ঢাকা ১১:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে ইউনিয়ন ভূমি অফিস ঝাড়ুদার নিয়োগে ৫০ হাজার টাকা ঘুস দাবি

সুমন সরকার, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় হালিমা আক্তার নামে এক উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঝাড়ুদার নিয়োগে ৫০ হাজার টাকা ঘুস দাবির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঝাড়ুদার পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য এ অঙ্কের টাকা দাবি করেন ওই ভূমি কর্মকর্তা। ঝাড়ুদার নিয়োগে উৎকোচ দাবির বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বেশ সমালোচনা চলছে।

অভিযুক্ত হালিমা আক্তার সম্প্রতি বদলি হয়ে একই উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে চলে গেছেন। এছাড়া এ কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে নিজ উপজেলায় চাকরি করে ভূমি সেক্টরে বেশ কিছু দালাল নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দীর্ঘদিন ধরে ঝাড়ুদার পদটি শূন্য ছিল। গত বছরের জুন মাসে এ পদে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয় ইউনিয়নের দীঘিরপাড় গ্রামের দেলোয়ার হোসেন খানের স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগমকে। নুরুন্নাহার যোগদানের এক মাস পর কর্মকর্তা হালিমা আক্তার এ পদে স্থায়ীভাবে চাকরির জন্য ৫০ হাজার টাকা ঘুস দাবি করেন। আর এ টাকা এসিল্যান্ডকে দিতে হবে বলে তিনি জানান। তা না হলে নুরুন্নাহার ঝাড়ুদারের চাকরি করতে পারবেন না বলেও সাফ জানিয়ে দেন। এরই মাঝে নুরুন্নাহারের স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি স্বামীকে ১৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা করান। এ সময় তার মেয়ে খালেদা আক্তার ভূমি অফিসের ঝাড়ুদারের কাজটি করেন। কিন্তু ভূমি কর্মকর্তা হালিমা ঝাড়ুদারের কাছে দাবিকৃত উৎকোচ না পেয়ে খালেদা আক্তারকে অফিস থেকে বের করে দেন। নুরুন্নাহার বেগমের স্থলে এসিল্যান্ড অন্যজনকে চাকরি দিতে বলেছে বলে অজুহাত দেন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হালিমা আক্তার।

পরে একই গ্রামের আলি হোসেনের মেয়ে মর্জিনা আক্তারকে সেই চাকরি দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী নুরুন্নাহার বেগম বলেন, ‘গত বছরের জুন-জুলাই এ দুই মাস আমি বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঝাড়ুদারের দায়িত্ব পালন করি। আমার নামে যথারীতি অফিস থেকে বেতন এলেও আমাকে কোনো টাকা-পয়সা দেওয়া হয়নি। আমি ভূমি কর্মকর্তা হালিমাকে ৫০ হাজার টাকা দিতে পারিনি বলে দুই মাস কাজ করিয়ে আমাকে বিদায় করে দিয়েছেন।’

অভিযুক্ত উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা হালিমা আক্তার উৎকোচ দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘এটা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার। ঝাড়ুদার নিয়োগের বিষয়টি আমি এসিল্যান্ড স্যারকে অবগত করেছি। স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি মর্জিনা আক্তারকে নিয়োগ দিয়েছি। এ ক্ষেত্রে উৎকোচের কোনো বিষয় জড়িত ছিল না।’

মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া মমিন বলেন, ‘আমি সম্প্রতি এ উপজেলায় যোগদান করেছি। আমার আসার আগেই এ ঘটনাটি ঘটেছে। তবে এ বিষয়ে আমার কাছে লিখিত কোনো অভিযোগ আসেনি। ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

মুরাদনগরে ইউনিয়ন ভূমি অফিস ঝাড়ুদার নিয়োগে ৫০ হাজার টাকা ঘুস দাবি

আপডেট সময় ১১:৪৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১

সুমন সরকার, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় হালিমা আক্তার নামে এক উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঝাড়ুদার নিয়োগে ৫০ হাজার টাকা ঘুস দাবির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঝাড়ুদার পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য এ অঙ্কের টাকা দাবি করেন ওই ভূমি কর্মকর্তা। ঝাড়ুদার নিয়োগে উৎকোচ দাবির বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বেশ সমালোচনা চলছে।

অভিযুক্ত হালিমা আক্তার সম্প্রতি বদলি হয়ে একই উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে চলে গেছেন। এছাড়া এ কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে নিজ উপজেলায় চাকরি করে ভূমি সেক্টরে বেশ কিছু দালাল নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দীর্ঘদিন ধরে ঝাড়ুদার পদটি শূন্য ছিল। গত বছরের জুন মাসে এ পদে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয় ইউনিয়নের দীঘিরপাড় গ্রামের দেলোয়ার হোসেন খানের স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগমকে। নুরুন্নাহার যোগদানের এক মাস পর কর্মকর্তা হালিমা আক্তার এ পদে স্থায়ীভাবে চাকরির জন্য ৫০ হাজার টাকা ঘুস দাবি করেন। আর এ টাকা এসিল্যান্ডকে দিতে হবে বলে তিনি জানান। তা না হলে নুরুন্নাহার ঝাড়ুদারের চাকরি করতে পারবেন না বলেও সাফ জানিয়ে দেন। এরই মাঝে নুরুন্নাহারের স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি স্বামীকে ১৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা করান। এ সময় তার মেয়ে খালেদা আক্তার ভূমি অফিসের ঝাড়ুদারের কাজটি করেন। কিন্তু ভূমি কর্মকর্তা হালিমা ঝাড়ুদারের কাছে দাবিকৃত উৎকোচ না পেয়ে খালেদা আক্তারকে অফিস থেকে বের করে দেন। নুরুন্নাহার বেগমের স্থলে এসিল্যান্ড অন্যজনকে চাকরি দিতে বলেছে বলে অজুহাত দেন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হালিমা আক্তার।

পরে একই গ্রামের আলি হোসেনের মেয়ে মর্জিনা আক্তারকে সেই চাকরি দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী নুরুন্নাহার বেগম বলেন, ‘গত বছরের জুন-জুলাই এ দুই মাস আমি বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঝাড়ুদারের দায়িত্ব পালন করি। আমার নামে যথারীতি অফিস থেকে বেতন এলেও আমাকে কোনো টাকা-পয়সা দেওয়া হয়নি। আমি ভূমি কর্মকর্তা হালিমাকে ৫০ হাজার টাকা দিতে পারিনি বলে দুই মাস কাজ করিয়ে আমাকে বিদায় করে দিয়েছেন।’

অভিযুক্ত উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা হালিমা আক্তার উৎকোচ দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘এটা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার। ঝাড়ুদার নিয়োগের বিষয়টি আমি এসিল্যান্ড স্যারকে অবগত করেছি। স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি মর্জিনা আক্তারকে নিয়োগ দিয়েছি। এ ক্ষেত্রে উৎকোচের কোনো বিষয় জড়িত ছিল না।’

মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া মমিন বলেন, ‘আমি সম্প্রতি এ উপজেলায় যোগদান করেছি। আমার আসার আগেই এ ঘটনাটি ঘটেছে। তবে এ বিষয়ে আমার কাছে লিখিত কোনো অভিযোগ আসেনি। ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’