তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্কঃ
বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকরা সম্পূর্ণ আলাদা পরিবেশে কাজ করছে। স্পেনের একজন সাংবাদিক ইরানে কর্মরত সাংবাদিকের মতো নিরাপত্তাজনিত বিষয়ে মুখোমুখি হন না। যখন ডিজিটাল সিকিউরিটির কথা আসে তখন প্রত্যেকেরই ডাটা, যোগাযোগ ও তাদের সোর্সগুলোর নিরাপত্তার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
করোনা মহামারী চলাকালীন সময়ে আমরা যখন নতুন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছি, তখন আমাদের বিভিন্ন প্রতিবেদন সম্পাদনার জন্য আমরা ইন্টারনেটের উপর বেশি নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। আমরা যা করছি ও সহকর্মীরা যা করছে তা নিশ্চিত করা, আমাদের সোর্সগুলোর নিরাপত্তার জন্য আপডেট টুলস ব্যবহার করা ডিজিটাল নিরাপত্তার সঠিক অনুশীলন।
আইজেনেট-এর এক প্রতিবেদনে ড্রপবক্সের নিরাপত্তা বিষয়ক পরিচালক রাজন কাপুর এবং আইসিএফজের ডাটা জার্নালিজম এজেন্সির প্রধান ভোল্ট ডাটা ল্যাবের পরামর্শক সেরজিও স্পাগনোলো বলেন, সাংবাদিকরা তথ্য নিরাপত্তার জন্য শেয়ার টিপস ও টুলস ব্যবহার করতে পারে।
যা করবেন
টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন ব্যবহার করুন : এটির নিরাপত্ত প্রথম ধাপ। তবে কাপুর এ বিষয়ে বলেন, লগইনে টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন ব্যবহার করলে হ্যাকার আপনার অ্যাকাউন্টে ঢুকতে চাইলে বা পাসওয়ার্ড ভাঙ্গতে চাইলে বাধা প্রদান করবে। তিনি আরও বলেন, রিকোভারি ম্যাথটে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহার করলে আপনি কখনও একাউন্ট থেকে হারিয়ে যাবেন না। আপনি যখন এ ফিচারটি ব্যবহার করবেন তখন অথেনটিকেশন অ্যাপ আপনাকে এসএমএস-এর মাধ্যমে জানিয়ে দেবে।
ডাটার সুরক্ষা করুন :কাপুর বলেন, এনক্রিপশন হলো আপনার ডাটা নেওয়া ও কি ব্যবহার করছেন তার ধারনা। এর অর্থ হলো- কেউ যদি ডাটা অ্যাক্সেস করতে সক্ষম হয় তাহলে এটি ‘কি’ (key) ছাড়া রিড করতে পারবে না। আপনার ডাটা সুরক্ষিত রয়েছে তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি পরিসেবা নিশ্চিত করতে সরবরাহকারীর সঙ্গে দুইটি জিনিস নিশ্চিত করা উচিত; ট্রানজিকশনে এনক্রিপশন ও রেস্টে এনক্রিপশন। ট্রানজিকশন এনক্রিপশন নিশ্চিত করে যে, এটি যখন আপনার ডিভাইসটিতে ক্লাউড পরিসেবা সরবরাহকারীর কাছে চলে যায় এবং ইন্টারনেট জুড়ে বিচরণ করে তখন ডাটা এনক্র্বি করা হয়। রেস্ট এনক্রিপশন এর অর্থ হলো- সরবরাহকারীর কাছে যখন আপনার ডাটা সংরক্ষিত থাকে তখন তা এনত্রিপ্ট করে।
ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার করুন :ভিপিএন আপনাকে মধ্যস্থতাকারী সার্ভারের মাধ্যমে সুরক্ষিতভাবে ব্রাউজিংয়ের অনুমতি দেয়। ইন্টারনেটে সমস্ত ডাটা প্রক্সি সার্ভারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। আপনার ব্যক্তিগত ডাটায় কেউ প্রবেশ করতে চাইলে তাকে বাধা প্রদান করে এবং আপনার আইপির গোপনীয়তা রক্ষা করে।
কতজন আপনার একাউন্টে প্রবেশ করেবে তার সংখ্যা নির্ধারন করুন :কাপুর বলেন,একটি জিনিস সত্যি আপনি করতে চাইবেন না আর তা হলো আপনার একাউন্ট কারও সঙ্গে শেয়ার করা। যা একাধিক ব্যক্তির মধ্যে একটি একাউন্ট স্থাপন করে। আর একটি বিষয় হলো- আপনি জানেন না যে ঐ একাউন্টে কে লগইন করে প্রবেশ করছে। অনেক সেবাগ্রহণ করতে গেলে মেইল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টসহ আরও অনেক কিছুর লিংক সংযুক্ত করতে বলে। বিশ্বস্ত সেবাগুলো ব্যতীত অন্য কোনো সেবায় ডাটা শেয়ার থেকে বিরত থাকুন ও সচেতন হোন।
যা করবেন না
ব্যক্তিগত ডাটার লিংক শেয়ার করবেন না :সাংবাদিকরা সাধারনত বিভিন্ন তথ্য সহকর্মী ও সম্পাদকের সঙ্গে শেয়ার করে থাকে। তবে এটি গুরুত্বপূর্ণ যে, আপনার নথি বা তথ্যে কার কার প্রবেশ অনুমতি রয়েছে এবং তারা কতটা দেখতে পাবে তা নিরীক্ষণ করা। স্পাগনোলো ও কাপুরের পরামর্শ হলো- গুরুত্বপূর্ণ বা ব্যক্তিগত তথ্য সম্পর্কিত নথি উন্মুক্ত অবস্থায় শেয়ার না করে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ব্যক্তির উদ্দেশ্যে শেয়ার করুন। এ পদ্ধতিতে ব্যবকহারে আপনার তথ্য শেয়ার হতে বাধা দিবে।
যেকোনো পরিসেবার পাসওয়ার্ড পুনরায় ব্যবহার করবেন না :সাইটগুলোতে হ্যাকারতের হাত থেকে আপনার পাসওয়ার্ডের এক্সেস এড়াতে একই পাসওয়ার্ড পুনরায় ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। কাপুর বলেছেন, হ্যাকাররা যদি আপনার ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড আয়ত্ব করতে পারে তবে পরবর্তীতে হ্যাকার আবার ঐ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারে। স্পাগনোলো বলেন, ১০ সংখ্যার একটি কঠিন পাসওয়ার্ড তৈরি করতে পারেন যা আপনার পাসওয়ার্ডের নিরাপত্তায় বেশ কাজের হবে। সূত্র : আইজেনেট ডটকম