ঢাকা ০৫:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়িতে হামলা ভাংচুর লুটপাট

শামীম আহম্মেদ, মুরাদনগরঃ

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মরা বাড়িতে হামলা চালিয়ে মহিলা ও দুই প্রতিবন্ধীসহ ৬ জনকে আহত করে ভাংচুর এবং লুটপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিরূপায় হয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে প্রাণে বঁাচেন ওই পরিবারটি।

উক্ত ঘটনায় মামলা হলে আসামীরা মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকি ও মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

শনিবার দুপুরে প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের সহায়তা চায় ভূক্তভোগি পরিবারটি।

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের শুশুন্ডা গ্রামে এ নির্মম ঘটনা ঘটে।

মামলার সূত্র, ভূক্তভোগি, পুলিশ ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শুশুন্ডা গ্রামের মৃত মোসলেম মিয়ার স্ত্রী ঝরণা বেগম (৫৭) গত ১৫ এপ্রিল বুধবার রাতে মারা যায়। বৃহস্পতিবার সকালে জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়। মৃত্যুর খবর পেয়ে আত্মীয়স্বজণসহ এলাকার লোকজন ওই বাড়িতে জড়ো হয়। পরে নিহত ঝরণা বেগমের রেখে যাওয়া ব্যবহৃত জিনিসপত্র নিয়ে স্বজনদের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এ সময় একই গ্রামের আলাল মিয়ার স্ত্রী ইয়াছমিনও তাদের সাথে তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পরে। বিষয়টি জানাজানি হলে আলাল মিয়া দলবলে রামদা, হকিস্টিক, লোহার রড, পাইপ ও লাঠিসোটা নিয়ে হানু মিয়া ও কেনু মিয়ার বাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে তাদের ঘরের বেড়া, ফ্রিজ, আসবাবপত্র ব্যাপক ভাংচুর করে। এতে সাথী আক্তার, মরিয়ম বেগম, হানু মিয়া, সেলিম মিয়া, প্রতিবন্ধী শাহজাহান মিয়া ও সোহেল মিয়া আহত হয়। ঘটনার সময় হামলাকারীরা নগদ ২৫ হাজার টাকা, ফ্রিজে থাকা মাংসসহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী লুট করে নেয়। তখন স্কুলে পড়–য়া ছাত্রদের বই পানিতে ফেলে দেয়। তাদের ভয়ে ওই বাড়ির শিশুদেরকে পাশের শাহ আলমের বাড়িতে লুকিয়ে রাখে।

মামলার বাদী সাথী আক্তার বলেন, সামান্য তুচ্ছ কথা কাটাকাটির ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুশুন্ডা গ্রামের মৃত ধনু মিয়ার ছেলে আলাল মিয়া দলবলে রামদা, হকিষ্টিক, লোহার রড, পাইপ ও লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের মরা বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। আমার মাথায় ও দুই হাতে রামদা দিয়ে কুপায়। বাড়ির আরো ৫ জনকে বেধরক পিটিয়ে আহত করে। তাদের এ বর্বোরিত হামলা থেকে প্রাণে বাচঁতে আশ-পাশের বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেই। নিরুপায় হয়ে আমরা ৯৯৯ নম্বারে ফোন দেই। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসার বিষয়টি অঁাচ করতে পেরে আলাল ও তার দলবল আলমারি ভেঙ্গে ২৫ হাজার টাকা, ফ্রিজ ভেঙ্গে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে চলে যায়। পুলিশ আসলে আমরা লুকিয়ে থাকা বিভিন্ন বাড়ি থেকে বের হয়ে আসি। পুলিশ আমাদেরকে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে থানায় আসতে বলেন। আমরা চিকিৎসা নিতে মুরাদনগর হাসপাতালে গেলে ওখানে গিয়েও আলাল ও তার দলবল আমার ভাই জুয়েল মিয়াকে মারধর করে। এ ঘটনার মূলহোতা সন্ত্রাসী আলালসহ নামধারী ৮জন ও অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করায় ক্ষীপ্ত হয়ে আমাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দিচ্ছে এবং মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমরা এখন চরম আতংকের মধ্যে বসবাস করছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানায়, গত ৫০ বছরেও এমন বর্বোরিচিত ঘটনা ঘটেনি। তবে পুলিশ তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে না আসলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতো। এ হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে পুনরায় নিরীহ মানুষের উপরে এ ঘটনা ঘটবে।

মুরাদনগর থানার ওসি একেএম মনজুর আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে। ভূক্তভোগি পরিবারটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে ওই দিনই মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার অধিকতর তদন্ত চলছে

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে কৃষক ও উদ্যোক্তাদের দিনব্যাপী কর্মশালা

মুরাদনগরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়িতে হামলা ভাংচুর লুটপাট

আপডেট সময় ১১:০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ মে ২০২০

শামীম আহম্মেদ, মুরাদনগরঃ

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মরা বাড়িতে হামলা চালিয়ে মহিলা ও দুই প্রতিবন্ধীসহ ৬ জনকে আহত করে ভাংচুর এবং লুটপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিরূপায় হয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে প্রাণে বঁাচেন ওই পরিবারটি।

উক্ত ঘটনায় মামলা হলে আসামীরা মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকি ও মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

শনিবার দুপুরে প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের সহায়তা চায় ভূক্তভোগি পরিবারটি।

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের শুশুন্ডা গ্রামে এ নির্মম ঘটনা ঘটে।

মামলার সূত্র, ভূক্তভোগি, পুলিশ ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শুশুন্ডা গ্রামের মৃত মোসলেম মিয়ার স্ত্রী ঝরণা বেগম (৫৭) গত ১৫ এপ্রিল বুধবার রাতে মারা যায়। বৃহস্পতিবার সকালে জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়। মৃত্যুর খবর পেয়ে আত্মীয়স্বজণসহ এলাকার লোকজন ওই বাড়িতে জড়ো হয়। পরে নিহত ঝরণা বেগমের রেখে যাওয়া ব্যবহৃত জিনিসপত্র নিয়ে স্বজনদের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এ সময় একই গ্রামের আলাল মিয়ার স্ত্রী ইয়াছমিনও তাদের সাথে তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পরে। বিষয়টি জানাজানি হলে আলাল মিয়া দলবলে রামদা, হকিস্টিক, লোহার রড, পাইপ ও লাঠিসোটা নিয়ে হানু মিয়া ও কেনু মিয়ার বাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে তাদের ঘরের বেড়া, ফ্রিজ, আসবাবপত্র ব্যাপক ভাংচুর করে। এতে সাথী আক্তার, মরিয়ম বেগম, হানু মিয়া, সেলিম মিয়া, প্রতিবন্ধী শাহজাহান মিয়া ও সোহেল মিয়া আহত হয়। ঘটনার সময় হামলাকারীরা নগদ ২৫ হাজার টাকা, ফ্রিজে থাকা মাংসসহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী লুট করে নেয়। তখন স্কুলে পড়–য়া ছাত্রদের বই পানিতে ফেলে দেয়। তাদের ভয়ে ওই বাড়ির শিশুদেরকে পাশের শাহ আলমের বাড়িতে লুকিয়ে রাখে।

মামলার বাদী সাথী আক্তার বলেন, সামান্য তুচ্ছ কথা কাটাকাটির ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুশুন্ডা গ্রামের মৃত ধনু মিয়ার ছেলে আলাল মিয়া দলবলে রামদা, হকিষ্টিক, লোহার রড, পাইপ ও লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের মরা বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। আমার মাথায় ও দুই হাতে রামদা দিয়ে কুপায়। বাড়ির আরো ৫ জনকে বেধরক পিটিয়ে আহত করে। তাদের এ বর্বোরিত হামলা থেকে প্রাণে বাচঁতে আশ-পাশের বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেই। নিরুপায় হয়ে আমরা ৯৯৯ নম্বারে ফোন দেই। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসার বিষয়টি অঁাচ করতে পেরে আলাল ও তার দলবল আলমারি ভেঙ্গে ২৫ হাজার টাকা, ফ্রিজ ভেঙ্গে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে চলে যায়। পুলিশ আসলে আমরা লুকিয়ে থাকা বিভিন্ন বাড়ি থেকে বের হয়ে আসি। পুলিশ আমাদেরকে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে থানায় আসতে বলেন। আমরা চিকিৎসা নিতে মুরাদনগর হাসপাতালে গেলে ওখানে গিয়েও আলাল ও তার দলবল আমার ভাই জুয়েল মিয়াকে মারধর করে। এ ঘটনার মূলহোতা সন্ত্রাসী আলালসহ নামধারী ৮জন ও অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করায় ক্ষীপ্ত হয়ে আমাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দিচ্ছে এবং মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমরা এখন চরম আতংকের মধ্যে বসবাস করছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানায়, গত ৫০ বছরেও এমন বর্বোরিচিত ঘটনা ঘটেনি। তবে পুলিশ তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে না আসলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতো। এ হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে পুনরায় নিরীহ মানুষের উপরে এ ঘটনা ঘটবে।

মুরাদনগর থানার ওসি একেএম মনজুর আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে। ভূক্তভোগি পরিবারটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে ওই দিনই মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার অধিকতর তদন্ত চলছে