ঢাকা ০২:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে আতঙ্কে ভোটাররা, কিছু প্রার্থীকে সুবিধা দিতে ভোটের ৪ দিন পূর্বে কেন্দ্র স্থানান্তরে অভিযোগ

মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্র স্থানান্তরের খবরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকার লোকজন। নির্বাচনের ৪দিন পূর্বে স্থানীয় দিঘীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রটি স্থানান্তর করে দিঘীরপাড় দাখিল মাদ্রাসায় স্থানান্তরের দ্বারা কোনো এক প্রার্থীকে ভোট চুরির সুবিধা করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় ভোটার ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের।

শুক্রবার বিকেলে দিঘীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রটি বহাল রাখার দাবিতে ও স্থানান্তরের আপত্তি জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বরাবর বাঙ্গরা পশ্চিম ইউপির ১ ওয়ার্ডেও সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থী খোরশেদ আলম (আপেল) একটি আবেদন করেন।.

স্থানীয় সূত্র জানায়, আগামীকাল (৩১ জানুয়ারি) কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণের কথা রয়েছে। উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে অবস্থিত দিঘীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্বাধীনতার পূর্ব থেকে দিঘীরপাড় গ্রামের ২৮০০ ভোটারের ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কেন্দ্রটি জনসাধারণের চলাচলে যেমন সুবিধাজনক তেমনি নিরাপদ হিসেবে আস্থা রয়েছে। বর্তমান করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাবের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ স্থান এই কেন্দ্রটি। কিন্তু ভোটের ৪ দিন পূর্বে (২৬ জানুয়ারি) বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্রটি ভুল তথ্য দিয়ে কৌশলে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী বাহার খান (আনারস) ও মেম্বার প্রার্থী ফরিদ খান (তালা) কে সুবিধা দিতে তাদের বাড়ি সংলগ্ন দাখিল মাদরাসায় কেন্দ্রটি স্থানান্তর করা হয়েছে। এতে স্থানীয় ভোটার, প্রার্থী ও জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। দিঘীরপাড় দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রটি অধিকাংশ এলাকার দূরবর্তী, মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এবং আতঙ্কিত এলাকা হিসেবে অভিযোগ স্থানীয় ভোটারদের।

এ বিষয়ে বাঙ্গরা পশ্চিশ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থী খোরশেদ আলম (আপলে) অভিযোগ করে বলেন, এই ওয়ার্ডের মধ্যবর্তী স্থান হলো দিঘীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। কেন্দ্রটি স্থানান্তরের কথা পারস্পরিক লোক মুখে শোনে গত ১২ এপ্রিল স্ব-স্থানে বহাল রাখতে একটি আবেদন করি। আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৭ ডিসেম্বর শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং শুনানি শেষে সিনিয়র নির্বাচন অফিসার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বহাল রাখার দাবিতে গত ৩১ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাচন অফিসের প্রকাশিত তালিকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বহাল থাকে। হঠাৎ করে নির্বাচনের ৪ দিন পূর্বে কেন্দ্রটি স্থানান্তর করা মানে কোনো প্রার্থীকে অবৈধভাবে সুবিধা দেয়া। এতে আমার মতো অনেক প্রার্থী ও সাধারণ ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার নিয়ে শঙ্কিত।

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাব উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনের দেয়া সুষ্ঠ ভোটের প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতে আমি মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু প্রচার-প্রচারণার প্রথম দিন থেকেই প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা আমার কর্মীদেরকে হুমকি-ধামকি প্রদান করছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় আমার গণসংযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। আমার জনপ্রিয়তা ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রতিপক্ষ প্রার্থী ভোট চুরির উদ্দেশ্যে গত ২৬ জানুয়ারি দিঘীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রটি পরিবর্তন করে দিঘীরপাড় দাখিল মাদরাসায় স্থানান্তর করে। নির্বাচনের ৪ দিন পূর্বে ভোটকেন্দ্র স্থানান্তর ভোট চুরিরই একটি আলামত। বিষয়গুলো জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন কমিশনার, রিটার্নিং কর্মকর্তা সহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমি চাই নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হোক।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদ আহমদ সিকদার বলেন, ভোট কেন্দ্র স্থানন্তরের বিষয়ে একটি আবেদন পেয়েছে নির্বাচন কমিশন তার পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন কেন্দ্র স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখানে আমার কোন করার বা বলার নেই।

কুমিল্লা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনজুরুল আলম কোন প্রার্থীকে সুবিধা দেওয়ার জন্য কেন্দ্র পরির্বতনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ভোট কেন্দ্র স্থানান্তরের বিষয়টি নির্বাচন কমিশন দেখেন এখানে আমার কিছু করার নেই। কমিশনের যেমন পরিকল্পনা আছে ঠিক তেমনি আমাদেরও স্থানীয় ভাবে পৃথক পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে কোন এখানে অবাধ ও শান্তিপূর্ন নির্বাচন হবে। এখানে কারোর কোন আশঙ্কায় থাকার প্রয়োজন নেই, যেসব কেন্দ্র গুলো পরিবর্তন করা হয়েছে সেখানে বিপুল পরিমান পুলিশ ও পৃথক ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হতে পারে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রবাসীর বাড়ি ঘরে হামলা, নারীসহ আহত ৩

মুরাদনগরে আতঙ্কে ভোটাররা, কিছু প্রার্থীকে সুবিধা দিতে ভোটের ৪ দিন পূর্বে কেন্দ্র স্থানান্তরে অভিযোগ

আপডেট সময় ০১:২৬:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২২

মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্র স্থানান্তরের খবরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকার লোকজন। নির্বাচনের ৪দিন পূর্বে স্থানীয় দিঘীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রটি স্থানান্তর করে দিঘীরপাড় দাখিল মাদ্রাসায় স্থানান্তরের দ্বারা কোনো এক প্রার্থীকে ভোট চুরির সুবিধা করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় ভোটার ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের।

শুক্রবার বিকেলে দিঘীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রটি বহাল রাখার দাবিতে ও স্থানান্তরের আপত্তি জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বরাবর বাঙ্গরা পশ্চিম ইউপির ১ ওয়ার্ডেও সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থী খোরশেদ আলম (আপেল) একটি আবেদন করেন।.

স্থানীয় সূত্র জানায়, আগামীকাল (৩১ জানুয়ারি) কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণের কথা রয়েছে। উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে অবস্থিত দিঘীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্বাধীনতার পূর্ব থেকে দিঘীরপাড় গ্রামের ২৮০০ ভোটারের ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কেন্দ্রটি জনসাধারণের চলাচলে যেমন সুবিধাজনক তেমনি নিরাপদ হিসেবে আস্থা রয়েছে। বর্তমান করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাবের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ স্থান এই কেন্দ্রটি। কিন্তু ভোটের ৪ দিন পূর্বে (২৬ জানুয়ারি) বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্রটি ভুল তথ্য দিয়ে কৌশলে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী বাহার খান (আনারস) ও মেম্বার প্রার্থী ফরিদ খান (তালা) কে সুবিধা দিতে তাদের বাড়ি সংলগ্ন দাখিল মাদরাসায় কেন্দ্রটি স্থানান্তর করা হয়েছে। এতে স্থানীয় ভোটার, প্রার্থী ও জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। দিঘীরপাড় দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রটি অধিকাংশ এলাকার দূরবর্তী, মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এবং আতঙ্কিত এলাকা হিসেবে অভিযোগ স্থানীয় ভোটারদের।

এ বিষয়ে বাঙ্গরা পশ্চিশ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থী খোরশেদ আলম (আপলে) অভিযোগ করে বলেন, এই ওয়ার্ডের মধ্যবর্তী স্থান হলো দিঘীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। কেন্দ্রটি স্থানান্তরের কথা পারস্পরিক লোক মুখে শোনে গত ১২ এপ্রিল স্ব-স্থানে বহাল রাখতে একটি আবেদন করি। আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৭ ডিসেম্বর শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং শুনানি শেষে সিনিয়র নির্বাচন অফিসার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বহাল রাখার দাবিতে গত ৩১ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাচন অফিসের প্রকাশিত তালিকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বহাল থাকে। হঠাৎ করে নির্বাচনের ৪ দিন পূর্বে কেন্দ্রটি স্থানান্তর করা মানে কোনো প্রার্থীকে অবৈধভাবে সুবিধা দেয়া। এতে আমার মতো অনেক প্রার্থী ও সাধারণ ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার নিয়ে শঙ্কিত।

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাব উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনের দেয়া সুষ্ঠ ভোটের প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতে আমি মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু প্রচার-প্রচারণার প্রথম দিন থেকেই প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা আমার কর্মীদেরকে হুমকি-ধামকি প্রদান করছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় আমার গণসংযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। আমার জনপ্রিয়তা ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রতিপক্ষ প্রার্থী ভোট চুরির উদ্দেশ্যে গত ২৬ জানুয়ারি দিঘীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রটি পরিবর্তন করে দিঘীরপাড় দাখিল মাদরাসায় স্থানান্তর করে। নির্বাচনের ৪ দিন পূর্বে ভোটকেন্দ্র স্থানান্তর ভোট চুরিরই একটি আলামত। বিষয়গুলো জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন কমিশনার, রিটার্নিং কর্মকর্তা সহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমি চাই নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হোক।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদ আহমদ সিকদার বলেন, ভোট কেন্দ্র স্থানন্তরের বিষয়ে একটি আবেদন পেয়েছে নির্বাচন কমিশন তার পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন কেন্দ্র স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখানে আমার কোন করার বা বলার নেই।

কুমিল্লা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনজুরুল আলম কোন প্রার্থীকে সুবিধা দেওয়ার জন্য কেন্দ্র পরির্বতনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ভোট কেন্দ্র স্থানান্তরের বিষয়টি নির্বাচন কমিশন দেখেন এখানে আমার কিছু করার নেই। কমিশনের যেমন পরিকল্পনা আছে ঠিক তেমনি আমাদেরও স্থানীয় ভাবে পৃথক পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে কোন এখানে অবাধ ও শান্তিপূর্ন নির্বাচন হবে। এখানে কারোর কোন আশঙ্কায় থাকার প্রয়োজন নেই, যেসব কেন্দ্র গুলো পরিবর্তন করা হয়েছে সেখানে বিপুল পরিমান পুলিশ ও পৃথক ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হতে পারে।