মুরাদনগর বার্তা অনলাইন ডেস্কঃ
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলারয় তিন বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনা আমলে না নিয়ে উল্টো আসামিদের ফোন করে ভাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মুরাদনগর থানার এসআই বোরহান উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেয় ভুক্তভোগী পরিবার।
শিশুটির বাবা জানান, গত বৃহস্পতিবার (১৮ আগষ্ট) সকালে আমি আমার মুরাদনগর সদরের বাসা থেকে ৩ বছরের একমাত্র মেয়েকে উপজেলার পাহারপুর গ্রামে নানার বাড়িতে দিয়ে আসি। ওইদিন বিকেলে তাকে নিয়ে আসার কথা থাকলেও জরুরী কাজ থাকায় যেতে পারিনি। পাহারপুর গ্রামের আমার মামাতো ভাই কামাল মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া(১৬) ও শাহ জাহানের ছেলে সাদেক মিয়া(১৭) প্রায় আমার বাসায় আসা-যাওয়া করতো সেই সুবাদে তারা আমাকে ফোন দিয়ে বলে আমার বাসায় আসবে। তখন আমি তাদের দুজনকে আমার মেয়েকে নিয়ে আসার কথা বলি। ওরা আমার বাসায় বিকেল ৪টায় আসার কথা থাকলেও সন্ধ্যা ৬টার দিকে এসে মেয়েকে তারাহুরা করে দিয়ে চলে যায়। সোহাগ ও সাদেক চলে যাওয়ার সাথে সাথে আমার মেয়ে তার গোপনাঙ্গে ধরে কান্না করতে করতে বলে চাচ্চুরা আমাকে দুই হাতে ধরে রেখে অনেক মেরেছে। তখন আমার স্ত্রীর সন্দেহ হলে তার কাপর খুলে দেখে রক্ত। মুরাদনগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারা বলেন আমার মেয়ের গোপনাঙ্গে কিছু প্রবেশ করানো হয়েছে। যার ফলে সে ব্যাথায় কাতরাচ্ছে।
পরে বিষয়টি নিয়ে আমি মুরাদনগর থানায় গেলে তারা আমাকে সকালে আসেন বিকেলে আসেন বলে নানা অজুহাতে ঘুরাতে থাকে। এতেও কোন কাজ না হওয়ায় স্থানীয় কিছু সংবাদকর্মীরদের সহযোগীতায় মঙ্গলবার সকালে আমি আমার স্ত্রীসহ লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় যাই। তখন থানায় কর্মরত এসআই বোরহান আমাকে সহযোগীতা না করে উল্টো হয়রানি করতে থাকে। আসামিদের না ধরে আমার সামনে তাদের ফোন করে মামলার বিষয়টি জানিয়ে দেয়া। অপরদিকে আমাকে বলা হয় বুধবার সকালে আসো আমরা তোমার মামলা রুজু করবো।
খবর নিয়ে জানতে পারি এসআই বোরহান আসামীদের ফোন করে জানিয়ে দেয়ার পর তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। এখন আমি আমার মেয়ের বিচার পাওয়া নিয়ে খুব ভয়ে আছি। কারণ যেখানে একজন পুলিশ হয়ে আসামিদের না ধরে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে, সেখানে সুষ্ঠু বিচার পাবো কিভাবে আসা করি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মুরাদনগর থানান এসআই বোরহান উদ্দিন সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন আসামি ভাগিয়ে দেইনি কিংবা ওই শিশুটির পরিবারের কাউকে কোন প্রকার হয়রানিও করিনি। অভিযোগ পেয়ে আমি ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে ওই এলাকার জনপ্রতিনিধিদের ফোন দিয়েছি। এখন যদি আসামি ভেগে যায় আমার কি করার আছে।
মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিযুষ চন্দ্র দাস বলেন, আমি বিষয়টি জানতে পেরে ওই শিশুটি ও তার বাবা মায়ের সাথে কথা বলে মঙ্গলবার বিকেলে মামলা রুজু করার জন্য মুরাদনগর থানাকে বলে দিয়েছি। শিশুটি ছোট হলেও সে নিজেই আমার কাছে ঘটনার বিবরণ দিয়েছে যেটা আমি কখনোই আসা করিনি। আসামিদের না ধরে ভাগিয়ে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।