জাতীয় ডেস্কঃ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে সরকারের কাছে আবারও আবেদন করেছে তার পরিবার। খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাবর ফের চিঠি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন, সেজন্য তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নতুন করে আবেদন করেছেন ।
ছয়দিনের ব্যবধানে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তির পর রবিবার রাত থেকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে সিসিইউতে রাখা হয়েছে।
কয়েকদিন আগে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার অনুমতি চেয়ে খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।
তার বোন সেলিমা ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, খালেদা জিয়ার এখন বিদেশে চিকিৎসা প্রয়োজন-চিকিৎসকরা এখন এই একটাই পরামর্শ দিচ্ছেন। সেজন্য তাদের ভাইবোনদের পক্ষ থেকে আবারও সরকারের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
সেলিমা ইসলাম বলেন, এটাই আমাদের আবেদন সরকারের কাছে যে তাকে (খালেদা জিয়া) চিকিৎসার জন্য যাওয়ার অনুমতি ওনারা (সরকার) যেন দেয়। যত দ্রুত সম্ভব খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে চান।
৭৬ বছর বয়সি সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বহু বছর ধরে আর্থ্রারাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। অসুস্থতার জন্য টানা ২৬ দিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ৭ নভেম্বর বাসায় ফেরেন তিনি।
এর আগে এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন খালেদা জিয়া। পরে করোনা পরবর্তী জটিলতায় ২৭ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি হন। সে সময় এক মাসের বেশি সময় হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি ছিলেন। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে ১৯ জুন বাসায় ফেরেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর এই মামলায় আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।
একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন একই আদালত। রায়ে সাত বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
এ পর্যন্ত তিন দফায় খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। তবে বিএনপির নেতারা খালেদা জিয়ার শর্তসাপেক্ষে এ মুক্তিকে ‘গৃহবন্দি’ বলছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার আবেদন করা হলেও সরকার তা নাকচ করে দেয়। তাকে দেশে থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে বলে শর্তও দেওয়া হয়েছে।