার্ন। তাদেরকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী সরবরাহের সিদ্ধান্ত আমরা ইতোমধ্যে নিয়েছি। শীঘ্রই বিভিন্ন নিরাপত্তা সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে।’ তবে কবে নাগাদ সকল সিএইচসিপি করোনা প্রতিরোধক নিরাপত্তা উপকরণ হাতে পাবে সেটা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি তিনি।