ঢাকা ০১:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে ভিন্ন আয়োজনে জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের ১২১ তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন

মোঃ ইমন মিয়া, বাঙ্গরা বাজার থানা প্র‌তি‌নি‌ধিঃ

যারে হাত দিয়ে মালা দিতে পার নাইকেন মনে রাখ তারে,ভুলে যাও তারে ভুলে যাও একেবারে। কাজী নজরুল ইসলামের এই চয়নটুকু চিরভাস্বর হয়ে আছে কুমিল্লাবাসীর হৃদয়ে। কুমিল্লার মাটি ও মানুষের সঙ্গে নজরুলের রয়েছে অটুট বন্ধন। 

বাংলা সাহিত্যের ‘ধুমকেতু’ কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রেম-বিরহ, বিবাহ, সংগীত-সাহিত্য চর্চা ও ইংরেজ বিরোধী সংগ্রামের অসংখ্য স্মৃতি জড়িয়ে আছে শিক্ষা ও সাহিত্যের পাদপিঠ কুমিল্লার সঙ্গে।১৯২১ সালের এপ্রিল মাসে প্রথম কুমিল্লায় আসেন কবি নজরুল। সে যাত্রায় মুরাদনগরের দৌলতপুর অবস্থান করেন তিন মাস।

১৯২১-১৯২৩ সালের মধ্যে কবি কাজী নজরুল ইসলাম কুমিল্লায় আসেন মোট ৫ বার এবং ১১ মাস অতিবাহিত করেন এই কুমিল্লায়।১৯২১ সালে ৬ এপ্রিল কুমিল্লা মুরাদনগরে আলী আকবর খা’র সঙ্গে কবি নজরুল ইসলাম দৌলতপুর আসেন।দৌলতপুর গ্রামের মুন্সি বাড়ির আব্দুল খালেক মুন্সি সাহেবের মেয়ে সৈয়দা খাতুনের সঙ্গে কবি প্রথম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন।

কবি সৈয়দা খাতুন কে আদর করে ডাকতেন নার্গিস।নার্গিস কে উদ্দেশ্য করে কবি বলেছেন এক অচেনা পল্লী বালিকার কাছে এত বিব্রত আর অসাবধান হয়ে পড়েছি যা কোন নারীর কাছে হয়নি।দৌলতপুরের এই বাড়িতে দু’টি বড় আম গাছ নজরুলের স্মৃতির সঙ্গে জড়িত। নজরুল একটি আমগাছের তলায় দুপুরে শীতল পার্টিতে বসে কবিতা ও গান রচনা করতেন।

নজরুলের কবিতায় দৌলতপুরের আটি গাঙের কথা এসেছে। তবে সেই আটি এখন খালে পরিণত হয়েছে। আটি নদীতে নজরুল সাঁতার কেটেছেন। গোমতীতে নিয়মিত সাঁতার কাটার কোন সংবাদ পাওয়া না গেলেও গোমতীকে তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তাই তো তার কবিতায় এসেছে- ‘আজো মধুর বাঁশরী বাজে গোমতীর তীরে পাতার কুটিরে আজো সে পথ চাহে সাঁঝে।

কবি শখ করে জাল কিংবা পালা দিয়ে পুকুরে মাছ ধরতেন। আমতলায় রাত দুপুরে মনভুলালো উদাস সুরে বাশিঁ বাজাতেন। পাপড়ি খোলা কবিতাটি এই গাছতলায় রচনা করেন নজরুল।আজ ২৫ শে মে প্রেম সাম্য ও মানবতার কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২১ তম জন্মজয়ন্তী।বিগত বছর কবির জন্মদিনে দৌলতপুর নানান আয়োজনে দিনটি পালন করলে ও কোভিড ১৯ করোনাভাইরাসের কারনে সারাদেশ লকডাউনে থাকায় সাম্যের এ কবির জন্ম দিবসটি উদযাপন হলো ভিন্ন ভাবে। 
বিগত দিনে ২দিন ব্যাপী কবি নজরুল মঞ্চে কবির স্মরণে অনুষ্ঠান হলেও এবার কবি যেখানে বাঁশি বাজাতেন সেখানে পুষ্পঅর্পনের মধ্য দিয়েই দিবসটি সমাপ্তি হয়। 

সোমবার বিকেল ৫টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ কবি নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত কবিতীর্থ দৌলতপুর আসলে তার,স্মৃতিফলক আম গাছে যদি ও এখন আম গাছটি নেই সেখানে আম গাছের গুড়া টাইলস দিয়ে মোড়ানো স্থানে পুষ্পার্পন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কবি নজরুলের প্রথম স্ত্রী নার্গিসের মামা আলী আকবর খা’র নাতি- বাবলু আলী খান,খানঁ পরিবারের সন্তান রোমান খান,নজরুল প্রেমি আলম শামস,কবি নজরুল ন্যাশনাল ক্লাব এর সভাপতি ও সাংবাদিক এস কে আশিক মিয়া,সাদ্দাম হোসেন সহ স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ। 
বাবলু আলী খান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাশকে ধন্যবাদ জানান।কবির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কবিকে স্মরণ করে কবি নজরুলের ভালবাসায় কোভিড ১৯ করোনা ভাইরাসের এই প্রাদুর্ভাবে ও কবিতীর্থ দৌলতপুর কবির স্মৃতিময় স্থানে এসে কবিকে স্মরণ করায়।

“কবি নজরুল নার্গিস ন্যাশনাল ক্লাব” সভাপতি এস কে আশিক বলেন নজরুলের অনেক স্মৃতি তার ব্যবহৃত খাট,আলী আকবর খা’র বাড়িটি,পুকুর ঘাট,আম গাছ কামরাঙা লিছু গাছ দেখার জন্য অনেক দূরদূরান্ত থেকে অনেক ভ্রমণবিলাস লোক আসেন।তিনি কুমিল্লা ৩ মুরাদনগর সাংসদ আলহাজ্ব ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন ও জেলা প্রশাসকের কাছে একটি নজরুল নার্গিস স্মৃতিবিজড়িত যাদুঘর স্থাপনের আবেদন জানান।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত

মুরাদনগরে ভিন্ন আয়োজনে জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের ১২১ তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন

আপডেট সময় ০৭:৩৭:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মে ২০২০

মোঃ ইমন মিয়া, বাঙ্গরা বাজার থানা প্র‌তি‌নি‌ধিঃ

যারে হাত দিয়ে মালা দিতে পার নাইকেন মনে রাখ তারে,ভুলে যাও তারে ভুলে যাও একেবারে। কাজী নজরুল ইসলামের এই চয়নটুকু চিরভাস্বর হয়ে আছে কুমিল্লাবাসীর হৃদয়ে। কুমিল্লার মাটি ও মানুষের সঙ্গে নজরুলের রয়েছে অটুট বন্ধন। 

বাংলা সাহিত্যের ‘ধুমকেতু’ কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রেম-বিরহ, বিবাহ, সংগীত-সাহিত্য চর্চা ও ইংরেজ বিরোধী সংগ্রামের অসংখ্য স্মৃতি জড়িয়ে আছে শিক্ষা ও সাহিত্যের পাদপিঠ কুমিল্লার সঙ্গে।১৯২১ সালের এপ্রিল মাসে প্রথম কুমিল্লায় আসেন কবি নজরুল। সে যাত্রায় মুরাদনগরের দৌলতপুর অবস্থান করেন তিন মাস।

১৯২১-১৯২৩ সালের মধ্যে কবি কাজী নজরুল ইসলাম কুমিল্লায় আসেন মোট ৫ বার এবং ১১ মাস অতিবাহিত করেন এই কুমিল্লায়।১৯২১ সালে ৬ এপ্রিল কুমিল্লা মুরাদনগরে আলী আকবর খা’র সঙ্গে কবি নজরুল ইসলাম দৌলতপুর আসেন।দৌলতপুর গ্রামের মুন্সি বাড়ির আব্দুল খালেক মুন্সি সাহেবের মেয়ে সৈয়দা খাতুনের সঙ্গে কবি প্রথম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন।

কবি সৈয়দা খাতুন কে আদর করে ডাকতেন নার্গিস।নার্গিস কে উদ্দেশ্য করে কবি বলেছেন এক অচেনা পল্লী বালিকার কাছে এত বিব্রত আর অসাবধান হয়ে পড়েছি যা কোন নারীর কাছে হয়নি।দৌলতপুরের এই বাড়িতে দু’টি বড় আম গাছ নজরুলের স্মৃতির সঙ্গে জড়িত। নজরুল একটি আমগাছের তলায় দুপুরে শীতল পার্টিতে বসে কবিতা ও গান রচনা করতেন।

নজরুলের কবিতায় দৌলতপুরের আটি গাঙের কথা এসেছে। তবে সেই আটি এখন খালে পরিণত হয়েছে। আটি নদীতে নজরুল সাঁতার কেটেছেন। গোমতীতে নিয়মিত সাঁতার কাটার কোন সংবাদ পাওয়া না গেলেও গোমতীকে তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তাই তো তার কবিতায় এসেছে- ‘আজো মধুর বাঁশরী বাজে গোমতীর তীরে পাতার কুটিরে আজো সে পথ চাহে সাঁঝে।

কবি শখ করে জাল কিংবা পালা দিয়ে পুকুরে মাছ ধরতেন। আমতলায় রাত দুপুরে মনভুলালো উদাস সুরে বাশিঁ বাজাতেন। পাপড়ি খোলা কবিতাটি এই গাছতলায় রচনা করেন নজরুল।আজ ২৫ শে মে প্রেম সাম্য ও মানবতার কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২১ তম জন্মজয়ন্তী।বিগত বছর কবির জন্মদিনে দৌলতপুর নানান আয়োজনে দিনটি পালন করলে ও কোভিড ১৯ করোনাভাইরাসের কারনে সারাদেশ লকডাউনে থাকায় সাম্যের এ কবির জন্ম দিবসটি উদযাপন হলো ভিন্ন ভাবে। 
বিগত দিনে ২দিন ব্যাপী কবি নজরুল মঞ্চে কবির স্মরণে অনুষ্ঠান হলেও এবার কবি যেখানে বাঁশি বাজাতেন সেখানে পুষ্পঅর্পনের মধ্য দিয়েই দিবসটি সমাপ্তি হয়। 

সোমবার বিকেল ৫টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ কবি নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত কবিতীর্থ দৌলতপুর আসলে তার,স্মৃতিফলক আম গাছে যদি ও এখন আম গাছটি নেই সেখানে আম গাছের গুড়া টাইলস দিয়ে মোড়ানো স্থানে পুষ্পার্পন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কবি নজরুলের প্রথম স্ত্রী নার্গিসের মামা আলী আকবর খা’র নাতি- বাবলু আলী খান,খানঁ পরিবারের সন্তান রোমান খান,নজরুল প্রেমি আলম শামস,কবি নজরুল ন্যাশনাল ক্লাব এর সভাপতি ও সাংবাদিক এস কে আশিক মিয়া,সাদ্দাম হোসেন সহ স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ। 
বাবলু আলী খান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাশকে ধন্যবাদ জানান।কবির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কবিকে স্মরণ করে কবি নজরুলের ভালবাসায় কোভিড ১৯ করোনা ভাইরাসের এই প্রাদুর্ভাবে ও কবিতীর্থ দৌলতপুর কবির স্মৃতিময় স্থানে এসে কবিকে স্মরণ করায়।

“কবি নজরুল নার্গিস ন্যাশনাল ক্লাব” সভাপতি এস কে আশিক বলেন নজরুলের অনেক স্মৃতি তার ব্যবহৃত খাট,আলী আকবর খা’র বাড়িটি,পুকুর ঘাট,আম গাছ কামরাঙা লিছু গাছ দেখার জন্য অনেক দূরদূরান্ত থেকে অনেক ভ্রমণবিলাস লোক আসেন।তিনি কুমিল্লা ৩ মুরাদনগর সাংসদ আলহাজ্ব ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন ও জেলা প্রশাসকের কাছে একটি নজরুল নার্গিস স্মৃতিবিজড়িত যাদুঘর স্থাপনের আবেদন জানান।